বাংলাদেশ সীমান্ত-সংলগ্ন মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার এলাকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডু শহর দখলের দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। ফলে সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী এ খবর জানিয়েছে।
সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা কয়েক মাসের লড়াইয়ের পর রবিবার সকালে মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত জান্তার সর্বশেষ সীমান্ত ঘাঁটি,বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ দখল করেছে।
সোমবার রাখাইন মিডিয়া জানায়, মংডু যুদ্ধের পর সামরিক অপারেশন কমান্ড ১৫-এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন টুন এবং প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ জান্তা বাহিনীর সদস্যদের আটক করেছে আরাকান আর্মি।
মে মাসের শেষ দিকে মংডু আক্রমণ শুরু করেছিল আরাকান আর্মি। পুরো শহর নিজেদের দখলে নিতে তাদের ছয় মাস সময় লেগেছে।
আরাকান আর্মির দাবি, তারা মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী তিনটি শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এগুলো হলো-রাখাইন রাজ্যের মংডু ও বুথিডং এবং ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন চিন রাজ্যের পালেতোয়া।
রাখাইনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনরুদ্ধার রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী মানুষের দুর্দশা লাঘব করতে সহায়ক হবে।
জাতিসংঘ গত মাসে জানিয়েছিল যে রাখাইনের ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতে পারে।
জান্তা সরকার রাজ্যের সড়ক এবং জলপথ অবরোধ করেছে। ফলে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধসহ আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্যের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বিশ্লেষক আরও বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে জটিল রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হলে বাংলাদেশের সরকারকে আরাকান আর্মির সঙ্গে অর্থবহ আলোচনায় বসতে হবে। কারণ তারা এখন দক্ষিণ রাখাইনের গওয়া, তাউংগুপ এবং আন শহরের দখল নেওয়ার জন্য লড়াই করছে। এরই মধ্যে আন শহরের বেশিরভাগ অংশ এবং ৩০টিরও বেশি জান্তা ঘাঁটি ও অবস্থান দখল করেছে তারা।