কক্সবাজারের রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাহাব উদ্দিনের (২৬) হত্যাকারীদের আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের হুশিয়ারি দিয়েছে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসী। কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাঈল নোমান ও ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন এই হত্যায় জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন বাজার চত্ত্বরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে এই হুশিয়ারি দেন তাঁরা। এসময় হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- রামু উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইদ্রিস সিকদার, সমাজসেবক আবুল ফজল, ছাত্রনেতা ইমাদ সিকদার, নিহত সাহাব উদ্দিনের চাচা নবী আলম, মামলার বাদি নিহত সাহাব উদ্দিনের বড় ভাই আনছার উল্লাহ।
ইদ্রিস সিকদার বলেন- সাহাব উদ্দিনকে যখন বেদম প্রহার করা হচ্ছিলো তখন কচ্ছপিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কর্ণপাত না করে উল্টো হত্যাকারীদের পক্ষে মদদ দিয়েছে। কারণ হত্যাকারীরা চেয়ারম্যানের আত্মীয় ও প্রতিবেশী।
সমাজসেবক আবুল ফজল ও নিহতের চাচা আবুল ফজল বলেন- সাহাব উদ্দিন হত্যাকান্ডটি মেনে নেওয়ার মত নয়। বারবার অনুরোধ করার পরও হত্যাকারীরা তাকে রেহায় দেয়নি। তারা হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন।
ছাত্রনেতা ইমাদ সিকদার বলেন- সাহাব উদ্দিনের হত্যাকারী কলিম উল্লাহ, আনছার উল্লাহ, রিমনসহ সকলের ফাঁসি হতে হবে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হলে এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
মামলার বাদি আনছার উল্লাহ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন- আমার ভাইকে আর ফিরে পাবো না। কিন্তু ভাই হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে মরতে চাই।
উল্লেখ্য: গত ৩০ নভেম্বর রাতে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের বালুবাসা গ্রামে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তরুণ সাহাব উদ্দিনকে (২৬) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২ ডিসেম্বর রাতে রামু থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই আনছার উল্লাহ। মামলায় কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মো: ইসমাঈল নোমান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জসিম উদ্দিন, কলিম উল্লাহ, আনছার, ওবাইদুল কাদের রিমনসহ ১৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২জনকে আসামি করা হয়েছে।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন- এ ঘটনায় ওই এলাকার মোস্তাক মিয়ার ছেলে আনছার উল্লাহকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অধিকতর যাচাই-বাছাই করে বাকি অপরাধীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহারে বাদি দাবি করেন- নিহত সাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে গরু ব্যবসা করে আসছিল। আসামিরা সকলেই তাঁর (সাহাব উদ্দিনের) শত্রু। ঘটনার দিন তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। খবর পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।