লেভেল ক্রসিং
নেই গার্ড
নেই গেইট বার
কক্সবাজারের রামুর রশিদনগর এলাকায় রেললাইন ও ক্রসিং গুলোতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে একই পরিবারের তিনজনসহ মারা গেছে চার জন।
শনিবারের ঘটনায় দেখা গেছে সিএনজি অটোরিকশাটিকে ট্রেনের সামনের অংশ টেনে নিয়ে গেছে অনেকদূর পর্যটন।
রশিদনগরের স্থানীয় ইউপি সদস্য বদি আলম বলেন, অটোরিকশাটি রশিদনগর রেলক্রসিং পেরিয়ে রেল লাইনের উপর উঠে পড়লে কক্সবাজার এক্সপ্রেস সেটিকে ধাক্কা দেয়।
“এ সময় অটোরিকশাটি ট্রেনের সামনের অংশে আটকে গেলে প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় ট্রেন। এতে নিহতদের দেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছিটকে পড়ে।”
রেলওয়ের রামু স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আক্তার হোসেন বলেন, “দুর্ঘটনাস্থল আমার স্টেশন থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। সম্ভবত এটি একটি লেভেল ক্রসিং।
“লেভেল ক্রসিংগুলো ছোটো হওয়ায় এখানে কোনো গেইট বা ব্যারিয়ার থাকে না। তবে সতর্কীকরণ নির্দেশনা বোর্ড লাগানো থাকে। গেইট ব্যারিয়ার থাকে বড় ক্রসিংগুলোতে।”
রামুর যেই ক্রসিংটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে কোনো গার্ড ও গেইট বার না থাকার কথা জানিয়েছে সেখানকার স্থানীয়রা। স্থানীয় সাংবাদিক আবুল কাসেম জানান, এই ক্রসিংয়ে এসব কিছুই নেই। তাই ঘটছে দুর্ঘটনা।
রামু রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আক্তার হোসেন জানান, ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছাকাছি থাকলে রেললাইনের উপর থাকা ধাতব বস্তু অনেক সময় সরানো যায়না। শনিবার দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি অটোরিকশাটিও একারণে সরে যেতে পারেনি হতে পারে।
বারবার দুর্ঘটনা ঘটায় এই ক্রসিং গুলোতে গার্ড ও গেইট বার দেয়ার বিষয়ে উর্ধতন মহলে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান এই রেলওয়ে কর্মকর্তা।
এদিকে এই দুর্ঘটনার পর কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি গন্তব্যে চলে যায়। কিন্তু রামুর পানিরছড়া এলাকায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস আটকে রাখেন বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
রামুর স্থানীয়রা দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবী তোলে এসময়। রামু থানার ওসি তৈয়বুর রহমান তখন বিষয়টি নিয়ে উপর মহলে জানানোর আশ্বাস দিতে দেখা গেছে।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে র্যাব পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে দেন স্থানীয়রা। আড়াই ঘন্টা দেরীতে ট্রেনটি কক্সবাজার পৌঁছেছে বলেও জানান সহকারী স্টেশন মাস্টার আক্তার হোসেন।
শনিবার বেলা দেড়টার দিকে রামুর রশিদনগর এলাকার রেল ক্রসিংয়ে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রামু থানার ওসি তৈয়বুর রহমান।
এতে নিহতরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পূর্ব গোমাতলী এলাকার বাসিন্দা রেনু আরা (৩৫), তার বোন আসমা আরা (১৩), রেনু আরার তিন বছর বয়সী এক ছেলে আশেক উল্লাহ ও অটোরিকশার চালক ঈদগাঁও মেহেরঘোনা এলাকার ছৈয়দ নুরের ছেলে হাবিব উল্লাহ (৪০)।