কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মধ্যম গজালিয়া রাজঘাট এলাকায় বালি উত্তলনের গর্তের পানিতে ডুবে ৪ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশুর নাম মোনতাহা, সে ওই এলাকার মোহাম্মদ সাগরের একমাত্র মেয়ে।
জানা যায়, বোধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো বাড়ি থেকে খেলতে বের হয় মুনতাহা। তবে ঘন্টা পার হলেও বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ্ নিয়ে মেয়েকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বের হন মুনতাহার মা। পরে একই এলাকার হোছন মাঝি’র বালি উত্তলনের গর্তের পানিতে মেয়েকে ভেসে থাকতে দেখে চিল্লাতে থাকেন ”মা”।
নিহত মুনতাহার পিতা মোহাম্মদ সাগর জানান, হোছন মাঝির বালি উত্তলনের সৃষ্ট গর্ত থেকে স্থানীয়রা মেয়েকে উদ্ধার করে ঈদগাহ্ মডেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বাচ্চাটিকে মৃত ঘোষণা করেন। সর্বশেষ এ ঘটনায় অভিযুক্ত হাছন মাঝির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান সাগর।
স্থানীয় ছাত্রনেতা সাদ্দাম জানান, বিগত ৩ বছর থেকে হোছন মাঝি তার বাড়ির পাশেই প্রশাসনিক কোনো নিয়মনীতি তোয়াক্ষা না করে এবং ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাথে লিয়াজু করে সরকারি সংরক্ষিত জায়গা থেকে কোনো প্রকার ঘেরাবেড়া ছাড়া বালি উত্তোলন করে আসছে এবং এর আগেও দুএকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে হোছন মাঝির এ বালির পয়েন্টে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা তাকে একাধিকবার বাঁধা দিলেও অদৃশ্য শক্তির বলে হোছন মাঝি কারো বাঁধা বিপত্তি না মেনে অদ্যাবধি পর্যন্ত পরিবেশ বিরোধী এ মহাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে।
তবে রাজঘাট বিটের বিট কর্মকর্তা শাহ্ আলম জানান, জায়গাটি ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের আওতাধীন নয় এবং বালি উত্তোলন সহ সমসাময়িক বিষয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সম্পর্কে তিনি অবগত নন।
স্থানীয় এইউপি সদস্য জুবায়েদ উল্লাহ্ জুয়েল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, আর ঘটনায় নিহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবেন তিনি”।
অভিযোগ উঠা হোছন মাঝি এ ঘটনার বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি, বরঞ্চ তিনি এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করলে তা খুশিতে পরিচালনা করে যাবেন বলে জানান তিনি।
ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মছিউর রহমান জানান, “ঘটনা সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন এবং ময়নাতদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে”।
হোছন মাঝির পয়েন্ট সহ্ গজালিয়ায় সে সমস্ত অবৈধ বালি উত্তলের পয়েন্ট রয়েছে সবগুলো বন্ধ করে দিয়ে এলাকার শিশুদের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।