পাকিস্তানে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে পড়ে আতঙ্কিত সময় কাটিয়ে অবশেষে দুবাইয়ে পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বাংলাদেশি লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। শনিবার (১০ মে) দুবাই বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিশাদ বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, একটা সংকট কাটিয়ে আমরা দুবাইতে পৌঁছেছি। এখন ভালো লাগছে।”
গত ৯ মে ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে বিসিসিআই। এরপরই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ঘোষণা দেয়, পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বিদেশি খেলোয়াড়দের নিরাপদে দুবাই পৌঁছে দেওয়া হয়, সেখান থেকে যার যার গন্তব্যে পাঠানো হচ্ছে।
রিশাদ জানান, “আমরা যখন দুবাইয়ে পৌঁছালাম, তখন শুনলাম আমাদের উড়ানের মাত্র ২০ মিনিট পরেই বিমানবন্দরে মিসাইল হামলা হয়েছে। খবরটা ভয়াবহ আর বেদনাদায়ক ছিল। এখন অন্তত বেঁচে আছি এটা ভাবতেই ভালো লাগছে।”
পিএসএলে বাংলাদেশের হয়ে খেলছিলেন রিশাদ হোসেন (লাহোর কালান্দার্স) ও পেসার নাহিদ রানা (পেশোয়ার জালমি)। রিশাদ বলেন, “নাহিদ রানাকে দেখছিলাম পুরো সময় চুপচাপ ছিল। চাপেই ছিল বেচারা। আমি তাকে সাহস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বলেছি আল্লাহ ভরসা, কিছু হবে না। আলহামদুলিল্লাহ, নিরাপদে পৌঁছেছি।”
বিদেশি খেলোয়াড়দের কথাও তুলে ধরেন রিশাদ। “স্যাম বিলিংস, ড্যারিল মিচেল, কুশল পেরেরা, ডেভিড উইসে, টম কারান— সবাই ছিল আতঙ্কে। মিচেল আমাকে বলল, সে আর কখনও এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে যাবে না। ওদের ভয়টা একদম চোখে পড়েছে।”
টম কারানের একটি ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথাও শোনান রিশাদ। “টম কারান যখন এয়ারপোর্টে যায়, তখন শুনে বিমানবন্দর বন্ধ। তখন সে ছোট ছেলের মতো কেঁদে ফেলল। দু-তিনজন মিলে ওকে সামলাতে হয়েছে।”
পিএসএল-এর বাকি ম্যাচগুলো করাচিতে আয়োজনের কথা থাকলেও খেলোয়াড়দের উদ্বেগের কারণে সেই পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হয় পিসিবি। রিশাদ জানান, “পিসিবি চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভি আমাদের সঙ্গে বৈঠক ডাকেন পরিস্থিতি জানতে। আমরা সবাই বলি, দুবাই ছাড়া আর কোনো জায়গা নিরাপদ নয়। তিনি তখনও আমাদের কাছে আগের দিন দুই ড্রোন হামলার খবর গোপন রেখেছিলেন, যা পরে জানতে পারি।”
“শেষ পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত নিই ম্যাচগুলো দুবাইয়ে নেওয়ার। পিসিবি আমাদের নিরাপদে পৌঁছাতে অনেক সাহায্য করেছে। আল্লাহর রহমতে আমরা ঠিকঠাক পৌঁছেছি। পিসিবি ও চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই,” বলেন রিশাদ।
এই ঘটনার পর পাকিস্তান ক্রিকেট ও পিএসএলের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত সব বিদেশি ক্রিকেটার তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।