ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মহেশখালী ও রামু থানার ওসি প্রত্যাহার ১৭ বছর পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন ঈদের ছুটিতে হোটেলে অতিরিক্ত রুম ভাড়া নিলেই ব্যবস্থা – জেলা প্রশাসন চকরিয়ায় একেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও একেএস ফার্মেসি উদ্বোধন জমি বিরোধ: চকরিয়ায় যুবক খুন নুসরাত ফারিয়ার জামিন মঞ্জুর উখিয়ায় ইয়াবাসহ স্কুল শিক্ষক গ্রেফতার – পরিবারের দাবী ‘ষ’ড়’যন্ত্র কক্সবাজার পলিটেকনিকে ছাত্রদল ও শিবিরের পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ: আহত ৮ কক্সবাজার সিটি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ প্রতিবেদন, নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ এনসিপি ‘সেকুলারিস্ট’ নয়, ‘ধর্মতান্ত্রিকও’ নয়: নাহিদ নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা: উপদেষ্টা ফারুকী ৯ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট দেশে ছিলেন না নুসরাত ফারিয়া আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারে জেলা পর্যায়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত জব্দ করা অর্থ-সম্পদ দিয়ে ফান্ড গঠন করবে সরকার: গভর্নর ঈদুল আজহায় মসলার কৃত্রিম সংকট তৈরি না করতে কঠোর নজরদারি- জেলা প্রশাসক

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন আজ

আজ ২৫শে বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে, কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ। তার অসামান্য সৃষ্টি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক এবং হাজারো গান- বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তুলেছে। তিনি শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন একাধারে সংগীতস্রষ্টা, দার্শনিক ও মানবতাবাদী চিন্তক।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদাসুন্দরী দেবীর ঘরে। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে তিনি নদীয়া, পাবনা, রাজশাহী ও ওড়িশার জমিদারি তদারকির দায়িত্ব নেন এবং কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটান। ১৯০১ সালে তিনি সপরিবারে চলে যান বীরভূমের বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে, যেখানে গড়ে তোলেন এক অনন্য শিক্ষানিকেতন।

তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও বহু গদ্য সংকলন। সাহিত্যের এই অমর পুরুষ, যিনি বাংলা ভাষাকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বসাহিত্যের উচ্চতায়, আজ তার জন্মদিনে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে স্মরণ করছেন অগণিত ভক্ত ও অনুরাগী।

এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, যেখানে কবি দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন জমিদারি তদারকির কাজে। পাশাপাশি, বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান- নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগেও নানা আয়োজনে দিনটি উদ্‌যাপন করা হবে। এসব স্থানে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ও দেশের সব জেলা শহরে বিশ্বকবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ও চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যজগৎ ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর- বর্ণ, মানসিকতা ও চেতনার অনন্য সংমিশ্রণে গঠিত। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো আজও জীবন্ত; নিঃসঙ্গতার প্রতিচ্ছবি ‘চারুলতা’, সামাজিক বাধা পেরিয়ে আত্মসচেতন হয়ে ওঠা ‘বিনোদিনী’, কিংবা স্বদেশপ্রেম ও জাতিসত্তার দ্বন্দ্বে জর্জরিত ‘গোরা’র মাঝে পাঠক এখনো খুঁজে ফেরে নিজের প্রতিচ্ছবি। বাংলার মাটিতে যেমন তিনি গৌরবের প্রতীক, তেমনি তার সাহিত্য দীপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্বমঞ্চেও। সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য ১৯১৩ সালে এই নবজাগরণের পথপ্রদর্শককে প্রদান করা হয় নোবেল পুরস্কার, যা আজও বাঙালির এক গর্বিত ঐতিহ্য। দিনটি উদযাপনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে নানা কর্মসূচি।

সূত্র : কালবেলা

ট্যাগ :

মহেশখালী ও রামু থানার ওসি প্রত্যাহার

This will close in 6 seconds

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন আজ

আপডেট সময় : ১২:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

আজ ২৫শে বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে, কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ। তার অসামান্য সৃষ্টি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক এবং হাজারো গান- বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তুলেছে। তিনি শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন একাধারে সংগীতস্রষ্টা, দার্শনিক ও মানবতাবাদী চিন্তক।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদাসুন্দরী দেবীর ঘরে। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে তিনি নদীয়া, পাবনা, রাজশাহী ও ওড়িশার জমিদারি তদারকির দায়িত্ব নেন এবং কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটান। ১৯০১ সালে তিনি সপরিবারে চলে যান বীরভূমের বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে, যেখানে গড়ে তোলেন এক অনন্য শিক্ষানিকেতন।

তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও বহু গদ্য সংকলন। সাহিত্যের এই অমর পুরুষ, যিনি বাংলা ভাষাকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বসাহিত্যের উচ্চতায়, আজ তার জন্মদিনে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে স্মরণ করছেন অগণিত ভক্ত ও অনুরাগী।

এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, যেখানে কবি দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন জমিদারি তদারকির কাজে। পাশাপাশি, বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান- নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগেও নানা আয়োজনে দিনটি উদ্‌যাপন করা হবে। এসব স্থানে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ও দেশের সব জেলা শহরে বিশ্বকবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ও চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যজগৎ ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর- বর্ণ, মানসিকতা ও চেতনার অনন্য সংমিশ্রণে গঠিত। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো আজও জীবন্ত; নিঃসঙ্গতার প্রতিচ্ছবি ‘চারুলতা’, সামাজিক বাধা পেরিয়ে আত্মসচেতন হয়ে ওঠা ‘বিনোদিনী’, কিংবা স্বদেশপ্রেম ও জাতিসত্তার দ্বন্দ্বে জর্জরিত ‘গোরা’র মাঝে পাঠক এখনো খুঁজে ফেরে নিজের প্রতিচ্ছবি। বাংলার মাটিতে যেমন তিনি গৌরবের প্রতীক, তেমনি তার সাহিত্য দীপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্বমঞ্চেও। সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য ১৯১৩ সালে এই নবজাগরণের পথপ্রদর্শককে প্রদান করা হয় নোবেল পুরস্কার, যা আজও বাঙালির এক গর্বিত ঐতিহ্য। দিনটি উদযাপনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে নানা কর্মসূচি।

সূত্র : কালবেলা