ঢাকা ১০:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মায়ানমার: শান্তি ও গণতন্ত্রের নামে দাবার খেলায় রেফারি কে? মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক শাহাবুদ্দিন, মানুষের সাহায্যের অপেক্ষায়… কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সমগ্র কক্সবাজার বিদ্যুৎ থাকবেনা শুক্রবার! অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলো মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা অনলাইন মাল্টিমিডিয়ায় নুরুন্নাহারকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ ‘নির্বাচন একদিনও পেছাবে না, তবে আগামী ৫-৬ দিন গুরুত্বপূর্ণ’ অতিরিক্ত রোগীর চাপে নিজেই রোগী কক্সবাজার সদর হাসপাতাল! কক্সবাজার সদর উপজেলা ফুটবল খেলোয়াড় সমিতির নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। নির্বাচন প্রধান উপদেষ্টা যে সময়ে বলেছেন, তার থেকে একটা দিন দেরি হবে না: প্রেস সচিব চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে শিবির নেতা সাদিক কায়েম সমন্বয়ক ছিল না, ৫ আগস্ট থেকে এই পরিচয় ব্যবহার করেছে : নাহিদ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন: প্রথম ধাপে ৬২ প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি : শেখ হাসিনার বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি অনলাইনে ময়মনসিংহের তরুণীর সাথে প্রেম, বিয়ের এক বছর পর উখিয়ায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন: প্রথম ধাপে ৬২ প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদের’ একটি খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে ৬২টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব প্রস্তাব দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কাঠামোকে সময়োপযোগী ও গণমুখী করার সম্ভাব্য রূপরেখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তা পাঠিয়েছে কমিশন।

এর আগে গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের ৪৫ অধিবেশনে ১৬৬ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ৬২টিতে অধিকাংশ দল ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। এ সংক্রান্ত প্রথম ধাপের আলোচনার পর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা একটি খসড়া। যা জুলাই সনদ হিসেবে থাকবে।

কমিশনের ৬২টি প্রস্তাবের অধিকাংশতেই ২৫ থেকে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আর অচিরেই প্রকাশ করা হবে দ্বিতীয় ধাপে একমত হওয়া বিষয়গুলো।

রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যে পৌঁছানো ৬২টি প্রস্তাব বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
ক। সংবিধান সংস্কার

১। আইনসভা গঠন: সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে, ‘বাংলাদেশে একটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা থাকবে, যার নিম্নকক্ষ (জাতীয় সংসদ) এবং উচ্চকক্ষ (সিনেট) নিয়ে গঠিত হবে।’ (গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলমান) [৩০টি দল একমত]

২। উচ্চকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, উচ্চকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নিম্নকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতার অনুরূপ হবে। [২৪টি দল একমত]

৩। জাতীয় সংসদে নারী আসনের বিধান: জাতীয় সংসদে নারী আসন বৃদ্ধি করে একশতে উন্নীত করার ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত। (আলোচনা চলমান) [১৯টি দল একমত]

৪। ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন: সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে, আইনসভার উভয় কক্ষে একজন করে ডেপুটি স্পিকার সরকার দলীয় সদস্য ব্যতীত অপর সব সদস্যদের মধ্য থেকে মনোনীত করা হবে। [২৯টি দল একমত]

৫। সংসদের কমিটি ও সদস্যদের অধিকার নির্ধারণের জন্য আইন প্রণয়ন: সংবিধানের ৭৮ (৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদের কমিটিগুলো ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার নির্ধারণ করা হবে। [২৪টি দল একমত]

৬। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ, গুরুতর অসদাচরণ বা সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করা যাবে। আইনসভার নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাবটি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে পাস করার পর তা উচ্চকক্ষে প্রেরণ, এবং উচ্চকক্ষে শুনানির মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’ [২৮টি দল একমত]

৭। ভাষা: প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ভাষা হবে ‘বাংলা’। সংবিধানে বাংলাদেশে নাগরিকদের মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহৃত সকল ভাষা এ দেশের প্রচলিত ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৮। বাংলাদেশের নাগরিকদের পরিচয়: বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬ (২) এ উল্লিখিত ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালি এবং নাগরিকেরা বাংলাদেশি বলিয়া পরিচিত হইবেন’ বিধানটি নিম্নোক্তভাবে প্রতিস্থাপন করা হবে: ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলে পরিচিত হবেন।’ [৩১টি দল একমত]

৯। সংবিধান বিলুপ্তি ও স্থগিতকরণ ইত্যাদির অপরাধ: সংবিধান বিষয়ক অপরাধ ও সংবিধান সংশোধনের সীমাবদ্ধতা বিষয়ক বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক এবং ৭খ বিলুপ্ত করা হবে। [২৮টি দল একমত]

১০। সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও মর্যাদা: সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে ‘বাংলাদেশ একটি বহু-জাতি, বহু-ধর্মী, বহু-ভাষী ও বহু-সংস্কৃতির দেশ যেখানে সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।’ [৩৩টি দল একমত]

১১। মৌলিক অধিকারগুলোর তালিকা সম্প্রসারণ: সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক সংবিধানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলোর তালিকা সংশোধন ও নাগরিকদের অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। (বিস্তারিত দলগুলোর বিবেচনাধীন) [৩১টি দল একমত]

১২। আন্তর্জাতিক চুক্তি আইনসভায় অনুমোদন: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে ‘জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রভাবিত করে এমন আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের পরে আইনসভার উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে অনুমোদন (রেটিফাই) করা হবে।’ [২৩টি দল একমত]

১৩। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, নির্বাচন কমিশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। [২৮টি দল একমত]

১৪। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত সব কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কার্যকরী স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা। জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মসূচির অংশ না হলে, স্থানীয় পর্যায়ে সকল উন্নয়নমূলক কাজের উপর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ আর্থিক নিয়ন্ত্রণ এবং বাস্তবায়নের কর্তৃত্ব থাকবে। [২৭টি দল একমত]

১৫। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, যে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কাজে সরাসরি নিয়োজিত, তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের অধীনস্ত হবে। এবং যে সব সরকারি বিভাগ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এখতিয়ারভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত, তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনায় কাজ করবে। [২৭টি দল একমত]

১৬। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে। তবে প্রাক্কলিত তহবিল যদি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বাজেটের চেয়ে কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সেই বাজেট আইনসভার উচ্চকক্ষের স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। [২৪টি দল একমত]

১৭। জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, প্রতিটি জেলায় পারস্পরিক কার্যক্রমের সমন্বয়ের লক্ষে একটি জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা যা সেই জেলার মধ্যে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সমন্বয় এবং যৌথ কার্য সম্পাদনকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। এর সদস্য হবেন—প্রতিটি উপজেলা থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও দুজন ভাইস চেয়ারম্যান; প্রতিটি পৌরসভা থেকে নির্বাচিত মেয়র ও দুইজন ডেপুটি মেয়র; প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। প্রতিটি সিটি করপোরেশনের নিজস্ব সমন্বয় কাউন্সিল থাকবে। [২৫টি দল একমত]

১৮। ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলি: সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫০(২) বিলুপ্ত করা এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম তফসিল সংবিধানে না রাখা। [২৩টি দল একমত]

খ। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য

১৯। তথ্য অধিকার আইনের আওতায় রাজনৈতিক দল: নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতাভুক্ত করা হবে। [২৪টি দল একমত]

গ। বিচার বিভাগ সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য

২০। আপিল বিভাগের বিচারক সংখ্যা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, আপিল বিভাগের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রধান বিচারপতির চাহিদা মোতাবেক সময়ে সময়ে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ করা যাবে। [৩০টি দল একমত]

২১। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (Judicial Appointments Commission-JAC) গঠন করা। [২৬টি দল একমত]

২২। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ কমিশন সংক্রান্ত বিধান: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগ কমিশন সংক্রান্ত বিধানকে সংবিধানে অর্ন্তভুক্ত করা। [২৯টি দল একমত]

২৩। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করা। [৩২টি দল একমত]

২৪। বিচারকদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি: সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তা পর্যালোচনা ও হালনাগাদকরণ ও প্রয়োগ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

২৫। সাবেক বিচারপতিদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি: সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল সাবেক বিচারপতিদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ করা এবং শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সতর্ক করা এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে ‘বিচারপতি’ পদবি ব্যবহার থেকে বারিত করা। [২৯টি দল একমত]

২৬। বিচারকদের চাকরির নিয়ন্ত্রণ: অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করার জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৬ ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সংশোধন করা। [৩১টি দল একমত]

২৭। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা: নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে পৃথকীকরণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এই সচিবালয় সংক্রান্ত সংযুক্ত তহবিল থেকে অর্থায়ন করা। এই সচিবালয়ের ওপর অধস্তন আদালতের প্রশাসনিক কার্যক্রম, বাজেট প্রণয়ন, অধস্তন আদালতের বিচারকের পদোন্নতি, বদলি ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হবে। [৩১ দল একমত]

২৮। স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, সংবিধানের অধীনে সুপ্রিম কোর্ট ও জেলা ইউনিটের সমন্বয়ে একটি স্থায়ী সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা হবে। [২৯টি দল একমত]

২৯। স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠা: একটি স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন এবং তা কার্যকর করা। [৩০টি দল একমত]

৩০। বিচার বিভাগের জনবল বৃদ্ধি: বিচার বিভাগের সব স্তরে বিচারক ও সহায়ক জনবল বৃদ্ধি এবং বিশেষায়িত আদালত স্থাপন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩১। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাকে অধিদফতরে রূপান্তর: বিদ্যমান জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাকে অধিদফতরে রূপান্তর করার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৩২। বিচারক ও সহায়ক কর্মচারীদের সম্পত্তির বিবরণ: প্রতি তিন বছর পর পর সুপ্রিম কোর্ট এবং অধস্তন আদালতের বিচারক এবং সকল আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পত্তির বিবরণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে আনুষঙ্গিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিধান করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৩৩। আদালত ব্যবস্থাপনা সংস্কার ও ডিজিটাইজ করা: মামলার দীর্ঘসূত্রতা ও হয়রানি নিরসন, স্বচ্ছতা আনয়ন, মামলার খরচ হ্রাস ও বিচারপ্রাপ্তি সহজলভ্য করার জন্য বিভিন্ন বিধি প্রণয়ন, সংশোধন ও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশনা জারির মাধ্যমে আদালত ব্যবস্থাপনার সংস্কার ও ডিজিটাইজ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩৪। কতিপয় আইন রহিতকরণ ও সংশোধন: আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’ রহিত করা এবং মেডিয়েশনের বিধান সম্বলিত ‘আইনগত সহায়তা ও মধ্যস্থতা সেবা প্রদান অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করা এবং সালিশ আইন ২০০১ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন সংশোধন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

৩৫। আইনজীবীদের আচরণবিধি: আইনজীবীদের আচরণবিধি যুগোপযোগীকরণ করা; জেলা পর্যায়ে বার কাউন্সিল ট্রাইবুনাল স্থাপন এবং তার প্রধান হিসেবে একজন বিচারককে দায়িত্ব প্রদান করা হবে। অপরদিকে আদালত প্রাঙ্গণে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হবে। [২৬টি দল একমত]

৩৬। আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে দলীয় রাজনীতির প্রভাব বিলোপ: আইনজীবী সমিতি নির্বাচন এবং বার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবং নির্বাচন পরিচালনায় দলীয় রাজনীতির প্রভাব বিলোপের জন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট (সহযোগী সংগঠন, অঙ্গসংগঠন, ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ইত্যাদি) আইনজীবীদের যে কোনও সংগঠনকে স্বীকৃতি না দেওয়ার বিধান করা হবে। [২৫টি দল একমত]

৩৭। বিচারকদের রাজনৈতিক আনুগত্য: বিচারকদের রাজনৈতিক আনুগত্য প্রদর্শন বা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশকে অসদাচরণ হিসেবে বিবেচনা করে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান করা হবে। [৩২টি দল একমত]

ঘ। জনপ্রশাসন সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য

৩৮। গণহত্যা ও ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন: জুলাই অভ্যুত্থানকে গণহত্যা, নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত ও ভোট জালিয়াতি, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩৯। স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন: জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষে একটি স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হবে। [২৯টি দল একমত]

৪০। তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর সংশোধন: নাগরিকরা যাতে সহজে ও অবাধে সরকারি সেবা সংক্রান্ত তথ্য পেতে পারে সেজন্য তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (Right to Information Act, 2009) পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৪১। Official Secrets Act, 1923-এর সংশোধন: নাগরিকদের তথ্য ও পরিষেবায় অভিগম্যতা সহজ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে The Official Secrets Act, 1923 পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। [২৭টি দল একমত]

৪২। কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন: ভৌগোলিক অবস্থান ও যাতায়াতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৪৩। স্বতন্ত্র ভূমি আদালত স্থাপন: বর্তমানে ভূমি সংক্রান্ত মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে অনেক সময় ব্যয় হয় বিধায় নাগরিকদের ভোগান্তি দূর করার জন্য প্রতি বিভাগে একটি করে স্বতন্ত্র ভূমি আদালত স্থাপন করা হবে। [২৫টি দল একমত]

ঙ। দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারে ঐকমত্য

৪৪। সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে সংবিধান সংশোধন: বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(২) নিম্নরূপে প্রতিস্থাপন করা হবে: ‘রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টি করবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোনও ব্যক্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবেন না ও অনুপার্জিত আয় ভোগ করতে সমর্থ হবেন না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কায়িক, সব প্রকার শ্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতর অভিব্যক্তিতে পরিণত হবে।’ [৩০টি দল একমত]

৪৫) দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন: রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের পরিবর্তে একটি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবিরোধী দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্দিষ্ট করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৭-এর অধীনে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী ন্যায়পাল পদ সৃষ্টি করে ন্যায়পালকে দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্রের যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতায়িত করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৪৬। বৈধ উৎসবিহীন আয়কে বৈধতা দানের চর্চা বন্ধ করা: বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(২)-এর সামঞ্জস্য রেখে বৈধ উৎসবিহীন আয়কে বৈধতা দানের যেকোনও রাষ্ট্রীয় চর্চা চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৪৭। রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে সুবিধাভোগী মালিকানা (beneficial ownership) সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন: রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে। [৩১টি দল একমত]

৪৮। উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে আইন প্রণয়ন: প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত বা চূড়ান্ত মালিকানার তথ্য গোপন করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারসহ বিবিধ দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কোম্পানি, ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশনের প্রকৃত বা চূড়ান্ত সুবিধাভোগীর পরিচয়-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি রেজিস্টারভুক্ত করে জনস্বার্থে প্রকাশ নিশ্চিত করা। [২৯টি দল একমত]

৪৯। নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিত করা: নির্বাচনী আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করা।

রাজনৈতিক দলগুলো ও নির্বাচনের প্রার্থীরা অর্থায়ন এবং আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করবে; জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দুদকের সহায়তায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী হলফনামায় প্রার্থীরা প্রদত্ত তথ্যের পর্যাপ্ততা ও যথার্থতা যাচাইপূর্বক প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; সব পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে ও পরবর্তী সময়ে প্রতি বছর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের আয় ও সম্পদ বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেবেন এবং নির্বাচন কমিশন উক্ত বিবরণীসমূহ কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে; এবং রাজনৈতিক দলগুলো দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে দলীয় পদ বা নির্বাচনে মনোনয়ন দেবেন না। [২৫টি দল একমত]

৫০। পরিষেবা খাতের কার্যক্রম ও তথ্য অটোমেশন করা: সেবা প্রদানকারী সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের- বিশেষত, থানা, রেজিস্ট্রি অফিস, রাজস্ব অফিস, পাসপোর্ট অফিস এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সব সেবা-পরিষেবা খাতের সেবা কার্যক্রম ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ (অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড) অটোমেশনের আওতায় আনা। [২৯ টি দল একমত]

সাক্ষাৎকারকালে কমিটি প্রার্থীর যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার পাশাপাশি দুদক কমিশনার হিসেবে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পর্যালোচনা করবে; সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রয়োজনে কমিটি দুইজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞকে সাক্ষাৎকার গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে; সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে কমিটি প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করবে; জনসম্মুখে নাম প্রকাশের ন্যূনতম সাত দিন পরে কমিটি প্রতি শূন্য পদের বিপরীতে দুজন প্রার্থীর নাম গোপনীয়তার সহিত রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। [২৭টি দল একমত]

৫৯। বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি দুদকের কার্যক্রম পর্যালোচনার পদ্ধতি: দুদক আইন ২০০৪ এর ৭(১) থেকে ৭(৫) ধারা সংশোধন করে প্রস্তাবিত ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ দুদকের কার্যক্রম পর্যালোচনার উদ্দেশে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করবে—

প্রতি ছয় মাস অন্তর দুদক তার কার্যক্রমের প্রতিবেদন তৈরি করে প্রস্তাবিত বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটির নিকট পেশ করা; উক্ত প্রতিবেদনের ছক (format) কমিটি নির্ধারিত হবে। তবে, প্রতিবেদনে আবশ্যিকভাবে যে সব বিষয় থাকতে হবে, সেগুলো হল— (১) প্রাপ্ত অভিযোগের সংখ্যা এবং যাচাই বাছাই শেষে তদন্তে প্রেরিত অভিযোগের সংখ্যা।

(২) কী কারণে কতগুলো অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে বা হয়নি, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

(৩) দুর্নীতির ধরণ ও মাত্রা অনুযায়ী তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে চলমান বিভিন্ন মামলার সংখ্যা।

(৪) চলমান গোপন অনুসন্ধানের সংখ্যা ও ধরণ।

(৫) পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত গুরুতর ও বৃহৎ আকারের দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে দুদকের কার্যক্রমের বিবরণ।

(৬) অর্থ পাচার-সংক্রান্ত অপরাধের তদন্ত ও বিচারের অগ্রগতি বিষয়ক প্রতিবেদন।

(৭) রাষ্ট্রীয় ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহিত সহযোগিতার ব্যাপারে অবহিতকরণ।

(৮) দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমের ব্যাপারে প্রতিবেদন।

(৯) দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন বিষয়ে অগ্রগতি।

(১০) দুদকের দুর্নীতি প্রতিরোধী কার্যক্রমের বিবরণ।

কমিটি দুদক কর্তৃক উপস্থাপিত প্রতিবেদনের ওপর উন্মুক্ত শুনানির ব্যবস্থা করবে; কমিটি যথাসম্ভব উক্ত শুনানি কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের ও বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেবে; উক্ত শুনানি শেষে কমিটি তার লিখিত পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করবে; কমিটিকে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, উক্ত শুনানির কারণে কোনও অবস্থাতেই যেন চলমান তদন্ত বা অনুসন্ধানের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত না হয় এবং কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলা সম্পর্কে আলোচনার সূত্রপাত না হয়; কমিটি উন্মুক্ত শুনানিতে অনুসরণীয় Standard operating procedure (SOP) প্রণয়ন করবে এবং এর যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করবে। [৩১টি দল একমত]

৬০। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক বিলুপ্ত করা: দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক অনুযায়ী জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা। [২৭টি দল একমত]

৬১। আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩০৯-এর সংশোধন: আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩০৯ সংশোধনপূর্বক এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, দুদক কর্তৃক চাহিত কোনও তথ্যাদি বা দলিলাদির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না। [২৭টি দল একমত]

৬২) Open Government Partnership-এর পক্ষভুক্ত হওয়া: উন্মুক্ত সরকারের ধারণা সংক্রান্ত Open Government Partnership (OGP)-এ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে পক্ষভুক্ত হওয়া। OGP-তে পক্ষভুক্ত হলে স্বচ্ছ, অংশীদারত্বমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের আন্তর্জাতিক উত্তমচর্চা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হবে। [২৩টি দল একমত]

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

ট্যাগ :

মায়ানমার: শান্তি ও গণতন্ত্রের নামে দাবার খেলায় রেফারি কে?

This will close in 6 seconds

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন: প্রথম ধাপে ৬২ প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

আপডেট সময় : ০১:২৯:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদের’ একটি খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে ৬২টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব প্রস্তাব দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কাঠামোকে সময়োপযোগী ও গণমুখী করার সম্ভাব্য রূপরেখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তা পাঠিয়েছে কমিশন।

এর আগে গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের ৪৫ অধিবেশনে ১৬৬ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ৬২টিতে অধিকাংশ দল ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। এ সংক্রান্ত প্রথম ধাপের আলোচনার পর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা একটি খসড়া। যা জুলাই সনদ হিসেবে থাকবে।

কমিশনের ৬২টি প্রস্তাবের অধিকাংশতেই ২৫ থেকে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আর অচিরেই প্রকাশ করা হবে দ্বিতীয় ধাপে একমত হওয়া বিষয়গুলো।

রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যে পৌঁছানো ৬২টি প্রস্তাব বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
ক। সংবিধান সংস্কার

১। আইনসভা গঠন: সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে, ‘বাংলাদেশে একটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা থাকবে, যার নিম্নকক্ষ (জাতীয় সংসদ) এবং উচ্চকক্ষ (সিনেট) নিয়ে গঠিত হবে।’ (গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলমান) [৩০টি দল একমত]

২। উচ্চকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, উচ্চকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নিম্নকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতার অনুরূপ হবে। [২৪টি দল একমত]

৩। জাতীয় সংসদে নারী আসনের বিধান: জাতীয় সংসদে নারী আসন বৃদ্ধি করে একশতে উন্নীত করার ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত। (আলোচনা চলমান) [১৯টি দল একমত]

৪। ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন: সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে, আইনসভার উভয় কক্ষে একজন করে ডেপুটি স্পিকার সরকার দলীয় সদস্য ব্যতীত অপর সব সদস্যদের মধ্য থেকে মনোনীত করা হবে। [২৯টি দল একমত]

৫। সংসদের কমিটি ও সদস্যদের অধিকার নির্ধারণের জন্য আইন প্রণয়ন: সংবিধানের ৭৮ (৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদের কমিটিগুলো ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার নির্ধারণ করা হবে। [২৪টি দল একমত]

৬। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ, গুরুতর অসদাচরণ বা সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করা যাবে। আইনসভার নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাবটি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে পাস করার পর তা উচ্চকক্ষে প্রেরণ, এবং উচ্চকক্ষে শুনানির মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’ [২৮টি দল একমত]

৭। ভাষা: প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ভাষা হবে ‘বাংলা’। সংবিধানে বাংলাদেশে নাগরিকদের মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহৃত সকল ভাষা এ দেশের প্রচলিত ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৮। বাংলাদেশের নাগরিকদের পরিচয়: বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬ (২) এ উল্লিখিত ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালি এবং নাগরিকেরা বাংলাদেশি বলিয়া পরিচিত হইবেন’ বিধানটি নিম্নোক্তভাবে প্রতিস্থাপন করা হবে: ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলে পরিচিত হবেন।’ [৩১টি দল একমত]

৯। সংবিধান বিলুপ্তি ও স্থগিতকরণ ইত্যাদির অপরাধ: সংবিধান বিষয়ক অপরাধ ও সংবিধান সংশোধনের সীমাবদ্ধতা বিষয়ক বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক এবং ৭খ বিলুপ্ত করা হবে। [২৮টি দল একমত]

১০। সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও মর্যাদা: সংবিধানে যুক্ত করা হবে যে ‘বাংলাদেশ একটি বহু-জাতি, বহু-ধর্মী, বহু-ভাষী ও বহু-সংস্কৃতির দেশ যেখানে সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।’ [৩৩টি দল একমত]

১১। মৌলিক অধিকারগুলোর তালিকা সম্প্রসারণ: সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক সংবিধানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলোর তালিকা সংশোধন ও নাগরিকদের অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। (বিস্তারিত দলগুলোর বিবেচনাধীন) [৩১টি দল একমত]

১২। আন্তর্জাতিক চুক্তি আইনসভায় অনুমোদন: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে ‘জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রভাবিত করে এমন আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের পরে আইনসভার উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে অনুমোদন (রেটিফাই) করা হবে।’ [২৩টি দল একমত]

১৩। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, নির্বাচন কমিশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। [২৮টি দল একমত]

১৪। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত সব কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কার্যকরী স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা। জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মসূচির অংশ না হলে, স্থানীয় পর্যায়ে সকল উন্নয়নমূলক কাজের উপর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ আর্থিক নিয়ন্ত্রণ এবং বাস্তবায়নের কর্তৃত্ব থাকবে। [২৭টি দল একমত]

১৫। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, যে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কাজে সরাসরি নিয়োজিত, তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের অধীনস্ত হবে। এবং যে সব সরকারি বিভাগ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এখতিয়ারভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত, তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনায় কাজ করবে। [২৭টি দল একমত]

১৬। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে। তবে প্রাক্কলিত তহবিল যদি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বাজেটের চেয়ে কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সেই বাজেট আইনসভার উচ্চকক্ষের স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। [২৪টি দল একমত]

১৭। জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, প্রতিটি জেলায় পারস্পরিক কার্যক্রমের সমন্বয়ের লক্ষে একটি জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা যা সেই জেলার মধ্যে সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সমন্বয় এবং যৌথ কার্য সম্পাদনকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। এর সদস্য হবেন—প্রতিটি উপজেলা থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও দুজন ভাইস চেয়ারম্যান; প্রতিটি পৌরসভা থেকে নির্বাচিত মেয়র ও দুইজন ডেপুটি মেয়র; প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। প্রতিটি সিটি করপোরেশনের নিজস্ব সমন্বয় কাউন্সিল থাকবে। [২৫টি দল একমত]

১৮। ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলি: সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫০(২) বিলুপ্ত করা এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম তফসিল সংবিধানে না রাখা। [২৩টি দল একমত]

খ। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য

১৯। তথ্য অধিকার আইনের আওতায় রাজনৈতিক দল: নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতাভুক্ত করা হবে। [২৪টি দল একমত]

গ। বিচার বিভাগ সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য

২০। আপিল বিভাগের বিচারক সংখ্যা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, আপিল বিভাগের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রধান বিচারপতির চাহিদা মোতাবেক সময়ে সময়ে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ করা যাবে। [৩০টি দল একমত]

২১। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (Judicial Appointments Commission-JAC) গঠন করা। [২৬টি দল একমত]

২২। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ কমিশন সংক্রান্ত বিধান: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগ কমিশন সংক্রান্ত বিধানকে সংবিধানে অর্ন্তভুক্ত করা। [২৯টি দল একমত]

২৩। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করা। [৩২টি দল একমত]

২৪। বিচারকদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি: সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তা পর্যালোচনা ও হালনাগাদকরণ ও প্রয়োগ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

২৫। সাবেক বিচারপতিদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি: সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল সাবেক বিচারপতিদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ করা এবং শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সতর্ক করা এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে ‘বিচারপতি’ পদবি ব্যবহার থেকে বারিত করা। [২৯টি দল একমত]

২৬। বিচারকদের চাকরির নিয়ন্ত্রণ: অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করার জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৬ ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সংশোধন করা। [৩১টি দল একমত]

২৭। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা: নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে পৃথকীকরণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এই সচিবালয় সংক্রান্ত সংযুক্ত তহবিল থেকে অর্থায়ন করা। এই সচিবালয়ের ওপর অধস্তন আদালতের প্রশাসনিক কার্যক্রম, বাজেট প্রণয়ন, অধস্তন আদালতের বিচারকের পদোন্নতি, বদলি ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হবে। [৩১ দল একমত]

২৮। স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা: সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে, সংবিধানের অধীনে সুপ্রিম কোর্ট ও জেলা ইউনিটের সমন্বয়ে একটি স্থায়ী সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা হবে। [২৯টি দল একমত]

২৯। স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠা: একটি স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন এবং তা কার্যকর করা। [৩০টি দল একমত]

৩০। বিচার বিভাগের জনবল বৃদ্ধি: বিচার বিভাগের সব স্তরে বিচারক ও সহায়ক জনবল বৃদ্ধি এবং বিশেষায়িত আদালত স্থাপন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩১। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাকে অধিদফতরে রূপান্তর: বিদ্যমান জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাকে অধিদফতরে রূপান্তর করার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৩২। বিচারক ও সহায়ক কর্মচারীদের সম্পত্তির বিবরণ: প্রতি তিন বছর পর পর সুপ্রিম কোর্ট এবং অধস্তন আদালতের বিচারক এবং সকল আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পত্তির বিবরণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে আনুষঙ্গিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিধান করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৩৩। আদালত ব্যবস্থাপনা সংস্কার ও ডিজিটাইজ করা: মামলার দীর্ঘসূত্রতা ও হয়রানি নিরসন, স্বচ্ছতা আনয়ন, মামলার খরচ হ্রাস ও বিচারপ্রাপ্তি সহজলভ্য করার জন্য বিভিন্ন বিধি প্রণয়ন, সংশোধন ও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশনা জারির মাধ্যমে আদালত ব্যবস্থাপনার সংস্কার ও ডিজিটাইজ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩৪। কতিপয় আইন রহিতকরণ ও সংশোধন: আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’ রহিত করা এবং মেডিয়েশনের বিধান সম্বলিত ‘আইনগত সহায়তা ও মধ্যস্থতা সেবা প্রদান অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করা এবং সালিশ আইন ২০০১ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন সংশোধন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। [৩১টি দল একমত]

৩৫। আইনজীবীদের আচরণবিধি: আইনজীবীদের আচরণবিধি যুগোপযোগীকরণ করা; জেলা পর্যায়ে বার কাউন্সিল ট্রাইবুনাল স্থাপন এবং তার প্রধান হিসেবে একজন বিচারককে দায়িত্ব প্রদান করা হবে। অপরদিকে আদালত প্রাঙ্গণে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হবে। [২৬টি দল একমত]

৩৬। আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে দলীয় রাজনীতির প্রভাব বিলোপ: আইনজীবী সমিতি নির্বাচন এবং বার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবং নির্বাচন পরিচালনায় দলীয় রাজনীতির প্রভাব বিলোপের জন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট (সহযোগী সংগঠন, অঙ্গসংগঠন, ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ইত্যাদি) আইনজীবীদের যে কোনও সংগঠনকে স্বীকৃতি না দেওয়ার বিধান করা হবে। [২৫টি দল একমত]

৩৭। বিচারকদের রাজনৈতিক আনুগত্য: বিচারকদের রাজনৈতিক আনুগত্য প্রদর্শন বা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশকে অসদাচরণ হিসেবে বিবেচনা করে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান করা হবে। [৩২টি দল একমত]

ঘ। জনপ্রশাসন সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য

৩৮। গণহত্যা ও ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন: জুলাই অভ্যুত্থানকে গণহত্যা, নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত ও ভোট জালিয়াতি, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৩৯। স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন: জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষে একটি স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হবে। [২৯টি দল একমত]

৪০। তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর সংশোধন: নাগরিকরা যাতে সহজে ও অবাধে সরকারি সেবা সংক্রান্ত তথ্য পেতে পারে সেজন্য তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (Right to Information Act, 2009) পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৪১। Official Secrets Act, 1923-এর সংশোধন: নাগরিকদের তথ্য ও পরিষেবায় অভিগম্যতা সহজ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে The Official Secrets Act, 1923 পর্যালোচনা করে সংশোধন করা হবে। [২৭টি দল একমত]

৪২। কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন: ভৌগোলিক অবস্থান ও যাতায়াতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন করা হবে। [২৮টি দল একমত]

৪৩। স্বতন্ত্র ভূমি আদালত স্থাপন: বর্তমানে ভূমি সংক্রান্ত মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে অনেক সময় ব্যয় হয় বিধায় নাগরিকদের ভোগান্তি দূর করার জন্য প্রতি বিভাগে একটি করে স্বতন্ত্র ভূমি আদালত স্থাপন করা হবে। [২৫টি দল একমত]

ঙ। দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারে ঐকমত্য

৪৪। সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে সংবিধান সংশোধন: বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(২) নিম্নরূপে প্রতিস্থাপন করা হবে: ‘রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টি করবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোনও ব্যক্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবেন না ও অনুপার্জিত আয় ভোগ করতে সমর্থ হবেন না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কায়িক, সব প্রকার শ্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতর অভিব্যক্তিতে পরিণত হবে।’ [৩০টি দল একমত]

৪৫) দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন: রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের পরিবর্তে একটি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবিরোধী দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্দিষ্ট করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৭-এর অধীনে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী ন্যায়পাল পদ সৃষ্টি করে ন্যায়পালকে দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্রের যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতায়িত করা হবে। [৩০টি দল একমত]

৪৬। বৈধ উৎসবিহীন আয়কে বৈধতা দানের চর্চা বন্ধ করা: বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(২)-এর সামঞ্জস্য রেখে বৈধ উৎসবিহীন আয়কে বৈধতা দানের যেকোনও রাষ্ট্রীয় চর্চা চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা হবে। [৩২টি দল একমত]

৪৭। রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে সুবিধাভোগী মালিকানা (beneficial ownership) সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন: রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে। [৩১টি দল একমত]

৪৮। উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে আইন প্রণয়ন: প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত বা চূড়ান্ত মালিকানার তথ্য গোপন করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারসহ বিবিধ দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কোম্পানি, ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশনের প্রকৃত বা চূড়ান্ত সুবিধাভোগীর পরিচয়-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি রেজিস্টারভুক্ত করে জনস্বার্থে প্রকাশ নিশ্চিত করা। [২৯টি দল একমত]

৪৯। নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিত করা: নির্বাচনী আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করা।

রাজনৈতিক দলগুলো ও নির্বাচনের প্রার্থীরা অর্থায়ন এবং আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করবে; জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দুদকের সহায়তায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী হলফনামায় প্রার্থীরা প্রদত্ত তথ্যের পর্যাপ্ততা ও যথার্থতা যাচাইপূর্বক প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; সব পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে ও পরবর্তী সময়ে প্রতি বছর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের আয় ও সম্পদ বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেবেন এবং নির্বাচন কমিশন উক্ত বিবরণীসমূহ কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে; এবং রাজনৈতিক দলগুলো দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে দলীয় পদ বা নির্বাচনে মনোনয়ন দেবেন না। [২৫টি দল একমত]

৫০। পরিষেবা খাতের কার্যক্রম ও তথ্য অটোমেশন করা: সেবা প্রদানকারী সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের- বিশেষত, থানা, রেজিস্ট্রি অফিস, রাজস্ব অফিস, পাসপোর্ট অফিস এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সব সেবা-পরিষেবা খাতের সেবা কার্যক্রম ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ (অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড) অটোমেশনের আওতায় আনা। [২৯ টি দল একমত]

সাক্ষাৎকারকালে কমিটি প্রার্থীর যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার পাশাপাশি দুদক কমিশনার হিসেবে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পর্যালোচনা করবে; সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রয়োজনে কমিটি দুইজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞকে সাক্ষাৎকার গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে; সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে কমিটি প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করবে; জনসম্মুখে নাম প্রকাশের ন্যূনতম সাত দিন পরে কমিটি প্রতি শূন্য পদের বিপরীতে দুজন প্রার্থীর নাম গোপনীয়তার সহিত রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। [২৭টি দল একমত]

৫৯। বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি দুদকের কার্যক্রম পর্যালোচনার পদ্ধতি: দুদক আইন ২০০৪ এর ৭(১) থেকে ৭(৫) ধারা সংশোধন করে প্রস্তাবিত ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ দুদকের কার্যক্রম পর্যালোচনার উদ্দেশে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করবে—

প্রতি ছয় মাস অন্তর দুদক তার কার্যক্রমের প্রতিবেদন তৈরি করে প্রস্তাবিত বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটির নিকট পেশ করা; উক্ত প্রতিবেদনের ছক (format) কমিটি নির্ধারিত হবে। তবে, প্রতিবেদনে আবশ্যিকভাবে যে সব বিষয় থাকতে হবে, সেগুলো হল— (১) প্রাপ্ত অভিযোগের সংখ্যা এবং যাচাই বাছাই শেষে তদন্তে প্রেরিত অভিযোগের সংখ্যা।

(২) কী কারণে কতগুলো অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে বা হয়নি, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

(৩) দুর্নীতির ধরণ ও মাত্রা অনুযায়ী তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমে চলমান বিভিন্ন মামলার সংখ্যা।

(৪) চলমান গোপন অনুসন্ধানের সংখ্যা ও ধরণ।

(৫) পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত গুরুতর ও বৃহৎ আকারের দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে দুদকের কার্যক্রমের বিবরণ।

(৬) অর্থ পাচার-সংক্রান্ত অপরাধের তদন্ত ও বিচারের অগ্রগতি বিষয়ক প্রতিবেদন।

(৭) রাষ্ট্রীয় ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহিত সহযোগিতার ব্যাপারে অবহিতকরণ।

(৮) দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমের ব্যাপারে প্রতিবেদন।

(৯) দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন বিষয়ে অগ্রগতি।

(১০) দুদকের দুর্নীতি প্রতিরোধী কার্যক্রমের বিবরণ।

কমিটি দুদক কর্তৃক উপস্থাপিত প্রতিবেদনের ওপর উন্মুক্ত শুনানির ব্যবস্থা করবে; কমিটি যথাসম্ভব উক্ত শুনানি কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের ও বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেবে; উক্ত শুনানি শেষে কমিটি তার লিখিত পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করবে; কমিটিকে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, উক্ত শুনানির কারণে কোনও অবস্থাতেই যেন চলমান তদন্ত বা অনুসন্ধানের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত না হয় এবং কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলা সম্পর্কে আলোচনার সূত্রপাত না হয়; কমিটি উন্মুক্ত শুনানিতে অনুসরণীয় Standard operating procedure (SOP) প্রণয়ন করবে এবং এর যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করবে। [৩১টি দল একমত]

৬০। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক বিলুপ্ত করা: দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক অনুযায়ী জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা। [২৭টি দল একমত]

৬১। আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩০৯-এর সংশোধন: আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩০৯ সংশোধনপূর্বক এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, দুদক কর্তৃক চাহিত কোনও তথ্যাদি বা দলিলাদির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না। [২৭টি দল একমত]

৬২) Open Government Partnership-এর পক্ষভুক্ত হওয়া: উন্মুক্ত সরকারের ধারণা সংক্রান্ত Open Government Partnership (OGP)-এ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে পক্ষভুক্ত হওয়া। OGP-তে পক্ষভুক্ত হলে স্বচ্ছ, অংশীদারত্বমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের আন্তর্জাতিক উত্তমচর্চা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হবে। [২৩টি দল একমত]

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন