নির্বাচনকালীন সরকার যদি পক্ষপাতিত্ব করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডির টিআইবির কার্যলয়ে নির্বাচন কমিশনবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডি ও টিআইবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইলেকশন ট্রেনিং কর্মসূচির উদ্বোধনীতে তিনি এ কথা বলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না চায়, তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কঠিন হবে। এ জন্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি।
আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকেই এখন প্রশাসনে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্বলতা মাথায় নিয়েই এগোতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের অবকাঠামো বলতে গভর্নেন্সের সুশাসন ও জবাবদিহি, সরকার ব্যবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, সততা, এসবকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে। এটা শুধু গত ১৬ বছরের নয়, প্রায় ৫৪ বছর ধরেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে দ্বিগুণ দলীয় প্রভাবের মধ্যে আনা হয়েছে, পেশাগত বিরোধ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেগুলোকে কখনও কার্যকর করা হয়েছে, আবার অনেক ক্ষেত্রেই অকার্যকর করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে, এক-দেড় বছরে পুরো বিষয়টিকে নতুন করে গুছিয়ে ফেলা খুব একটা সহজ কাজ নয়। সেই কারণেই অনেকের প্রশ্ন, এই প্রশাসন দিয়ে আমরা কি সত্যিকারের সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারি? এই প্রশ্নের পেছনে যুক্তি আছে, কারণ পতিত সরকারের এজেন্ট বা সহযোগীরা প্রশাসন ও আইন সংস্থায় নেই—এটা বলা যাবে না।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, অন্যদিকে যাদের দীর্ঘদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, তাদের অবস্থান ফিরে পাওয়ার মধ্যেও দলীয়করণ প্রতিস্থাপিত হয়েছে। সেটি অস্বীকার করার উপায় নেই। পাশাপাশি আছে আরেকটি শক্তি– যারা চেষ্টা করছেন নিরপেক্ষ থাকতে, পেশাগত জীবনে সবসময় পেশাদারত্ব বজায় রাখতে। আমি মনে করি না প্রশাসনের আইন সংস্থায় যারা আছেন, তারা শতভাগ পক্ষপাতদুষ্ট। কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, যারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার মতে, এই তিন ধরনের শক্তির টানাপোড়েনের মধ্যেই প্রশাসন এগোচ্ছে এবং তারা নিজেদের ভূমিকা পালন করবে। তবে এটিকে রাতারাতি পরিবর্তন করা কিংবা পুরো প্রশাসন নতুন করে সাজানো সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমাদের সময় দিতে হবে, যাতে একটি স্থিতিশীলতা তৈরি হয় এবং নতুন ধরনের পেশাদারত্ব গড়ে ওঠে।
সূত্র:বাংলা ট্রিবিউন