দেশের লবনের চাহিদার ৮৭ ভাগ পুরন করা হয় কক্সবাজারে উৎপাদিত লবন লবন দিয়ে। ২০১৮ সালের লবণ চাষী শুমারীর তথ্য এটি। সম্ভাবনাময় এ লবণ শিল্প আজ হুুমকির মুখে। কম দামে লবণ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কক্সবাজার উপকুলের চাষীরা। কারণ প্রতি মণ লবণ উৎপাদনে যে খরচ, তার চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, অনেক চাষি উৎপাদন মৌসুম শুরু হলেও মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছেন না, কারণ লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। যারা নেমে পড়েছেন তারাও চরম দু:শ্চিন্তায় দিন পার করছেন।
মহেশখালীর লবণচাষী আমীর হামজা জানিয়েছেন, মাঠপর্যায়ে প্রতি মণ লবণ বিক্রি হচ্ছে আনুমানিক ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, অন্যদিকে প্রতি মণ লবণ উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ৪০০ টাকা।প্রতিমনেই ২৫০ টাকার মতো লোকসান গুনছেন চাষীরা।
ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি জনাব সামশুল আলম আজাদ বলেন “স্থানীয় লবণ শিল্প আজ বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। বিদেশি সোডিয়াম সালফেটের চাপ ও বাজারে অস্থিরতার কারণে চাষি থেকে মিল মালিক, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা চাই চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাক এবং স্থানীয় শিল্প সুরক্ষিত থাকুক। সরকারের উদ্যোগ ও বিসিকের সহযোগিতায় সমন্বিত ভাবে কাজ করলে এ সংকট দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।”
বিদেশ থেকে সোডিয়াম সালফেট নামে লবণ আমদানির কারণেই বড় লোকসানের মূখে দেশে বৃহৎ এই শিল্প। এটি বন্ধ করা সম্ভব হলে লবনের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে বলে জানানা লবণ ব্যবসায়ীরা।
লবণ চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিশেষজ্ঞ শেখ জাহাঙ্গীর হাছান মানিক বলেছেন “বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে লবণ চাষ টেকসই রাখতে হলে উৎপাদন ব্যয় কমানো, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ এবং একর প্রতি অধিক ফলন নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি। সঠিক প্রযুক্তি, প্রক্রিয়াজাত করণ ও নীতিগত সুরক্ষা মিলেই চাষি ও মিল মালিক উভয়ের লাভজনকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”
বিসিক কক্সবাজারের পরিচালক জাফর ইকবাল বলছেন, পদ্ধতিগত ভুলের কারণে অনেক চাষী লবণের দাম পাচ্ছে না। তাদের দিক নির্দেশনা মেনে চাষে মনোযোগী হবার তাগিদ দেন এই কর্মকর্তা।
সম্প্রতি কক্সবাজার সফরে এসে শিল্প মন্ত্রনালয়ের সচিব মো: ওবায়দুর রহমান লবণ সংশ্লীষ্টদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় তিনি লবণের মজুত, ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, মিল মালিক, প্রান্তিক চাষিদের সমস্যা ও লবণ শিল্পের সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করেন এবং খাবার লবন আমদানি বন্ধ করা হবে বলে জানান।পাশাপাশি আমদানি করা লবন বন্দর থেকে খালাসের আগে পরীক্ষা করার কথাও জানান।
তথ্য বলছে,কক্সবাজার উপকুলের অন্তত ৪১ হাজার চাষি রয়েছে। এ বছর লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ২৭ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিকটন।
আফজারা রিয়া 



















