শাহিদ মোস্তফা শাহিদ
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ২নং পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৩ নেতার মধ্যে ত্রি-মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছে সাধারণ ভোটাররা। তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদ, মেম্বার হেলাল উদ্দিন ও সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
সরেজমিনে ঘুরে সাধারণ ভোটার, সচেতন নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদের জন্য বিষফোঁড়া হয়েছে জিয়াউল হক জিয়া,ফিরোজ উদ্দিন খোকা। হেলাল উদ্দিনের জন্য গলার কাঁটা হয়েছে মুবিনুল হক মুবিন, অপরদিকে বৃহত্তর গোমাতলীর ৩ ওয়ার্ড থেকে অন্য ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেও সপ্তাহ খানেক আগে একক প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে সমর্থন করে প্রচার প্রচারণা চালালেও গোমাতলী থেকে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদুল আলম নির্বাচনী মাঠে থাকায় অনেকটা কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে নির্বাচনী বৈরিতা পার করতে হবে সাইফুদ্দিনকে।
রবিবার পোকখালী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে শতাধিক ভোটার, সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুলত ৩ জনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও এবারে দলীয় প্রতীক না থাকায় ১৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ায় উৎসব মুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে পোকখালীতে। আবার একটি ইউনিয়ন থেকে এতো বেশি সংখ্যক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ায় কটুবাক্যও শোনা গেছে বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছ থেকে।
জানা গেছে, রফিক আহমদ, হেলাল উদ্দিন মেম্বার ও সাইফুদ্দিনের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে ইউনিয়নে।নিজেরা স্ব স্ব পরিচয়ে বেশ পরিচিত। তাদের রয়েছে আলাদা ভোট ব্যাংক। অন্যান্য প্রার্থীরাও একইভাবে জনপ্রিয়।
ভোটারেরা জানান, বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক আহমদ ২০১৬ সালে কারাগার থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দলীয়ভাবে রফিক আহমদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধিত্ব, রাজনীতি করার সুবাদে বিশাল একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে তার। জানতে চাইলে রফিক আহমদ বলেন, ৮ বছর পোকখালীবাসীর সেবা করেছি। এবারও সাধারণ ভোটাররা তাকে ভোট দিয়ে আরেকবার সেবা করার সুযোগ দিবে। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অন্যান্য প্রার্থীরাও সমান তালে নির্বাচনী মাঠে রয়েছে। কোনো প্রার্থীকে তিনি ছোট করে দেখছে না, বরং উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন সমাপ্ত করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অপরদিকে হেলাল উদ্দিন মেম্বার, প্রথম বারের মতো পোকখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড থেকে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে নির্বাচিত হয়ে জনসেবায় নেমে পড়েন। রাজনৈতিকভাবে তিনি বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। জানতে চাইলে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হেলাল উদ্দিন বলেন, ৮ বছর এলাকার মানুষের পাশাপাশি পুরো ইউনিয়নের জনগণের পাশে ছিলেন। মহামারী করোনা, দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে তিনি সবসময় মানুষের পাশে ছুটে গেছেন। নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে আশাবাদী।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। রাজনৈতিক জীবনে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তার বাবা মরহুম ফিরোজ আহমেদ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
তবে তার সমর্থকরা দাবি করছেন, বৃহত্তর গোমাতলীর ৩ টি ওয়ার্ড থেকে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তারা আরো বলেন, সাইফুদ্দিনের বাবা সাবেক একজন সফল চেয়ারম্যান। তার আমলে ইউনিয়নের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়ছিল। সে সুবাদে তার ছেলে সাইফুদ্দিন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হলে বাবার পথ অনুসরণ করে চলবে।
ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের পোকখালী ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৯শ’ ২ জন। তৎমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার, ৩ শ’ ১০ জন, নারী ভোটার ৭ হাজার ৫ শ ৯২ জন। ৯টি কেন্দ্রের ৪৬টি কক্ষে আগামী ২৮ এপ্রিল পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আগামীকাল প্রকাশ হবে ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হালচাল।