ঢাকা ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু স্ত্রীকে গলা কেটে হ’ত্যা: ঘা’ত’ক স্বামী আটক ১০ বছরে কক্সবাজার সৈকতে ৬০ জনের প্রাণহানি বাড়ছে বাস্তুচ্যুত, কমছে তহবিল- জাতিসংঘ মা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে জয় ভারতে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত, বহু হতাহতের শঙ্কা টেকনাফে কিশোরের হাতে নারী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বামী হাতে স্ত্রী খুন তারেক রহমান চাইলে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদে‌শের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করলো যুক্তরাজ্য প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি শাকিল–ফারজানা ‘‌পুকুরের পানি সব ঘোলা করে ফেলেছি’ ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক রাজনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনবে: রিজভী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা কলম্বিয়ার বিপক্ষে দশজনের আর্জেন্টিনার মান বাঁচানো ড্র ভিনিসিয়ুসের গোলে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের জয়

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে ব্যস্ততা: টুংটাং শব্দে মুখর কামারপল্লী

কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসতেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে শহরের কামারপল্লীগুলো। ঈদুল আজহা উপলক্ষে কসাইয়ের দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ পশু জবাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধারালো যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পের কারিগররা।

সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে বড়বাজারস্থ কামারপল্লী, বিমানবন্দর সড়ক, লিংক রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, টুংটাং হাতুড়ির শব্দে মুখরিত চারপাশ। প্রতিটি দোকানে চলছে নিরলস কর্মযজ্ঞ।  সারা বছর যতোটা না কাজ থাকে, ঈদের আগের এই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা দেখা যায়। অনেকে কাজের চাপে ঘুম, খাওয়াও ভুলে যাচ্ছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন কামাররা।

স্থানীয় বিক্রেতা তপন কর্মকার বলেন, “গরম, ধোঁয়া আর ঘাম—সবকিছু সহ্য করে কাজ করছি। কারণ ঈদের মৌসুমই আমাদের সবচেয়ে বড় উপার্জনের সময়।”

দামের বিষয়ে তিনি বলেন, “এ বছর লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় দা-ছুরির দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্পেনের দা, বটি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৭০০ টাকা, প্রতি পিচ ছুরি ১০০–২৫০ টাকা, চাপাতি কেজি ৫০০–৬০০ টাকা আর লম্বা ছুরি ১০০০-১২০০ টাকা। তবে মানভেদে দামের রয়েছে তারতম্য।

স্থানীয় বিক্রেতা রুপন কর্মকার বলেন, “ঈদের প্রায় ১০-১২ দিন আগে থেকেই কাজের চাপ বেড়ে যায়। সারা বছর আমরা যে আয় করি কোরবানির ঈদের এক মাসে তার চেয়ে বেশি আয় করতে পারি। খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে না। ঈদের এক-দুই দিন আগে বিক্রি বাড়বে।

কামারপল্লীর কারিগর ও শ্রমিকদের মতে, এই শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি হচ্ছে কয়লা। কিন্তু কয়লা এখন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গ্রামগঞ্জে ঘুরে কয়লা সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে কয়লার দাম অনেক বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সেই তুলনায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি।

এদিকে, ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতারাও ভিড় করছেন কামারের দোকানগুলোতে। ক্রেতা আবদুল্লাহ বলেন, ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। তাই আগে থেকেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম নতুন ছুরি কিনে রাখছি। দাম মোটামুটি ভালোই রয়েছে।

অপর ক্রেতা শহীদুল জানান, পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার পাশাপাশি পুরাতন বটি, চাপাতি, ছুরিতেও শান দিতে নিয়ে এসেছি।

উল্লেখ্য, কামার শিল্প বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ পেশা। কোরবানির ঈদে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। তাই প্রতি বছর এই সময়ে শহরের কামারপল্লীগুলো হয়ে ওঠে ব্যস্ত, কর্মচঞ্চল আর জীবনমুখী এক চিত্রপট।

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে ব্যস্ততা: টুংটাং শব্দে মুখর কামারপল্লী

আপডেট সময় : ০৫:২৪:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসতেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে শহরের কামারপল্লীগুলো। ঈদুল আজহা উপলক্ষে কসাইয়ের দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ পশু জবাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধারালো যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পের কারিগররা।

সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে বড়বাজারস্থ কামারপল্লী, বিমানবন্দর সড়ক, লিংক রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, টুংটাং হাতুড়ির শব্দে মুখরিত চারপাশ। প্রতিটি দোকানে চলছে নিরলস কর্মযজ্ঞ।  সারা বছর যতোটা না কাজ থাকে, ঈদের আগের এই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা দেখা যায়। অনেকে কাজের চাপে ঘুম, খাওয়াও ভুলে যাচ্ছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন কামাররা।

স্থানীয় বিক্রেতা তপন কর্মকার বলেন, “গরম, ধোঁয়া আর ঘাম—সবকিছু সহ্য করে কাজ করছি। কারণ ঈদের মৌসুমই আমাদের সবচেয়ে বড় উপার্জনের সময়।”

দামের বিষয়ে তিনি বলেন, “এ বছর লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় দা-ছুরির দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্পেনের দা, বটি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৭০০ টাকা, প্রতি পিচ ছুরি ১০০–২৫০ টাকা, চাপাতি কেজি ৫০০–৬০০ টাকা আর লম্বা ছুরি ১০০০-১২০০ টাকা। তবে মানভেদে দামের রয়েছে তারতম্য।

স্থানীয় বিক্রেতা রুপন কর্মকার বলেন, “ঈদের প্রায় ১০-১২ দিন আগে থেকেই কাজের চাপ বেড়ে যায়। সারা বছর আমরা যে আয় করি কোরবানির ঈদের এক মাসে তার চেয়ে বেশি আয় করতে পারি। খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে না। ঈদের এক-দুই দিন আগে বিক্রি বাড়বে।

কামারপল্লীর কারিগর ও শ্রমিকদের মতে, এই শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি হচ্ছে কয়লা। কিন্তু কয়লা এখন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গ্রামগঞ্জে ঘুরে কয়লা সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে কয়লার দাম অনেক বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সেই তুলনায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি।

এদিকে, ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতারাও ভিড় করছেন কামারের দোকানগুলোতে। ক্রেতা আবদুল্লাহ বলেন, ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। তাই আগে থেকেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম নতুন ছুরি কিনে রাখছি। দাম মোটামুটি ভালোই রয়েছে।

অপর ক্রেতা শহীদুল জানান, পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার পাশাপাশি পুরাতন বটি, চাপাতি, ছুরিতেও শান দিতে নিয়ে এসেছি।

উল্লেখ্য, কামার শিল্প বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ পেশা। কোরবানির ঈদে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। তাই প্রতি বছর এই সময়ে শহরের কামারপল্লীগুলো হয়ে ওঠে ব্যস্ত, কর্মচঞ্চল আর জীবনমুখী এক চিত্রপট।