ঢাকা ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কি হতে পারে: নির্বাচন, না নতুন অন্তর্বর্তী সরকার? ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক ছাড়লো বাসটার্মিনাল এলাকার বাসিন্দারা টেকনাফ জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক: দলীয় লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন উখিয়ায় পুলিশের পৃথক অভিযানে মিলল ১০ হাজার ইয়াবা ওপার থেকে ছোড়া গুলি পায়ে বিঁধলো নারীর খুনিয়া পালংয়ে চলন্তগাড়িতে ফিল্মি কায়দায় ডা’কা’তি, মোবাইলও টাকা ছিনতাই চকরিয়ায় ফের ২ মোটরসাইকেল আরোহীর মৃ’ত্যু সেন্ট মার্টিন দখলকারীদের বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দিয়েছি: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উখিয়ায় ৮ খুদে হাফেজার কোরআন সবিনা খতম উপলক্ষে নানান আয়োজন বাবার সাথে মাছ ধরতে গিয়ে রেজুখালে স্কুল শিক্ষার্থী নিখোঁজ মহেশখালীর যুবদল নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ আরফাতের অকাল মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদের শোক রামু বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে কঠিন চীবর দান সম্পন্ন বসতি বে রিসোর্টের সাথে লুৎফর রহমান কাজলের সম্পৃক্ততা নেই – কর্তৃপক্ষ নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার রেস্তোরাঁ শিল্প বাঁচাতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কক্সবাজারের রেস্তোরাঁ মালিকদের…

মহেশখালীতে আরো একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা

  • টিটিএন ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ১০:৩১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 483

দেশে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে নতুন আরো একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জোর প্রস্তুতি নিয়েছে পেট্রোবাংলা। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। শেষ পর্যায়ে রয়েছে প্রাক-সমীক্ষার কাজ।

দেশে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে নতুন আরো একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জোর প্রস্তুতি নিয়েছে পেট্রোবাংলা। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। শেষ পর্যায়ে রয়েছে প্রাক-সমীক্ষার কাজ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসের শেষদিকে এর দরপত্র আহ্বান করা হবে।

দেশে বর্তমানে এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে দুটি, একটি পরিচালনা করছে সামিট গ্রুপ, অন্যটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। মহেশখালীতে অবস্থিত ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট (দৈনিক) সক্ষমতার দুটি টার্মিনালই ভাসমান। নতুন টার্মিনালটি হলে দেশে মোট ভাসমান এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা দাঁড়াবে ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ বঙ্গোপসাগরে যদিও ভাসমান টার্মিনালে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্নতা, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণ, এমনকি উচ্চ পরিচালন ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। তাদের ভাষ্য, দেশে গ্যাস সরবরাহে ভাসমান টার্মিনাল বাংলাদেশের জন্য এখন আর উপযোগী নয়। কারণ বিদ্যমান দুটি টার্মিনালে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, ঝুঁকি বাড়ছে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায়ও। সরকারের উচিত টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ল্যান্ডবেজ টার্মিনাল নির্মাণের দিকে অগ্রসর হওয়া।

ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল অবকাঠামো ল্যান্ডবেজ বা ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালের তুলনায় সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী। তবে বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে এ ধরনের অবকাঠামো ঝুঁকি ও গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছরই বিঘ্নতা তৈরি করছে। ফলে কোনো দুর্ঘটনার কারণে এলএনজি বন্ধ হয়ে গেলে তা পুরো সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি করে। এতে শিল্প, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে উৎপাদন ব্যাহত ও লোডশেডিংয়ের মতো ঘটনাও ঘটে।

দুর্যোগপ্রবণ দেশে গ্যাসের সংকট মোকাবেলায় ভাসমানের পাশাপাশি ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম। বুয়েটের এ সাবেক শিক্ষক মনে করেন, ‘যেভাবে প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে, তাতে ভাসমান টার্মিনালে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বাধা তৈরি করছে। এখন থেকে এ দুর্যোগ আরো বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তবে তার চেয়ে বড় কথা, দেশে স্থানীয় উত্তোলন ও অনুসন্ধানে কতটা টেকসই বিনিয়োগ করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।’

এদিকে পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য মহেশখালীর কুতুবজোমে প্রাক-সমীক্ষার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ টার্মিনালটির সক্ষমতা হবে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটের। ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণে সৌদি আরামকো, আজারবাইজানের সকার, চীনের সিএমসিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। আর এটি বিল্ড ওন অপারেট ভিত্তিতে (বুট) নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টার্মিনাল নির্মাণের শর্তে নতুন মডেলের এফএসআরইউ সংগ্রহ করা হবে। ২০১০ সালের আগের কোনো এফএসআরইউ নেয়া হবে না।

জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) মো. রফিকুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘প্রাক-সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলতি মাসেই টার্মিনাল নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হবে। গ্যাসের দ্রুত সরবরাহ ব্যবস্থা বাড়াতে ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণ প্রয়োজন।’

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে দৈনিক ৪ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। তবে চাহিদা ও সরবরাহে গ্যাসের ঘাটতি অন্তত দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এ ঘাটতি কমাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে টার্মিনাল নির্মাণ করে এলএনজি সরবরাহ বাড়াতে চায় সরকার।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দেশে বড় আকারে গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। সে কারণে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদনে যেতে পারছে না। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাহিদা ও সরবরাহে অন্তত ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে দ্রুত ও কম সময়ে সরবরাহ বাড়াতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

বিদেশী বিনিয়োগের বিষয়টি সামনে এনে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক পলিসির কারণে অনেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। এ বিনিয়োগ টানতে হলে দেশে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রয়োজন। আর সেটা করতে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবকাঠামো দরকার। যেখানে ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১৮ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে নির্মাণের আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে জ্বালানি বিভাগ চাইছে ১২-১৮ মাসের মধ্যে টার্মিনালটি উৎপাদনে আনতে। এখানে অর্থের চেয়ে সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো যাবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহটাও তত বাড়ানো যাবে।’

ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি উন্মুক্ত দরপত্র হবে কিনা জানতে চাইলে জ্বালানি সচিব বলেন, ‘এটা দুইভাবেই হতে পারে। উন্মুক্ত ও জিটুজি নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। জিটুজিতে যদি দাম কম পাওয়া যায় তাহলে সেটায় যাওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মহেশখালী ও পায়রায় আরো দুটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল। এর মধ্যে গত বছরের মার্চে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে সামিট গ্রুপের সঙ্গে বিশেষ আইনের অধীনে প্রাথমিক চুক্তিও করেছিল বিগত সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সে চুক্তিটি বাতিল করে দেয়। বর্তমানে এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এ কারণে চতুর্থ টার্মিনাল নির্মাণে কাজ করছে জ্বালানি বিভাগ।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এলএনজি দেশের জন্য একটি ব্যয়বহুল পণ্য। সেখানে ভাসমান কিংবা ল্যান্ডবেজ এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ মূলত আমদানি জোরদারের পরিকল্পনা। এগুলো আগের সরকারের নেয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার।

সুত্র: বণিক বার্তা

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

কি হতে পারে: নির্বাচন, না নতুন অন্তর্বর্তী সরকার?

This will close in 6 seconds

মহেশখালীতে আরো একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা

আপডেট সময় : ১০:৩১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে নতুন আরো একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জোর প্রস্তুতি নিয়েছে পেট্রোবাংলা। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। শেষ পর্যায়ে রয়েছে প্রাক-সমীক্ষার কাজ।

দেশে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে নতুন আরো একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জোর প্রস্তুতি নিয়েছে পেট্রোবাংলা। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। শেষ পর্যায়ে রয়েছে প্রাক-সমীক্ষার কাজ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসের শেষদিকে এর দরপত্র আহ্বান করা হবে।

দেশে বর্তমানে এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে দুটি, একটি পরিচালনা করছে সামিট গ্রুপ, অন্যটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। মহেশখালীতে অবস্থিত ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট (দৈনিক) সক্ষমতার দুটি টার্মিনালই ভাসমান। নতুন টার্মিনালটি হলে দেশে মোট ভাসমান এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা দাঁড়াবে ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ বঙ্গোপসাগরে যদিও ভাসমান টার্মিনালে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্নতা, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণ, এমনকি উচ্চ পরিচালন ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। তাদের ভাষ্য, দেশে গ্যাস সরবরাহে ভাসমান টার্মিনাল বাংলাদেশের জন্য এখন আর উপযোগী নয়। কারণ বিদ্যমান দুটি টার্মিনালে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, ঝুঁকি বাড়ছে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায়ও। সরকারের উচিত টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ল্যান্ডবেজ টার্মিনাল নির্মাণের দিকে অগ্রসর হওয়া।

ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল অবকাঠামো ল্যান্ডবেজ বা ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালের তুলনায় সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী। তবে বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে এ ধরনের অবকাঠামো ঝুঁকি ও গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছরই বিঘ্নতা তৈরি করছে। ফলে কোনো দুর্ঘটনার কারণে এলএনজি বন্ধ হয়ে গেলে তা পুরো সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি করে। এতে শিল্প, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে উৎপাদন ব্যাহত ও লোডশেডিংয়ের মতো ঘটনাও ঘটে।

দুর্যোগপ্রবণ দেশে গ্যাসের সংকট মোকাবেলায় ভাসমানের পাশাপাশি ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম। বুয়েটের এ সাবেক শিক্ষক মনে করেন, ‘যেভাবে প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে, তাতে ভাসমান টার্মিনালে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বাধা তৈরি করছে। এখন থেকে এ দুর্যোগ আরো বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তবে তার চেয়ে বড় কথা, দেশে স্থানীয় উত্তোলন ও অনুসন্ধানে কতটা টেকসই বিনিয়োগ করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।’

এদিকে পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য মহেশখালীর কুতুবজোমে প্রাক-সমীক্ষার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ টার্মিনালটির সক্ষমতা হবে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটের। ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণে সৌদি আরামকো, আজারবাইজানের সকার, চীনের সিএমসিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। আর এটি বিল্ড ওন অপারেট ভিত্তিতে (বুট) নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টার্মিনাল নির্মাণের শর্তে নতুন মডেলের এফএসআরইউ সংগ্রহ করা হবে। ২০১০ সালের আগের কোনো এফএসআরইউ নেয়া হবে না।

জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) মো. রফিকুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘প্রাক-সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলতি মাসেই টার্মিনাল নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হবে। গ্যাসের দ্রুত সরবরাহ ব্যবস্থা বাড়াতে ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণ প্রয়োজন।’

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে দৈনিক ৪ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। তবে চাহিদা ও সরবরাহে গ্যাসের ঘাটতি অন্তত দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এ ঘাটতি কমাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে টার্মিনাল নির্মাণ করে এলএনজি সরবরাহ বাড়াতে চায় সরকার।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দেশে বড় আকারে গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। সে কারণে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদনে যেতে পারছে না। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাহিদা ও সরবরাহে অন্তত ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে দ্রুত ও কম সময়ে সরবরাহ বাড়াতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

বিদেশী বিনিয়োগের বিষয়টি সামনে এনে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক পলিসির কারণে অনেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। এ বিনিয়োগ টানতে হলে দেশে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রয়োজন। আর সেটা করতে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবকাঠামো দরকার। যেখানে ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১৮ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে নির্মাণের আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে জ্বালানি বিভাগ চাইছে ১২-১৮ মাসের মধ্যে টার্মিনালটি উৎপাদনে আনতে। এখানে অর্থের চেয়ে সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো যাবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহটাও তত বাড়ানো যাবে।’

ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি উন্মুক্ত দরপত্র হবে কিনা জানতে চাইলে জ্বালানি সচিব বলেন, ‘এটা দুইভাবেই হতে পারে। উন্মুক্ত ও জিটুজি নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। জিটুজিতে যদি দাম কম পাওয়া যায় তাহলে সেটায় যাওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মহেশখালী ও পায়রায় আরো দুটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল। এর মধ্যে গত বছরের মার্চে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে সামিট গ্রুপের সঙ্গে বিশেষ আইনের অধীনে প্রাথমিক চুক্তিও করেছিল বিগত সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সে চুক্তিটি বাতিল করে দেয়। বর্তমানে এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এ কারণে চতুর্থ টার্মিনাল নির্মাণে কাজ করছে জ্বালানি বিভাগ।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এলএনজি দেশের জন্য একটি ব্যয়বহুল পণ্য। সেখানে ভাসমান কিংবা ল্যান্ডবেজ এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ মূলত আমদানি জোরদারের পরিকল্পনা। এগুলো আগের সরকারের নেয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার।

সুত্র: বণিক বার্তা