কক্সবাজার সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ ইভেন্টে এক ছাত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবয়ব নিয়ে অংশ নেন। সেখানে ওই ছাত্রী বেগম জিয়ার মিমিক্রি (নকল করে কথা বলা) করেন।
তবে মিমিক্রির বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলার সময় তার ধরন ‘নানান ইঙ্গিত পূর্ণ’ হওয়ার অভিযোগ তোলেন সেখানে উপস্থিত কলেজ শিক্ষার্থীরা। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ‘মিমিক্রি’টি ব্যঙ্গার্থক দাবী করে ওই ছাত্রীর অংশগ্রহণ বাতিল করতে বলেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আতাহার সাকিব টিটিএনকে জানান, এমন অভিযোগ উঠার সাথে সাথেই তাৎক্ষণিক ওই ছাত্রীকে প্রতিযোগী তালিকা থেকে বাতিল করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সাকিব বলেন, ‘তবে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি উঠায় পরবর্তীতে কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন সে এটি নিছক একটি অভিনয় ছিলো বলেই দাবী করেন এবং বেগম জিয়ার বিভিন্ন বক্তব্যের ইউটিউব লিংক দেখান। যেখান থেকে সে স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন।’
তারপরও অভিনয়টি সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে না পারায় সে ওই মুহুর্তে সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন বলে জানান সাকিব।
কলেজ ছাত্রদলের সদস্য মিনহাজ উদ্দিন টিটিএনকে বলেন,” সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রীকে নিয়ে অভিনয়টি ব্যঙ্গার্থক ছিলো। বিষয়টি আপত্তিকর হওয়ায় আমি ওই ছাত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলি। কিন্তু কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো হয়।”
মিনহাজ আরো বলেন, “আমরা বিষয়টির পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানালেও কলেজ অধ্যক্ষ বিষয়টিতে কর্নপাত না করেই সমাধান করেছেন। তাই আমরা কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবী করছি।”
বিষয়টি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা এর নিন্দা জানান এবং নানান প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমানের পদত্যাগ দাবী করা হয়।
এসময় ছাত্রদল নেতা শাহদাত হোসেন রিপন বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ একটি নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই বেগম জিয়াকে নিয়ে এমন কর্মকাণ্ড করার অনুমতি দিয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবী করছি৷
এরপর সন্ধ্যায় কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়- “ওই প্রতিযোগীকে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রতিযোগিতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষের কক্ষে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। এ ব্যাপারে কোনো পক্ষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করা হলো।”
এদিকে এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে বিতর্কিত মন্তব্য করে অপসারণ দাবী করেন।
ওই ছাত্রী কলেজের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তবে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।