ঢাকা ১২:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফে মানব পাচারে ‘জিরো টলারেন্স’ বলছে বিজিবি পালংখালী জামায়াতের কর্মী সমাবেশে জেলা আমীর আনোয়ারী-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দাঁড়ি পাল্লার বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ হোন টেকনাফে ১৪ মামলার পলাতক আসামী মুন্না র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার বিএফইউজে’র নির্বাহী পরিষদের সভায় সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার’র কমিটি অনুমোদন কক্সবাজার সৈকতে ‘লোক সমুদ্র’ ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ বাস্তবায়নে কক্সবাজারে ৫টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন নৌবাহিনীর নারী নেতৃত্বকে জাতির গৌরব বললেন লুৎফুর রহমান কাজল কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের সভায় বক্তারা: ‎কুতুবদিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটনের বিকল্প নেই ‎ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আস্থা গড়ার বদলে চাপ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ চৌফলদন্ডীর আমজাদ হত্যার আসামী ছৈয়দ নুর গ্রেফতার সমুদ্রবন্দর থেকে নামল সতর্ক সংকেত রোহিঙ্গা সংকটে জাতিসংঘের দ্বৈত ন্যারেটিভ: কেন এই দ্বন্দ্ব? উখিয়া হাসপাতালের ২ টন ময়লা অপসারণ করলো বিডি ক্লিন টিম মাতারবাড়িতে শ্রমিক দলের সভাপতি মামুনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন মধ্যরাতে ইডেন গার্ডেনের ‘ছাদ থেকে পড়ে’ যুবকের মৃত্যু!

রাখাইনে ‘সেইফ জোন’ চায় রোহিঙ্গারা, জাতিসংঘের কাছে আরটুপি’র প্রত্যাশা

বাংলাদেশে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় এবং এই সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ ও সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার এই দ্বিতীয় সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তাৎপর্য বহুল এই সফরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুক্রবার (১৪ মার্চ) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন।

২০১৭ সালের শেষে দিকে প্রায় ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, বর্তমানে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি ক্যাম্পে বাস করেছে।

৮ বছর অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি প্রত্যাবাসন, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন গত দুই বছর ধরে উত্তপ্ত জান্তা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির আভ্যন্তরীণ সংঘাতে।

এমনবস্থায় জাতিসংঘের মহাসচিবের সফর, নিজেদের দেশে ফিরতে মুখিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশা, ২০০৫ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অনুমোদিত “রেস্পন্সিবিলিটি টু প্রোটেক্ট” বা আরটুপি বাস্তবায়ন সম্ভব হলে রাখাইনে ফেরার পথ সুগম হবে।

গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘের প্রাক্তন বিশেষ উপদেষ্টা ফ্রান্সিস ডেং’র এর মতে ” আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং প্রতিশ্রুতিশীল উদ্ভাবন হলো আরটুপি।”

গণহত্যার ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন হিসেবে ‘আরটুপি’র বাস্তবায়ন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন রোহিঙ্গা এডভোকেসি এন্ড এওয়ারনেস এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও যুব অধিকারকর্মী মুজিব খান।

তিনি বলেন, ” আমরা রাখাইনে নিপীড়ন -নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আমি আশাবাদী জাতিসংঘ যদি আমাদের মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় আরটুপি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় তাহলে আমরা ফিরতে পারবো।”

জান্তার সাথে যুদ্ধ করতে থাকা আরকান আর্মির সাম্প্রতিক বিবৃতি বলছে, রাখাইনের প্রায় ১৪ টি শহর এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাখাইনের মংডু, বুথিডংয়েও যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে যার প্রভাব পড়েছে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর।

এমন পরিস্থিতিতে আরটুপির পাশাপাশি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য “সেইফ জোন” অর্থাৎ একটি নিরাপত্তা কাঠামো তৈরির বিকল্প নেই জানিয়ে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, “সেইফ জোন নিশ্চিত হলে আমরা এখনই দেশে ফিরতে প্রস্তুত আছি, আশা করছি জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিবেন।”

বুধবার (১২ মার্চ), প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে মনে করে সরকার ।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফে মানব পাচারে ‘জিরো টলারেন্স’ বলছে বিজিবি

This will close in 6 seconds

রাখাইনে ‘সেইফ জোন’ চায় রোহিঙ্গারা, জাতিসংঘের কাছে আরটুপি’র প্রত্যাশা

আপডেট সময় : ১২:০০:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় এবং এই সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ ও সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার এই দ্বিতীয় সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তাৎপর্য বহুল এই সফরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুক্রবার (১৪ মার্চ) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন।

২০১৭ সালের শেষে দিকে প্রায় ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, বর্তমানে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি ক্যাম্পে বাস করেছে।

৮ বছর অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি প্রত্যাবাসন, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন গত দুই বছর ধরে উত্তপ্ত জান্তা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির আভ্যন্তরীণ সংঘাতে।

এমনবস্থায় জাতিসংঘের মহাসচিবের সফর, নিজেদের দেশে ফিরতে মুখিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশা, ২০০৫ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অনুমোদিত “রেস্পন্সিবিলিটি টু প্রোটেক্ট” বা আরটুপি বাস্তবায়ন সম্ভব হলে রাখাইনে ফেরার পথ সুগম হবে।

গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতিসংঘের প্রাক্তন বিশেষ উপদেষ্টা ফ্রান্সিস ডেং’র এর মতে ” আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং প্রতিশ্রুতিশীল উদ্ভাবন হলো আরটুপি।”

গণহত্যার ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন হিসেবে ‘আরটুপি’র বাস্তবায়ন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন রোহিঙ্গা এডভোকেসি এন্ড এওয়ারনেস এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও যুব অধিকারকর্মী মুজিব খান।

তিনি বলেন, ” আমরা রাখাইনে নিপীড়ন -নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আমি আশাবাদী জাতিসংঘ যদি আমাদের মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় আরটুপি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় তাহলে আমরা ফিরতে পারবো।”

জান্তার সাথে যুদ্ধ করতে থাকা আরকান আর্মির সাম্প্রতিক বিবৃতি বলছে, রাখাইনের প্রায় ১৪ টি শহর এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাখাইনের মংডু, বুথিডংয়েও যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে যার প্রভাব পড়েছে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর।

এমন পরিস্থিতিতে আরটুপির পাশাপাশি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য “সেইফ জোন” অর্থাৎ একটি নিরাপত্তা কাঠামো তৈরির বিকল্প নেই জানিয়ে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, “সেইফ জোন নিশ্চিত হলে আমরা এখনই দেশে ফিরতে প্রস্তুত আছি, আশা করছি জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিবেন।”

বুধবার (১২ মার্চ), প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে মনে করে সরকার ।