Thursday, May 16, 2024

কক্সবাজারে হয়রানি, কী ঘটেছিল সেদিন? জানালেন জায়েদ খানের নায়িকা

টিটিএন ডেস্ক :

কলকাতার নায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার ঢাকার একক প্রযোজিত সিনেমায় কাজ করছেন। ছবির নাম ‘ছায়াবাজ’। তাজু কামরুলের পরিচালনায় তার বিপরীতে নায়ক জায়েদ খান। গত ৩০ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ টানা শুটিং করে ৭ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে গেছেন এই নায়িকা। দেশে যাওয়ার পরপরই বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ছড়িয়েছে, নৃত্য পরিচালকের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রথম ধাপের কাজ শেষ না করেই দেশে ফিরে গেছেন সায়ন্তিকা।

শোনা যায়, একটি গানের দৃশ্য করার সময় নৃত্য পরিচালক  মাইকেল বাবু না বলে সায়ন্তিকার হাত ধরে গানের দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়ার কারণেই নাকি নায়িকা চটেছেন। পরবর্তী সময় গানের কাজ শেষ না করেই দেশে ফিরে গেছেন।

যখন এসব খবর দেশের মিডিয়াতে প্রকাশিত হচ্ছে, তখন সায়ন্তিকা কলকাতায়। বিষয়টি তার নজরে এলে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনে পরিষ্কার করেছেন সায়ন্তিকা। ১৬ সেপ্টেম্বর অনলাইনে এ-সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি প্রযোজককে দায়ী করেছেন, শুটিংয়ের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন।

আনন্দবাজারকে তিনি বলেছেন, যদিও এখানে মাইকেলের নাম উঠছে, তবে গোড়ায় গন্ডগোল। বলা যেতে পারে, নায়িকাকে হয়রানি হতে হয়েছে প্রযোজকের অব্যবস্থার জন্য। সায়ন্তিকা বলেন, ‘প্রথমে অন্য মাস্টারজি এসেছিলেন নাচের দৃশ্য শুটিংয়ের জন্য। কিন্তু সেখানেও টাকাপয়সা নিয়ে সমস্যার জন্য তিনি চলে যান। তারপর মাইকেল নামের বাচ্চা ছেলেটি আসে।’

শুটিং না করেই চলে এসেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সায়ন্তিকা বলেন, ‘আমি একজন পেশাদার শিল্পী। তাই এ রকম করার কথা ভাবতেই পারি না। মাইকেল আমার থেকে অনুমতি না নিয়েই হাত ধরে আমায় সরাতে গিয়েছিল। তখন আমি সবার সামনেই বাধা দিই।’ এরই সঙ্গে অভিনেত্রী জানান, মূল সমস্যার নেপথ্যে রয়েছেন ছবির প্রযোজক। অভিনেত্রীর কথায়, ‘বারবার আমি প্রযোজক মনিরুলের সঙ্গে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কোনো উত্তরই পাওয়া যায়নি। তাঁর কোনো পরিকল্পনা নেই। কোনো ব্যবস্থা নেই।’

সায়ন্তিকা আরও জানিয়েছেন, দুই দিন ধরে কক্সবাজারে গিয়ে তিনি অপেক্ষা করেন। প্রযোজকের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। অভিনেত্রীর কথায়, ‘হঠাৎই বলা হলো, নাকি নাচের দৃশ্যের শুটিং করা হবে! বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করার পরেও যখন মনিরুল উত্তর দেননি, তখন বলেছিলাম, আমি এই ভাবে কাজ করব না মাইকেলের সঙ্গে।’ তবে নায়িকার দাবি, এত কিছুর পরও প্রযোজক নাকি জানিয়েছিলেন, মাইকেলকে নিয়েই কাজ করতে হবে।

কাজটি শেষ করার ব্যাপারে সায়ন্তিকার ভাষ্য, ‘প্রযোজক যদি সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করেন, তা হলে আমি নিশ্চয়ই ছবিটার কাজ শেষ করব। কিন্তু তার আগে আমায় চিত্রনাট্য, শট ডিভিশন পুঙ্খানুপুঙ্খ জানাতে হবে।’

এসব অভিযোগের ব্যাপারে  নৃত্য পরিচালক মাইকেল বাবু  বলেন, ‘৪ সেপ্টেম্বর একটি গান করি। ৫ সেপ্টেম্বর আরেকটি গান করতে করতে বেলা ২টা ১৫ মিনিটে বিরতি দেওয়া হয় সায়ন্তিকা ও জায়েদকে। পোশাক পরিবর্তন করে এক ঘণ্টা পর আসার কথা বলা হয়। কিন্তু তাঁরা এসেছেন প্রায় ৬টার দিকে। ততক্ষণে সূর্য চলে গেছে। এর মধ্যে প্রযোজক জানতে পারেন শুটিং বন্ধ। আমাকে ফোন করে প্রযোজক বলেন, “এখানে কি পিকনিক করতে এসেছি আমরা? শুটিং বন্ধ কেন?” আমি বলি, নায়ক-নায়িকা না আসলে কীভাবে শুটিং করব? ফোন কেটে দিয়ে প্রযোজক তাঁদের ফোন করেন। এরপর কী হয়েছে আমি জানি না। এই ঘটনায় জায়েদ খান আমাকে বলেছেন, দেরির ব্যাপারটা প্রযোজককে কেন আমি জানালাম।’

জানা যায়, ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় শুটিং সেটে এসে সায়ন্তিকা নৃত্য পরিচালক মাইকেল বাবুর পরিচালনায় গান করবেন না জানিয়ে দেন। আগের দিন শুটিংয়ের সময় মাইকেল বাবু সায়ন্তিকার হাত ধরেছেন, এই কারণে নাকি ওই নৃত্য পরিচালকের সঙ্গে আর কাজ করতে চাননি।

এ ব্যাপারে প্রযোজক মনিরুল ইসলামের বলেন, ‘নিজের দেশের শিল্পীকে ছোট করা হবে, সেটি মেনে নেব না। প্রয়োজনে ছবিই আর করব না। এটি সায়ন্তিকাকে বলেছি। যদি মাইকেল বাবুর সঙ্গে তিনি কাজ করেন, তাহলে ছবি করব, না হলে ছবির বাকি কাজ আর করব না। আমার যা লোকসান হয় হবে।’

এ বিষয়ে ছবির নায়ক জায়েদ খান বলেন, ‘সায়ন্তিকা যে কথাগুলো বলেছেন, সেটাই ঠিক। এটাই সত্য। প্রকৃত সমস্যা প্রযোজকের।’

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page