ঢাকা ০৭:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশজুড়ে বাড়ছে উখিয়ার সুপারির কদর : প্রতিবাজারে বিক্রি হয় অর্ধকোটি টাকা

সারাদেশে বাড়ছে কক্সবাজারের উখিয়ার সুপারির কদর

সারাদেশে বাড়ছে কক্সবাজারের উখিয়ার সুপারির কদর। আর এবারে উখিয়ায় সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই সুপারির বাগান মালিকদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রতি বাজারে বিক্রি হয় অর্ধকোটি টাকার সুপারি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এই উপজেলার সুপারি যাচ্ছে সারাদেশে। এই বছর উখিয়ায় প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়। তারমধ্যে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৫০০ মেট্রিক টন।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সোনারপাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বাগানে উৎপাদিত সুপারি বাজারে ক্রয় বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। এবারে সুপারির দামও রয়েছে বেশ ভালো। যার ফলে স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে ব্যবসায়ীরা।

এদিকে প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার উখিয়া বাজার, রবি ও বুধবার মরিচ্যা বাজার, এবং সোম ও বৃহস্পতিবার রুমখা বাজারে সুপারির হাট বসে।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ ছৈয়দ আলমের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ২ একর সুপারি গাছের বাগানজুড়ে ঝলমল করতে দেখা যায় লাল টুকটুকে সুপারি। তিনি বলেন, “আমি প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই বাগান থেকে লাখ লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করে থাকি। এবছর আমার বাগানে ভাল ফলন হয়েছে। বাজারে সুপারি বিক্রি করতে আসা হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নলবনিয়া এলাকার শাহাব উদ্দিন বলেন, সুপারি ফলনে যেকোন সমস্যা হলে আমরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে থাকি, যার ফলে এ বছর আমার সুপারি বাগানে ভাল ফলন হয়েছে। সোনার পাড়া বাজারের প্রবীণ সুপারির ব্যবসায়ী কালু সওদাগর বলেন, সোনারপাড়া বাজারের সুপারি রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে থাকি। সোনারপাড়া বাজারের সুপারি সারাদেশে বিখ্যাত।

দেশজুড়ে ব্যাপক সুনাম রয়েছে এ বাজারের সুপারির। সোনারপাড়া বাজারের সুপারি অন্যান্য বাজারের তুলনায় সাইজে বড়, মানেও ভালো, দামেও কম বলে জানান তিনি। সোনারপাড়া বাজারের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম সওদাগর বলেন, সোনারপাড়ায় প্রতিবাজারে প্রায় ১০ হাজার কন সুপারি (১ কন=২৫৬০ পিছ)। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এসব সুপারি বাগান থেকে বাজারে আসে। সোনার পাড়া বাজারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুপারি ব্যবসায়ীরা আসেন। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে আমরা তাদেরকে সুপারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সহযোগিতা করে থাকি এবং তারা যেনো নির্বিঘ্নে সুপারি ক্রয় করতে পারে তার জন্য নিরাপত্তাও দিয়ে থাকি এবং ব্যবসায়ীদের ইজারাদারের পক্ষ থেকে দেখাশোনা করা হয়।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, গতবছরের চেয়ে এবার সুপারির ফলন বেশি হয়েছে। যার কারণে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।

বাগান করে উৎপাদন করা হচ্ছে শত শত কোটি টাকার সুপারি। অর্থকরী এ ফসলকে ঘিরে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে উখিয়া উপজেলায়। উৎপাদিত সুপারির বাজার দর ভালো থাকায় সুপারি চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। উপজেলার সোনারপাড়া বাজার, কোটবাজার, রুমখাঁ মনি মার্কেট, মরিচ্যা বাজার, উখিয়া সদর, কুতুপালংসহ বিভিন্ন স্থানে সুপারীর হাট বসে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে এখানকার উৎপাদিত সুপারি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

This will close in 6 seconds

দেশজুড়ে বাড়ছে উখিয়ার সুপারির কদর : প্রতিবাজারে বিক্রি হয় অর্ধকোটি টাকা

আপডেট সময় : ১২:৩১:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

সারাদেশে বাড়ছে কক্সবাজারের উখিয়ার সুপারির কদর। আর এবারে উখিয়ায় সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই সুপারির বাগান মালিকদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রতি বাজারে বিক্রি হয় অর্ধকোটি টাকার সুপারি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এই উপজেলার সুপারি যাচ্ছে সারাদেশে। এই বছর উখিয়ায় প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়। তারমধ্যে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৫০০ মেট্রিক টন।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সোনারপাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বাগানে উৎপাদিত সুপারি বাজারে ক্রয় বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। এবারে সুপারির দামও রয়েছে বেশ ভালো। যার ফলে স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে ব্যবসায়ীরা।

এদিকে প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার উখিয়া বাজার, রবি ও বুধবার মরিচ্যা বাজার, এবং সোম ও বৃহস্পতিবার রুমখা বাজারে সুপারির হাট বসে।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ ছৈয়দ আলমের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ২ একর সুপারি গাছের বাগানজুড়ে ঝলমল করতে দেখা যায় লাল টুকটুকে সুপারি। তিনি বলেন, “আমি প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই বাগান থেকে লাখ লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করে থাকি। এবছর আমার বাগানে ভাল ফলন হয়েছে। বাজারে সুপারি বিক্রি করতে আসা হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নলবনিয়া এলাকার শাহাব উদ্দিন বলেন, সুপারি ফলনে যেকোন সমস্যা হলে আমরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে থাকি, যার ফলে এ বছর আমার সুপারি বাগানে ভাল ফলন হয়েছে। সোনার পাড়া বাজারের প্রবীণ সুপারির ব্যবসায়ী কালু সওদাগর বলেন, সোনারপাড়া বাজারের সুপারি রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে থাকি। সোনারপাড়া বাজারের সুপারি সারাদেশে বিখ্যাত।

দেশজুড়ে ব্যাপক সুনাম রয়েছে এ বাজারের সুপারির। সোনারপাড়া বাজারের সুপারি অন্যান্য বাজারের তুলনায় সাইজে বড়, মানেও ভালো, দামেও কম বলে জানান তিনি। সোনারপাড়া বাজারের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম সওদাগর বলেন, সোনারপাড়ায় প্রতিবাজারে প্রায় ১০ হাজার কন সুপারি (১ কন=২৫৬০ পিছ)। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এসব সুপারি বাগান থেকে বাজারে আসে। সোনার পাড়া বাজারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুপারি ব্যবসায়ীরা আসেন। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে আমরা তাদেরকে সুপারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সহযোগিতা করে থাকি এবং তারা যেনো নির্বিঘ্নে সুপারি ক্রয় করতে পারে তার জন্য নিরাপত্তাও দিয়ে থাকি এবং ব্যবসায়ীদের ইজারাদারের পক্ষ থেকে দেখাশোনা করা হয়।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, গতবছরের চেয়ে এবার সুপারির ফলন বেশি হয়েছে। যার কারণে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।

বাগান করে উৎপাদন করা হচ্ছে শত শত কোটি টাকার সুপারি। অর্থকরী এ ফসলকে ঘিরে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে উখিয়া উপজেলায়। উৎপাদিত সুপারির বাজার দর ভালো থাকায় সুপারি চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। উপজেলার সোনারপাড়া বাজার, কোটবাজার, রুমখাঁ মনি মার্কেট, মরিচ্যা বাজার, উখিয়া সদর, কুতুপালংসহ বিভিন্ন স্থানে সুপারীর হাট বসে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে এখানকার উৎপাদিত সুপারি।