মহেশখালী বদরখালী সংযোগ সেতুর বদরখালী অংশে কতিপয় লোকজন যখন ইচ্ছে মহেশখালী পারাপারের গাড়ি ব্যারিকেড দিয়ে আটকে যাত্রীদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার (৮ মার্চ) রাত ১০ টা থেকে রাত ১২ টা এবং রবিবার সকাল থেকে মহেশখালী পারাপারের গাড়ি আটকে যাত্রীদের হয়রানি করছে বলে জানান যাত্রীরা।
ভুক্তভোগী যাত্রী আবদু রহিম জানান, বদরখালী থেকে মহেশখালী আসা গাড়িতে হঠাৎ কিছু লোকজন এসে আঘাত করে, চালক কে বলে যাত্রী নামিয়ে দিতে। কারণ জানতে চাইলে বলেন, কোনো কারণ নেই মহেশখালীর লোকজন গাড়িতে করে যেতে পারবে না, হেঁটে যেতে হবে। চালক আমাদের নামিয়ে দিলে আমরা রাতে হেঁটে মহেশখালী ফিরি। শুধু আমরা নয় এইরকম অসংখ্য যাত্রী হেঁটে ফিরেছে, তাদের মধ্যে রোগীও রয়েছে।
ওসমান গণী নামের একজন জানান, আমি কাজ করে দোহাজারি থেকে বাড়িতে আসছিলাম, হঠাৎ বদরখালী ফেরিঘাট থেকে কোনো গাড়ি মহেশখালীতে আসতে দিচ্ছে না কিছু লোকজন। পরে আমরা কয়েকজন রাত সাড়ে ১১ টায় হেঁটে মহেশখালী আসি।
গতরাতে এমন যাত্রী হয়রানির পর রবিবার সকালেও একই ভাবে মহেশখালীতে কোনো গাড়ি পার হতে না দেয়া এবং মহেশখালী থেকে কোনো গাড়ি যেতে না দেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। এমনকি মহেশখালী অংশ ব্রিজের পশ্চিম প্রান্তেও কোনো গাড়ি দাঁড়াতে দিচ্ছে না বলে জানান তারা।
এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি মহেশখালীর চালিয়াতলী স্টেশনে বদরখালীর গাড়ির যাত্রী নামিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত শত-শত গাড়ি ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেদায়েত উল্যাহ্ এবং মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইছার হামিদ এসে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
গত ৫ জানুয়ারি বদরখালী স্টেশনের এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণ করা হলে মহেশখালীর মানুষ নিরাপত্তার সংকট থেকে মহেশখালীর স্টেশন চালিয়াতলীতে করে। এরপর থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা যায়।
মহেশখালীর তরুণ এনামুল হক জানান, মহেশখালী ও চকরিয়া আলাদা দুটো উপজেলা। বদরখালী, চকরিয়া উপজেলার অংশ। দুই উপজেলার আলাদা স্টেশন থাকবে। এক উপজেলার গাড়ি অন্য উপজেলায় যাত্রী নিয়ে প্রবেশের আলাদা নিয়ম রয়েছে, কিন্তু চকরিয়া উপজেলার গাড়ি লোকাল যাত্রী নিয়ে মহেশখালীর গোরকঘাটা যাওয়া তো অনিয়ম, একই ভাবে মহেশখালীর গাড়ি লোকাল যাত্রী নিয়ে চকরিয়া যাওয়াও অনিয়ম। মহেশখালীর স্টেশন বদরখালী পুনরায় নিয়ে যেতে পরিকল্পিতভাবে এই অনিয়ম করা হচ্ছে এবং গাড়ি আটকে যাত্রীদের ভোগান্তির মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে দাবি তার।
মহেশখালীর সমাজ উন্নয়নকর্মী রকিবুল হাসান জানান, মহেশখালীর উত্তরের প্রায় সাড়ে তিনলক্ষ মানুষ বদরখালী বাজার নির্ভরশীল ছিল। ৫ জানুয়ারি পর থেকে বর্তমানে এই ঈদে মানুষ বদরখালী বাজার বিমুখ হয়ে সরাসরি চকরিয়া চলে যাচ্ছে তাই মহেশখালীর মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
বদরখালীর বাসিন্দা মো. আরিফ জানান, মহেশখালী বদরখালীর এই বিশৃঙ্খলা করছে ফেরিঘাট স্টেশন কেন্দ্রিক কিছু ব্যক্তি। নিজেদের স্বার্থে এটা করছে কিন্তু ভুক্তভোগীরা পুরো বদরখালীর মানুষকে দায়ী করছে বিষয়টি দুঃখজনক।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, রাতে যাত্রী হয়রানির বিষয়টি তিনি জানেন না। সকালে তেমন একটি বিশৃঙ্খলার ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যে বা যারা এমন বিক্ষিপ্ত ঘটনা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিবে।