কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বছর ব্যাপী নানান কর্মসূচি আয়োজন করে যাচ্ছে বিদ্যালয়টির প্রাক্তনীদের সংগঠন কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
বিভিন্ন জাতীয় দিবস ছাড়াও সামাজিক নানান কর্মসূচির অংশ হিসেবে এবারের রমজানে সংগঠনটি হাতে নিয়েছে মহাসমারোহে ইফতার আয়োজন। ‘ ‘কসউবিয়ান ইফতার’ শিরোনামের ওই কর্মসূচিতে থাকছে নানান আয়োজন। যার মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বার্তা দেয়া হবে ‘সলিডারিটি ফর প্যালেস্টাইন’।
২৯ মার্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিতব্য ওই আয়োজনে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষ থেকে সেদেশের নাগরিকদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের একুশে পদকপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী শহীদুল আলম সংহতি জানাতে আসবেন বলে জানান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহবায়ক শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
ইফতার ঘিরে এমন আয়োজনের উদ্দেশ্য কেনো জানতে চাইলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মুহিব্বুল মুক্তাদির তানিম বলেন, “এটি শুধু একটি ইফতার আয়োজন বা বন্ধুদের মিলনমেলা নয়; এটি আমাদের ঐতিহ্য, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতিফলন। এ বছর আমরা নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতীকী উদ্যোগ হিসেবে “সলিডারিটি ফর প্যালেস্টাইন” গ্রহণ করেছি। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে উপস্থিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বার্তা পৌঁছানো হবে যে বঙ্গোপসাগরের তীরের এই শহরও ভূমধ্যসাগরের তীরে বিপর্যস্ত গাজার মানুষের পাশে আছে।”
২০০১ ব্যাচের ছাত্র ইয়াসির আরাফাত বলেন, “আয়োজনের মধ্যে ‘বঙ্গোপসাগরের পথ বেয়ে ইসলাম: ১৫০ বছরের ঐতিহ্য, পরিবর্তন ও প্রগতির যাত্রা’ শীর্ষক আলোচনায় কক্সবাজারে ইসলামের স্থাপত্য ও বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হবে। এখানে ইসলামিক স্কলার ও ইতিহাসবিদরা অংশ নেবেন, যারা আমাদের ঐতিহ্য ও পরিবর্তনের ধারাকে নতুন ভাবে তুলে ধরবেন।”
২০০৭ ব্যাচের ছাত্র শাহজান চৌধুরী জানান, সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই এবার ১৫০ জন এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুর জন্য বিশেষ ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে।
তারা আশা করেন, মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে কসউবিয়ানদের (১৯৬২ ব্যাচ থেকে ২০২৪ ব্যাচ পর্যন্ত), সাবেক ও বর্তমান শিক্ষকবৃন্দসহ সবাই এই আয়োজনে একত্রিত হবেন, সংহতি ও মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
গেলো বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের অন্যান্য কর্মসূচি গুলো ছিলো- গ্রাফিতি উন্মোচন ও শীতবস্ত্র বিতরণ, সুন্দর হস্তাক্ষরে হাইস্কুল শিরোনামে ছয়টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়স বিশেষ প্রতিযোগিতা, যেখানে ১৫০ জনকে পুরস্কার দেয়া হয়, ২১ ফেব্রুয়ারিতে সার্ধশততে একুশের দ্রোহ শিরোনামে আয়োজন – যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে নিজ ভাষায় কবিতা পাঠ করেন। যা দেশব্যাপী বেশ সাড়া ফেলে।
এর আগে প্রাক্তনীদের এই পরিষদের মাধ্যমে বন্যাদুর্গতদের মাঝে সাড়ে নয় লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হয় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে। যা বিশেষ সাড়া ফেলে।