ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথমবার চট্টগ্রাম যাচ্ছেন ড. ইউনূস কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিসিইউ আবারও চালু পাকিস্তানকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি জুলাই-আগস্টে গণহত্যা নয়, হয়েছে ম্যাস কিলিং- চিফ প্রসিকিউটর পেকুয়ায় অস্ত্রসহ আ’লীগ নেতা গ্রেফতার রামুতে দুই আওয়ামীলীগ নেতা আটক ধানমন্ডিতে গ্রেপ্তার সংগীত শিল্পী ও সাবেক এমপি মমতাজ পেটে ‘ইয়াবা’ লুকিয়েও হলোনা রক্ষা! – বিজিবির অভিযানে তিন বোন গ্রেফতার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত বাংলাদেশি তিন জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি বৈশাখের উত্তাপে পুড়ছে জনজীবন “ঘূর্ণিঝড় আসলেও তা মাসের শেষে” আরাকান আর্মির গুলিতে দুই বাংলাদেশী জেলে আহত ছাত্রদলের প্রতিরোধ – উখিয়ায় আওয়ামীলীগের ‘কার্যক্রম’ পন্ডের দাবী পুলিশের ভয়ে পুকুরে ঝাঁপ: মায়ের কুলখানি বলেও এড়ানো গেলোনা গ্রেফতার আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

আমরা চীনের খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (২১ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবোর সঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় গভর্নরকে বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘এটা সবে শুরু। আমরা এত কাছাকাছি আছি, তবু এত দূরে। আসুন, আমরা এটি পরিবর্তন করি। আমরা আশা করি, আপনি শিগগিরই আবার আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন, আমরা ভালো প্রতিবেশী হতে চাই, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই।’

প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক টার্নিং পয়েন্ট। তিনি উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য চীনের প্রশংসা করেন এবং দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে উৎসাহমূলক বক্তব্যের জন্য রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’

গভর্নর ইউবো উষ্ণ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে আমার এই সফর। ইউনান দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের উন্মুক্ত কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও গভর্নর যুব বিনিময়, স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতা, শিক্ষা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।

গভর্নর ইউবো বৈঠকে জানান, প্রফেসর ইউনূসের প্রবর্তিত ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা ইতোমধ্যে ইউনানের একটি চীনা ব্যাংক গ্রহণ করেছে।

দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন সামাজিক লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, চীনের অনেক মানুষ এই পদ্ধতির মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে।

গভর্নর ইউবো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং ডিজিটাল ও ভাষা শিক্ষায় সহযোগিতা সম্প্রসারণের পাশাপাশি সামুদ্রিক খাদ্য, আম ও কৃষি পণ্যের মতো খাতে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।

ওয়াং ইউবো বলেন, ‘আমাদের উচিত, মানুষে-মানুষে সম্পর্কের দিকে নজর দেওয়া এবং আমাদের অঞ্চলগুলোকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসা।’

প্রধান উপদেষ্টা গভর্নরের পরামর্শকে সমর্থন করে বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা থেকে শুরু করে বাণিজ্য ও প্রশিক্ষণ– আপনি যা বলেছেন তার সবকিছুতেই আমরা একমত। আমরা এই বিষয়গুলো আগের চেয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং সত্যিকারের বন্ধু হতে চাই।’

বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিকে মূল ফোকাস হিসেবে তুলে ধরা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশি রোগীদের জন্য কুনমিংয়ে চারটি হাসপাতালের সুনির্দিষ্ট করাসহ চিকিৎসা পর্যটন চালুর ক্ষেত্রে চীনের সহায়তার জন্য প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এই সহযোগিতা আমাদের অংশীদারিত্বের একটি নতুন অধ্যায়।’

উভয় পক্ষই শিক্ষা বিনিময় বৃদ্ধির গুরুত্বের বিষয়েও একমত হয়েছে। বর্তমানে চীনে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং প্রফেসর ইউনূস এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের তরুণদের চীনে পড়াশোনা করতে এবং ভাষা শিখতে উৎসাহিত করবো।’

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সমৃদ্ধির নতুন সুযোগ উন্মোচনে চীনের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সভায় আরও ছিলেন সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

 

 

 

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

আমরা চীনের খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (২১ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবোর সঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় গভর্নরকে বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘এটা সবে শুরু। আমরা এত কাছাকাছি আছি, তবু এত দূরে। আসুন, আমরা এটি পরিবর্তন করি। আমরা আশা করি, আপনি শিগগিরই আবার আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন, আমরা ভালো প্রতিবেশী হতে চাই, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই।’

প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক টার্নিং পয়েন্ট। তিনি উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য চীনের প্রশংসা করেন এবং দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে উৎসাহমূলক বক্তব্যের জন্য রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’

গভর্নর ইউবো উষ্ণ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে আমার এই সফর। ইউনান দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের উন্মুক্ত কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও গভর্নর যুব বিনিময়, স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতা, শিক্ষা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।

গভর্নর ইউবো বৈঠকে জানান, প্রফেসর ইউনূসের প্রবর্তিত ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা ইতোমধ্যে ইউনানের একটি চীনা ব্যাংক গ্রহণ করেছে।

দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন সামাজিক লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, চীনের অনেক মানুষ এই পদ্ধতির মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে।

গভর্নর ইউবো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং ডিজিটাল ও ভাষা শিক্ষায় সহযোগিতা সম্প্রসারণের পাশাপাশি সামুদ্রিক খাদ্য, আম ও কৃষি পণ্যের মতো খাতে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।

ওয়াং ইউবো বলেন, ‘আমাদের উচিত, মানুষে-মানুষে সম্পর্কের দিকে নজর দেওয়া এবং আমাদের অঞ্চলগুলোকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসা।’

প্রধান উপদেষ্টা গভর্নরের পরামর্শকে সমর্থন করে বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা থেকে শুরু করে বাণিজ্য ও প্রশিক্ষণ– আপনি যা বলেছেন তার সবকিছুতেই আমরা একমত। আমরা এই বিষয়গুলো আগের চেয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং সত্যিকারের বন্ধু হতে চাই।’

বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিকে মূল ফোকাস হিসেবে তুলে ধরা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশি রোগীদের জন্য কুনমিংয়ে চারটি হাসপাতালের সুনির্দিষ্ট করাসহ চিকিৎসা পর্যটন চালুর ক্ষেত্রে চীনের সহায়তার জন্য প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এই সহযোগিতা আমাদের অংশীদারিত্বের একটি নতুন অধ্যায়।’

উভয় পক্ষই শিক্ষা বিনিময় বৃদ্ধির গুরুত্বের বিষয়েও একমত হয়েছে। বর্তমানে চীনে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং প্রফেসর ইউনূস এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের তরুণদের চীনে পড়াশোনা করতে এবং ভাষা শিখতে উৎসাহিত করবো।’

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সমৃদ্ধির নতুন সুযোগ উন্মোচনে চীনের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সভায় আরও ছিলেন সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন