ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় যে আহতদের এখন চিকিৎসা চলছে, তাদের সাহায্য করার জন্য ভারত থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত কিছু সরঞ্জাম ঢাকাতে পাঠানো হচ্ছে।
দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ চূড়ান্ত হয়েছে বলে বিবিসি বাংলা জানতে পেরেছে।
দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র এদিন বিবিসিকে জানান, “আমরা আশা করছি দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক – যাদের বার্ন ইউনিটে কাজ করার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আছে, তারা নার্সদের একটি ছোট টিম নিয়ে আজই (মঙ্গলবার) ঢাকায় পৌঁছে যাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “পাঠানো হচ্ছে মেডিক্যাল ইকুইপমেন্টও। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী আরও চিকিৎসকরাও যাবেন।”
জানা যাচ্ছে, গতকালের ওই দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশে তার কাউন্টারপার্টকে ফোন করেন এবং যে কোনও দরকারে ভারত যে সর্বতোভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত, সে কথাও তাকে জানিয়ে দেন।
সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ওই বিমান দুর্ঘটনার ঘটনায় তার শোক ব্যক্ত করেন এবং জানিয়ে দেন, এই সংকটে ‘ভারত বাংলাদেশের পাশে আছে এবং সব ধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিতেও প্রস্তুত’।
এরপর থেকে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে দুই সরকারের মধ্যে সারাক্ষণই যোগাযোগ থেকেছে।
ঢাকায় সরকারের পক্ষ থেকে দিল্লিতে জানানো হয়েছিল, বেশির ভাগ ভিক্টিমেরই শরীর পুড়ে গেছে – তাই এই দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ দল, ইকুইপমেন্ট ও অত্যাধুনিক ওষুধপত্র পেলেই সবচেয়ে সুবিধে হবে। সেই অনুরোধ অনুযায়ী দিল্লিও সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয় এবং নার্স-সহ দু’জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এরপর ঢাকাতে ভারত থেকে আরও ডাক্তার ও নার্স পাঠানোর প্রক্রিয়াও জারি আছে বলে দু’দেশের কূটনৈতিক সূত্রই বিবিসির কাছে নিশ্চিত করেছে।
ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বিগত প্রায় এক বছর ধরে একটা ‘কূটনৈতিক শৈত্য’ দেখা গেলেও সংকটের মুহুর্তে দুই দেশ যে মানবিকতার পরিচয় দিয়ে কাছাকাছি আসতে পারলো, পর্যবেক্ষকরা সেটাকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা