ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জেলা প্রশাসনের কর্মচারী নজরুল ইসলাম আর নেই: মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় জানাজা ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাবে ৫ দিন বৃষ্টির আভাস টেকনাফ পাহাড়ে পাচারকারীদের হাতে জিম্মি ২২ নারী-পুরুষ উদ্ধার ভুয়া কাগজে জমি দখলের চেষ্টা, আদালত রায় দিলো প্রকৃত মালিকের পক্ষে পেকুয়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৩ সাগরে ঘূর্ণিঝড় মোনথা, ২ নম্বর সংকেত সাংবাদিক আব্দুল আজিজের পিতৃবিয়োগ: জানাজা বাদ মাগরিব পেকুয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে অনলাইন জুয়ার ২ এজেন্ট আটক উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে কক্সবাজারে দ্রুত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন চায় শিবির টেকনাফে মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার মহেশখালীতে পুলিশের অভিযানে আটক-১ সাংবাদিক হাফিজের বাবার জানাজা সোমবার সকাল ১০ টায় সাংবাদিক হাফিজের বাবার ইন্তেকাল: টিটিএনের শোক “গোলদীঘিতে ধরা পড়া কাতলা মাছটি ১১ কেজি নয়, প্রকৃত ওজন ৬ কেজি” আসছে “মন্থা”, কক্সবাজারে বৃষ্টি

১৭ জুলাই ২০২৪: কোটা বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয় গণমানুষের আন্দোলনে

  • টিটিএন ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৮:২২:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • 347

১৭ জুলাই থেকেই কোটা বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয় গণমানুষের আন্দোলনে। যাত্রাবাড়িতে গড়ে ওঠে জুলাইয়ের অভেদ্য প্রতিরোধ । হলগুলো থেকে বের করে দেয়া হয় ছাত্রলীগকে, বন্ধ করে দেয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট। আর সন্ধ্যায় কালো শাড়ি পরে শেখ হাসিনার সেই শোক প্রকাশ, আবারাও ক্ষুব্ধ করে তোলে জনতাকে।
১৬ জুলাই রংপুরে ঘটে অভ্যুত্থানের বাঁক বদলে দেয়া ঘটনা। পুলিশের আগ্রাসী হামলায় নিহত হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই একটি মৃত্যুর খবর সব ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে দেয়। আন্দোলনে আসে নয়া মোড়।
পরদিন ১৭ জুলাই ক্ষমতাশীলদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে শুরু হয়, হলগুলো ছাত্রলীগমুক্ত করা। ভোর থেকেই ঢাবিসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসের হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বের করে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগশূন্য ঘোষণা করে ক্ষিপ্ত শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, নারীদের হলগুলো মুক্ত হওয়ার পর মহসীন হলসহ বেশ কিছু হল মুক্ত করা হয়।
১৬ তারিখ আবু সাঈদ, ওয়াসিমসহ সারাদেশে নিহত হয় অন্তত ৬ শিক্ষার্থী। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এদিন রাজু ভাস্কর্যের সামনে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে জানাজা শুরুর আগেই আবারও শুরু হয় পুলিশের হামলা-টিয়ারশেল নিক্ষেপ-লাঠিচার্জ। পরে বিকেল চারটার দিকে ঢাবি উপাচার্য বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা পড়েন আন্দোলনকারীরা।
রিফাত রশিদ আরও বলেন, সোয়াট টিম স্নাইপার নিয়ে সবার দিকে টার্গেট করে অবস্থান নিয়েছিল। এছাড়াও মূল আক্রমণে ছিল পুলিশ।
এদিন, ধরপাকড়ও চলে। তবে এদিন সাহসী শিক্ষকরা শাহবাগ থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন আটক করা ২ শিক্ষার্থীকে। এদিন ঢাকার যাত্রাবাড়ি, শরিয়তপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ফেনী, মুন্সিগঞ্জসহ সারাদেশে চলে বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ। আর সেসব কর্মসূচিতে চলতে থাকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগের সশস্ত্র হামলা। এদিন আহত হয় শত শত মানুষ।
সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর বহুমুখী ক্র্যাকডাউনের মধ্যেই আসে ক্যাম্পাস বন্ধ ও হল ছাড়ার নির্দেশ। সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ফাঁকা না করলে কোনো ছাড় না দেয়ার হুমকি দেয় পুলিশ।
এদিন সন্ধ্যা ৭টায় বক্তব্য দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক প্রকাশের এ ধরণ দেখে মন গলেনি কারোরই। উল্টো শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়া ট্রল।এদিন রাতে হঠাৎই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার। হিতে বিপরীত হয়। নিয়ন্ত্রণের বদলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে আরও। সারাদেশে নিরস্ত্র-সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ র‍্যাব বিজিবির হামলার প্রতিবাদে ১৮ জুলাই থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।
রাত ৮টার দিকে যাত্রাবাড়িতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন সত্ত্বেও দমানো যায়নি রাজপথে নেমে আসা সাধারণ মানুষকে।
এদিন থেকেই জেগে উঠেছিল জুলাই আন্দোলনের ‘লেলিনগ্রাদ’-যাত্রাবাড়ি। ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে স্থানটি বহু চেষ্টা আর শতশত লাশ ফেলার পরও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি তখনকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা প্রশাসনের কর্মচারী নজরুল ইসলাম আর নেই: মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় জানাজা

This will close in 6 seconds

১৭ জুলাই ২০২৪: কোটা বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয় গণমানুষের আন্দোলনে

আপডেট সময় : ০৮:২২:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

১৭ জুলাই থেকেই কোটা বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয় গণমানুষের আন্দোলনে। যাত্রাবাড়িতে গড়ে ওঠে জুলাইয়ের অভেদ্য প্রতিরোধ । হলগুলো থেকে বের করে দেয়া হয় ছাত্রলীগকে, বন্ধ করে দেয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট। আর সন্ধ্যায় কালো শাড়ি পরে শেখ হাসিনার সেই শোক প্রকাশ, আবারাও ক্ষুব্ধ করে তোলে জনতাকে।
১৬ জুলাই রংপুরে ঘটে অভ্যুত্থানের বাঁক বদলে দেয়া ঘটনা। পুলিশের আগ্রাসী হামলায় নিহত হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই একটি মৃত্যুর খবর সব ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে দেয়। আন্দোলনে আসে নয়া মোড়।
পরদিন ১৭ জুলাই ক্ষমতাশীলদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে শুরু হয়, হলগুলো ছাত্রলীগমুক্ত করা। ভোর থেকেই ঢাবিসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসের হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বের করে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগশূন্য ঘোষণা করে ক্ষিপ্ত শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, নারীদের হলগুলো মুক্ত হওয়ার পর মহসীন হলসহ বেশ কিছু হল মুক্ত করা হয়।
১৬ তারিখ আবু সাঈদ, ওয়াসিমসহ সারাদেশে নিহত হয় অন্তত ৬ শিক্ষার্থী। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এদিন রাজু ভাস্কর্যের সামনে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে জানাজা শুরুর আগেই আবারও শুরু হয় পুলিশের হামলা-টিয়ারশেল নিক্ষেপ-লাঠিচার্জ। পরে বিকেল চারটার দিকে ঢাবি উপাচার্য বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা পড়েন আন্দোলনকারীরা।
রিফাত রশিদ আরও বলেন, সোয়াট টিম স্নাইপার নিয়ে সবার দিকে টার্গেট করে অবস্থান নিয়েছিল। এছাড়াও মূল আক্রমণে ছিল পুলিশ।
এদিন, ধরপাকড়ও চলে। তবে এদিন সাহসী শিক্ষকরা শাহবাগ থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন আটক করা ২ শিক্ষার্থীকে। এদিন ঢাকার যাত্রাবাড়ি, শরিয়তপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ফেনী, মুন্সিগঞ্জসহ সারাদেশে চলে বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ। আর সেসব কর্মসূচিতে চলতে থাকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগের সশস্ত্র হামলা। এদিন আহত হয় শত শত মানুষ।
সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর বহুমুখী ক্র্যাকডাউনের মধ্যেই আসে ক্যাম্পাস বন্ধ ও হল ছাড়ার নির্দেশ। সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ফাঁকা না করলে কোনো ছাড় না দেয়ার হুমকি দেয় পুলিশ।
এদিন সন্ধ্যা ৭টায় বক্তব্য দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক প্রকাশের এ ধরণ দেখে মন গলেনি কারোরই। উল্টো শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়া ট্রল।এদিন রাতে হঠাৎই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার। হিতে বিপরীত হয়। নিয়ন্ত্রণের বদলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে আরও। সারাদেশে নিরস্ত্র-সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ র‍্যাব বিজিবির হামলার প্রতিবাদে ১৮ জুলাই থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।
রাত ৮টার দিকে যাত্রাবাড়িতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন সত্ত্বেও দমানো যায়নি রাজপথে নেমে আসা সাধারণ মানুষকে।
এদিন থেকেই জেগে উঠেছিল জুলাই আন্দোলনের ‘লেলিনগ্রাদ’-যাত্রাবাড়ি। ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে স্থানটি বহু চেষ্টা আর শতশত লাশ ফেলার পরও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি তখনকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।