মহেশখালীতে এবার এক গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কালারমারছড়া ইউনিয়নের সোনারপাড়া নামক এলাকার বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভোরে ঘটে এ ঘটনা।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইছার হামিদ জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই তিনিসহ মহেশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে।
অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে জানিয়ে ওসি কাইছার হামিদ বলেন, ভিক্টিমের চিকিৎসা মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলমান, সেখানেও পুলিশ রয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগীর পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ধর্ষণকারীরা গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর ঘরের নগদ টাকা লুট করে।
তারা জানান, অভিযুক্তরা ভয়ভীতির মাধ্যমে ভুক্তভোগী নারীকে চিকিৎসার জন্যও ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। সারাদিন ওই নারীর পরিবারকে জিম্মি করে রাখে।
পরে ওই নারীসহ তার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান বলে জানান স্থানীয় সংবাদকর্মী রকিয়ত উল্লাহ ও আবু বকর ছিদ্দিক।
মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মাহফুজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় একজন গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। তাকে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি।’
২২ বছর বয়সী ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, বুধবার তার স্বামী চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ছিলেন। রাতে হঠাৎ ৪/৫ জন সন্ত্রাসীর একটি দল ঘরে ঢুকে ঘুমের মধ্যে তার হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে।
তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা তার কোমর থেকে চাবি নিয়ে আলমারি খুলে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণের পাওয়া প্রায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে করে নিয়ে যায়।
যাওয়ার সময় ওই ধর্ষকদল ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ও তার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় বলে জানান ভুক্তভোগী।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জানান, “আমি এখন পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, কালারমারছড়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বহু মামলার আসামি ইয়াছিনের নেতৃত্বে তওহিদ, আবু বক্করসহ ১২-১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই, গরুচুরিসহ নারীদের শ্লীলতাহানি করে আসছে। বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীরা তাদের আশ্রয়ে এলাকার মানুষকে জিম্মি করে অরাজকতা করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাদের পরিবারের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তাদের হাতেই ওই গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে ধারনা স্থানীয়দের।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) কালারমারছড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভাও করেছে মহেশখালীর ছাত্রজনতা ও স্কুল শিক্ষার্থীরা।