আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার ও ভোট দেওয়ার সুযোগের দাবি জানিয়ে আসছেন। আসন্ন নির্বাচনে তাদের সেই প্রত্যাশার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পূরণ হতে যাচ্ছে। এই প্রথমবারের মতো বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
তারেক রহমান বলেন, আমি আমাদের দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের এই সুযোগ সৃষ্টির জন্য।
রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলের লা ভিটা ব্যাংকোয়েট হলে দলের প্রবাসী সদস্যদের প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য নিবন্ধনের অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তারেক রহমান বলেন, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার এই সুযোগকে আমি তাদের দেশের প্রতি অবদান ও অধিকারকে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে দেখি। যেহেতু এটি প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে, তাই প্রক্রিয়াটি কিছুটা জটিল মনে হতে পারে। তবে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমরা অবশ্যই এই ভোটদান প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার উদ্যোগ নেব।
নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, দেশে ও বিদেশে উভয় স্থানেই নারীরা আমাদের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। তবুও নারীদের নিরাপত্তা বিষয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের উদাসীনতা যেন আরও প্রকট হয়ে উঠছে… যেখানে নারী ও শিশুরা নিরাপদ নয়, সেই সমাজকে কোনোভাবেই সভ্য সমাজ বলা যায় না।
তিনি বলেন, আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাই- আপনারা যার যার অবস্থান থেকে আমাদের কন্যা, মা ও বোনদের সঙ্গে কথা বলুন, তাদের সমস্যা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রস্তাবনা তৈরি করুন এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বসহকারে ভাবুন।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি একটি বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হলেও, দলটি বিভিন্ন সময়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপি বিভিন্ন সময়ে দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। তবে দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী ও স্বাধীনতাপ্রেমী জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে বেশিরভাগ সময়ে ষড়যন্ত্রকারীরা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে- গণতন্ত্রপন্থী জনগণের কাছে বিএনপি একটি বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে এখন থেকেই অপপ্রচার ও নোংরা রাজনৈতিক কৌশলের আশ্রয় নেয়া শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, পরাজিত ও পলাতক স্বৈরাচার কেবল বিএনপির বিজয় ঠেকাতেই দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। গত ১৫ বছরে তারা দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে। উদ্বেগ ও বিস্ময়ের বিষয় হলো- এখনও ঘোষিত ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র না থাকলেও বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংগঠিত অপপ্রচার ও কূটচাল দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, পরাজিত ও পলাতক স্বৈরশাসকের আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচনে আগ্রহ হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে কিছু ক্ষেত্রে জনগণের কৌতূহল আবার বাড়ছে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা দলের পাশে ছিল। বিএনপি তাদের সঙ্গে থাকবে এবং কিছু আসন তাদের জন্য ছেড়ে দেবে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী রয়েছে। তবুও বাস্তবতার কারণে প্রত্যেককে মনোনয়ন দেয়া সম্ভব নয়। বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে- যেসব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধা ছিলেন, তাদের কিছু আসনে সমর্থন দেওয়া হবে। এই বাস্তবতার কারণে কিছু আসনে বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
তবে, সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, তা মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. আবদুল মঈন খান, ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন, সেলিমা রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সূত্র:ঢাকা পোস্ট
টিটিএন ডেস্ক: 




















