ঢাকা ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাত্ররাজনীতিতে পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ইনানীতে আত্মপ্রকাশ করলো শফির বিল জেলে কল্যাণ সমিতি
ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ

চাকরি বেশি করেন উখিয়ার মেয়েরা

  • আফজারা রিয়া
  • আপডেট সময় : ০৭:৫২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • 814

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণের হার অন্যান্য উপজেলাগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এমন চিত্র উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এনজিও কার্যক্রম, উখিয়ার নারীদের জন্য খুলে দিয়েছে চাকরির নতুন দরজা। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অন্যদিকে বদলে যাচ্ছে পরিবার ও সমাজে নারীর ভূমিকার ধারণা।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের আওতায় একটি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর কোয়ালিটেটিভ রিসার্চ’ সাম্প্রতিক একটি জরিপ চালিয়েছে কক্সবাজারের সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়। জরিপের পরিসংখ্যানে জেলার বিভিন্ন এলাকার নারীদের অবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রচলিত প্রথা ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। জেলায় বর্তমানে ৭৫% নারী আত্মপরিচয় তৈরি করতে পেরেছে। তারা বিভিন্ন চাকরি ও কাজের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে উখিয়া উপজেলার নারীরা। এই উপজেলায় ৪২.৩% নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। অপরদিকে, সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে কক্সবাজার সদর, যেখানে এই হার মাত্র ৯.৯%।

কিন্তু নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে প্রতিবেদনে। গৃহস্থালি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে এগিয়ে কক্সবাজার সদরের নারীরা। এখানে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণের হার ৮১%। বিপরীতে, কর্মজীবনে এগিয়ে থাকলেও উখিয়ার নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছিয়ে, যার হার মাত্র ৫০%।

অন্যদিকে লিঙ্গ সমতা বিষয়ে সচেতনতা এখনও অনেক কম। কেবল ৮% নারী ও পুরুষ লিঙ্গ সমতাকে সমর্থন করে। শিশু সুরক্ষার বিষয়ে জেলায় মোট সচেতনতা মাত্র ২৯.৭%, যেখানে পুরুষরা সবচেয়ে বেশি জানে, আর সবচেয়ে কম জানেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের এই পরিসংখ্যানগুলো কক্সবাজারের নারী উন্নয়ন ও সামাজিক বাস্তবতা উপলব্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উখিয়ার নারীদের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে নারী অধিকার কর্মী ও আইনজীবী প্রতিভা দাশ বলেন, কক্সবাজারের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা উখিয়ায় ঘটে যাচ্ছে নীরব এক সামাজিক বিপ্লব। এই অঞ্চলের নারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে চাকরিতে যুক্ত হচ্ছেন, যা দেশের অন্যান্য অনগ্রসর এলাকার তুলনায় এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।

প্রতিভা দাশ বলেন, “এক সময় যারা চার দেয়ালের বাইরে পা রাখতেন না, আজ তারাই সংসারের ভরসা হয়ে উঠছেন- আত্মবিশ্বাসী মুখগুলো যেন বলছে, “আমরাও পারি।”

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে?

This will close in 6 seconds

ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরিপ

চাকরি বেশি করেন উখিয়ার মেয়েরা

আপডেট সময় : ০৭:৫২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণের হার অন্যান্য উপজেলাগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এমন চিত্র উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এনজিও কার্যক্রম, উখিয়ার নারীদের জন্য খুলে দিয়েছে চাকরির নতুন দরজা। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অন্যদিকে বদলে যাচ্ছে পরিবার ও সমাজে নারীর ভূমিকার ধারণা।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের আওতায় একটি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর কোয়ালিটেটিভ রিসার্চ’ সাম্প্রতিক একটি জরিপ চালিয়েছে কক্সবাজারের সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়। জরিপের পরিসংখ্যানে জেলার বিভিন্ন এলাকার নারীদের অবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রচলিত প্রথা ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। জেলায় বর্তমানে ৭৫% নারী আত্মপরিচয় তৈরি করতে পেরেছে। তারা বিভিন্ন চাকরি ও কাজের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে উখিয়া উপজেলার নারীরা। এই উপজেলায় ৪২.৩% নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। অপরদিকে, সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে কক্সবাজার সদর, যেখানে এই হার মাত্র ৯.৯%।

কিন্তু নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে প্রতিবেদনে। গৃহস্থালি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে এগিয়ে কক্সবাজার সদরের নারীরা। এখানে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণের হার ৮১%। বিপরীতে, কর্মজীবনে এগিয়ে থাকলেও উখিয়ার নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছিয়ে, যার হার মাত্র ৫০%।

অন্যদিকে লিঙ্গ সমতা বিষয়ে সচেতনতা এখনও অনেক কম। কেবল ৮% নারী ও পুরুষ লিঙ্গ সমতাকে সমর্থন করে। শিশু সুরক্ষার বিষয়ে জেলায় মোট সচেতনতা মাত্র ২৯.৭%, যেখানে পুরুষরা সবচেয়ে বেশি জানে, আর সবচেয়ে কম জানেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের এই পরিসংখ্যানগুলো কক্সবাজারের নারী উন্নয়ন ও সামাজিক বাস্তবতা উপলব্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উখিয়ার নারীদের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে নারী অধিকার কর্মী ও আইনজীবী প্রতিভা দাশ বলেন, কক্সবাজারের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা উখিয়ায় ঘটে যাচ্ছে নীরব এক সামাজিক বিপ্লব। এই অঞ্চলের নারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি হারে চাকরিতে যুক্ত হচ্ছেন, যা দেশের অন্যান্য অনগ্রসর এলাকার তুলনায় এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।

প্রতিভা দাশ বলেন, “এক সময় যারা চার দেয়ালের বাইরে পা রাখতেন না, আজ তারাই সংসারের ভরসা হয়ে উঠছেন- আত্মবিশ্বাসী মুখগুলো যেন বলছে, “আমরাও পারি।”