ঢাকা ১০:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শিক্ষক ইকবাল হত্যায় মামলা দায়ের জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর টেকনাফে অপহরণকারীদের সাথে যৌথবাহিনীর গোলাগুলি: গুলিবিদ্ধ এক সুফি/কাওয়ালী সংগীত বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু কক্সবাজার শিল্পকলায় ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে কক্সবাজার সিটি কলেজে ছাত্রদলের মানববন্ধন ডিসি নিয়োগ ও বই ছাপানোয় অনিয়মের অভিযোগ: এনসিপি থেকে তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি উখিয়া কলেজের শিক্ষক ইকবালের জানাজায় শোকার্ত মানুষের ঢল রাষ্ট্রপতির দণ্ড মওকুফের তালিকা প্রকাশ প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল আমরা চীনের খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক নিশানের পিতার মৃত্যুতে রিপোর্টার্স ইউনিটি কক্সবাজার’র শোক হাসিনাসহ শেখ পরিবারের ১০ সদস্যের ‘এনআইডি লক’ পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে এবার গ্রেপ্তার দেখানো হল হত্যা মামলায় বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর তিনবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না কেউ

উৎপাদনে ফিরলো মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র

মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র

দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল থেকে উৎপাদনে ফিরেছে মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র।

ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৬৯ হাজার ৬০০ টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ি বন্দরে পৌঁছায়। এসব কয়লা নামিয়ে উৎপাদন শুরু করা হয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান।

বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহাজটি কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ে। একই দিন বুধবার বিকেল থেকে কয়লা খালাসের কার্যক্রম চলে। এ ছাড়াও রোববার (১ ডিসেম্বর) ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ মাতারবাড়িতে আসার কথা রয়েছে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, কয়লার চাহিদা পূরণ হওয়ায় শনিবার বিকেল থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরতে সক্ষম হই আমরা। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত কয়লা খালাস প্রক্রিয়া শেষের দিকে। আগামীকাল আরও একটি কয়লাবাহী জাহাজ বন্দরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা কয়লার এটি প্রথম চালান। কয়লা খালাস প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হওয়ায় শনিবার বিকেল থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই ইউনিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালু হয়।

তিনি আরও জানান, কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩১ অক্টোবর কয়লা সংকটের কারণে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুই ইউনিটের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা সরবরাহের আগের চুক্তি আগস্টে শেষ হয়। নতুন কয়লা কেনার দরপত্র আহ্বানে বিলম্ব হওয়ায় কয়লার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, তিন বছরের জন্য কয়লা সরবরাহের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলেও, সেই প্রক্রিয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জটিলতায় পড়ে। বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রো কনসোর্টিয়ামের অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট গত জুলাই মাসে কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে কয়লা আমদানি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়লা আমদানিতে সময় লেগে যায় নভেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অবশেষে কয়লার চালান পৌঁছানোর কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যেতে পেরেছে। কয়লার চাহিদা পূরণ হওয়ায় উৎপাদনে ফিরতে বাধা রইলো না। এর ফলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ায় দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্র এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা নিয়ে দেশের অন্যতম বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প। এর প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ করার মাধ্যমে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষক ইকবাল হত্যায় মামলা দায়ের

This will close in 6 seconds

উৎপাদনে ফিরলো মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র

আপডেট সময় : ০৩:২৯:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল থেকে উৎপাদনে ফিরেছে মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র।

ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৬৯ হাজার ৬০০ টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ি বন্দরে পৌঁছায়। এসব কয়লা নামিয়ে উৎপাদন শুরু করা হয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান।

বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহাজটি কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ে। একই দিন বুধবার বিকেল থেকে কয়লা খালাসের কার্যক্রম চলে। এ ছাড়াও রোববার (১ ডিসেম্বর) ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ মাতারবাড়িতে আসার কথা রয়েছে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, কয়লার চাহিদা পূরণ হওয়ায় শনিবার বিকেল থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরতে সক্ষম হই আমরা। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত কয়লা খালাস প্রক্রিয়া শেষের দিকে। আগামীকাল আরও একটি কয়লাবাহী জাহাজ বন্দরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা কয়লার এটি প্রথম চালান। কয়লা খালাস প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হওয়ায় শনিবার বিকেল থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই ইউনিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালু হয়।

তিনি আরও জানান, কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩১ অক্টোবর কয়লা সংকটের কারণে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুই ইউনিটের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা সরবরাহের আগের চুক্তি আগস্টে শেষ হয়। নতুন কয়লা কেনার দরপত্র আহ্বানে বিলম্ব হওয়ায় কয়লার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, তিন বছরের জন্য কয়লা সরবরাহের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলেও, সেই প্রক্রিয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জটিলতায় পড়ে। বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রো কনসোর্টিয়ামের অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট গত জুলাই মাসে কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে কয়লা আমদানি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়লা আমদানিতে সময় লেগে যায় নভেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অবশেষে কয়লার চালান পৌঁছানোর কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যেতে পেরেছে। কয়লার চাহিদা পূরণ হওয়ায় উৎপাদনে ফিরতে বাধা রইলো না। এর ফলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ায় দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্র এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা নিয়ে দেশের অন্যতম বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প। এর প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ করার মাধ্যমে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।