ঢাকা ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাত্ররাজনীতিতে পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ইনানীতে আত্মপ্রকাশ করলো শফির বিল জেলে কল্যাণ সমিতি

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে অঙ্গীকার করল বাংলাদেশ-পাকিস্তান

জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ‘টু-স্টেট সল্যুশন’ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সোমবার (২৮ জুলাই) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও জোরদারে সম্মত হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের নেতারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছেন এবং পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া, শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ও মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়েও একমত হয়েছেন তারা।

বৈঠকে গাজায় চলমান মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই নেতা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অটল সংহতি জানিয়ে চলমান সম্মেলন থেকে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক বরফ গলতে শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের প্রতি কড়া অবস্থান রাখা ঢাকার আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে নতুন সরকারের শাসনামলে। ফলে দুই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশীয় দেশের মধ্যে বাস্তবমুখী ও অগ্রগতিমূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়।

এই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ঢাকায় তার বাংলাদেশি সমকক্ষ (স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকারে এক ঐতিহাসিক চুক্তি হয়, যা ভবিষ্যতের বাণিজ্য ও রাষ্ট্রীয় যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

চীনপ্রভাবিত নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতায়, এবং সার্কের মতো ঐতিহ্যবাহী জোটগুলোর গুরুত্ব কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের পররাষ্ট্রনীতিকে পুনর্বিন্যাস করছে।

উভয় দেশই এখন অতীতের টানাপড়েনের বাইরে এসে উন্নয়ন, বাণিজ্য ও কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে ইস্যুভিত্তিক সহযোগিতা গড়ার দিকে মনোযোগী হচ্ছে।

সম্প্রতি পাকিস্তান তার দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। মুসলিম বিশ্বের ঐক্য দৃঢ়করণ এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখাই এর অন্যতম লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ অস্থায়ীভাবে পাকিস্তানি কূটনীতিক ও পণ্যের ওপর আরোপিত কিছু বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন গতি এনেছে।

সূত্র: ইত্তেফাক

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে?

This will close in 6 seconds

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে অঙ্গীকার করল বাংলাদেশ-পাকিস্তান

আপডেট সময় : ০১:০৫:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ‘টু-স্টেট সল্যুশন’ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সোমবার (২৮ জুলাই) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও জোরদারে সম্মত হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের নেতারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছেন এবং পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া, শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ও মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়েও একমত হয়েছেন তারা।

বৈঠকে গাজায় চলমান মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই নেতা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অটল সংহতি জানিয়ে চলমান সম্মেলন থেকে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক বরফ গলতে শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের প্রতি কড়া অবস্থান রাখা ঢাকার আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে নতুন সরকারের শাসনামলে। ফলে দুই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশীয় দেশের মধ্যে বাস্তবমুখী ও অগ্রগতিমূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়।

এই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ঢাকায় তার বাংলাদেশি সমকক্ষ (স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকারে এক ঐতিহাসিক চুক্তি হয়, যা ভবিষ্যতের বাণিজ্য ও রাষ্ট্রীয় যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

চীনপ্রভাবিত নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতায়, এবং সার্কের মতো ঐতিহ্যবাহী জোটগুলোর গুরুত্ব কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের পররাষ্ট্রনীতিকে পুনর্বিন্যাস করছে।

উভয় দেশই এখন অতীতের টানাপড়েনের বাইরে এসে উন্নয়ন, বাণিজ্য ও কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে ইস্যুভিত্তিক সহযোগিতা গড়ার দিকে মনোযোগী হচ্ছে।

সম্প্রতি পাকিস্তান তার দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। মুসলিম বিশ্বের ঐক্য দৃঢ়করণ এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখাই এর অন্যতম লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ অস্থায়ীভাবে পাকিস্তানি কূটনীতিক ও পণ্যের ওপর আরোপিত কিছু বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন গতি এনেছে।

সূত্র: ইত্তেফাক