Sunday, April 28, 2024

সুশীল বনাম আমরা প্রান্তিকরা: তারা আসলে কি চায়?

সুশীল বনাম আমরা প্রান্তিকরা: তারা আসলে কি চায়?

ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের ‘আরেকটি একতরফা নির্বাচন ও সম্ভাব্য পরিণতি’ ওয়েবিনার। প্রথম আলোয় প্রকাশিত নিবন্ধন এর উপর সমালোচনা বক্তব্য।

“কোনো দেশের রাজনীতিতে এ ধরনের পরিস্থিতি চলতে থাকলে অন্যদের ওপর একধরনের নির্ভরতা বাড়ে বলে উল্লেখ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এর উদাহরণ হিসেবে তিনি চীনের ওপর কম্বোডিয়ার এবং রাশিয়ার ওপর বেলারুশের নির্ভরতার কথা উল্লেখ করেন”। বিদেশে অবস্থানরত এই ভদ্র সুশীলরা আমেরিকার উপর কারা নির্ভর করছে তা কখনো প্রকাশ করে না। তাতে ওনাদের অবস্থান হয়তো ওখানে অনিরাপদ হতে পারে।

আলী রীয়াজ আরো বলেন, “আপনাকে তখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে কোনো না কোনো দেশের কাছে জিম্মি হয়ে পড়তে হবে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের পরিণতি সেটাই হয়েছে। মাতারবাড়ীতে পোর্ট হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত সরকার নিতে পারেনি”।‌ তিনি এতো বেশি বৈশ্বিক জ্ঞান রাখেন কিন্তু দুঃখজনক যে মাতার বাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ শুরু হয়েছে এবং বন্দরের চ্যানেলের কাজ শেষ হয়েছে তিনি সেটাই জানেন না। এই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ সরকারই নিয়েছে।

আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সমালোচনা করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “চলমান হরতাল-অবরোধের মধ্যে ব্যবসায়ী শ্রেণি স্থিতিশীলতা চাচ্ছেন। তাঁরা আসলে নিজেদের লুটপাটের স্থিতিশীলতা চাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি”। ব্যাংক থেকে টাকা ঋণ করে, ব্যবসায়ীরা হরতাল পালন করে ঋণখেলাপি হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন কিনা তিনি? এভাবে জ্ঞান দান করা যায়, কিন্তু ব্যবসা করে মানুষকে চাকরি দেওয়া ও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা যায় না। আসুন না কিছু টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দেখুন!

সংকটের সমাধান প্রশ্নে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “সমাধান নয়াদিল্লি, বেইজিং, ব্রাসেলস বা ওয়াশিংটনে নয়। বাইরের চাপ সহযোগিতা করতে পারে, কিন্তু সমাধান ঢাকার রাজপথে”। রাজপথ দখলে এতো চিন্তা কেন? পৃথিবীর কোথাও রাজপথ দখলে করে সাধারণ মানুষের কি লাভ হয়েছে? তিনি বলেন “ঢাকার ক্ষমতায় যাঁরা আছেন, তাঁদের শুভবুদ্ধির উদয়ের ওপর; যা হবে না”। তিনি প্রস্তাবনাও দিচ্ছেন আবার উত্তর দিয়ে বলছেন হবে না। এই প্যারাডক্সিক্যাল বক্তব্য কখনো ভাল কিছু বয়ে আনতে পারে না।

“দেশের নির্বাচন কমিশন বেশির ভাগ সময় প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বলে মন্তব্য করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও এসআইপিজির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, এই কমিশন নিজেদের থেকে তফসিল দিয়েছে কি না, সে প্রশ্ন রয়েছে। যেভাবে আচরণবিধি ভাঙা হচ্ছে, সে বিষয়ে কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন ইসির অধীনে গেছে কি না, সেটা জানা যায়নি”। শাখাওয়াত হোসেন নিজেও নির্বাচন কমিশনার ছিলেন তিনিও কি এইগুলো করেছিলেন? ওনার বক্তব্যই বলে দিচ্ছে বর্তমান কমিশনাররা ওনার সাথে আলোচনা করেছিল, যে তফসিল আমি (কমিশনার) ঘোষণা করছি না, আমাকে দিয়ে ঘোষণা করা হচ্ছে। এভাবে কথা বলে বলে দেশের মানুষকে গনতন্ত্রের নামে আর কতদিন আপনারা এভাবে নাচাবেন?

“মুখোশ পরে লোকজনকে তুলে নিয়ে হত্যার কথা উল্লেখ করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটা ভয়াবহ পরিস্থিতি”। মুখোশ পরে কাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আপনার কাছে তথ্য থাকলে নাম প্রকাশ করুন। তিনি বলেন “এই অবস্থাতেও একতরফা নির্বাচন হলে এর নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি”এর আগেও নির্বাচন নিয়ে এভাবে কথা বলেছিলেন, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হাসিনার হাতেই ছিল ও আছে, কিন্তু আপনারাই তো এখন বসে বসে সুন্দর সুন্দর কথা বলতে পারতেছেন কই কারো কথার উপর তো সরকার ট্যাক্স বসায় নাই। কথা বলার সময় তো কাউকে নিয়ে যাওয়া হয় নাই। কেনই বা এভাবে আপনারা বিতর্ক উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন? “বর্তমান সংকটের সমাধানের কোনো উপায় দেখছেন না বলেও জানান ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন”। তাহলে এই বক্তব্য প্রদান করেও‌ লাভ কি?

“একতরফা নির্বাচন হলে দেশে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আরও বাড়বে বলে মনে করেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। ওয়েবিনারে তিনি বলেন, এই বৈষম্য ২০১৪ সাল থেকেই দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে”। ২০১৪ সালের আগে ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে কোন ধরনের ব্যবধান উনি লক্ষ্য করেন নাই? তখন আমরা উন্নত দেশ ছিলাম এখন আমরা অবনীতির দিকে যাচ্ছি তাই না? “নির্বাচন ঘিরে চলমান সংকট নিয়ে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, বিরোধী দলের নেতারা কারাগারে। তাঁদের ছেড়ে দিয়ে আলোচনা করে একটা অবস্থানে যেতে হবে। সংলাপের প্রসঙ্গ এলেও সরকারের উদ্যোগ নেই। এ ছাড়া সময়ও হাতে নেই। নির্বাচনের জন্য সংবিধানের দোহাই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সংবিধানে তো এ ধরনের নির্বাচনের কথা বলা হয়নি”। কারাগারে যাচ্ছে আইন বিরোধী কাজ করার কারনে, শেখ হাসিনা কোন কালো আইনের অধীনে কাউকে বন্দী করে রাখেন নাই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়, সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। শুধু, শুধু আইন ও আদালত কে বিব্রত করার চেষ্টা হচ্ছে?

“র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া বিরোধী দলের রাজনীতি করার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড়ের মানসিকতা দেখা গিয়েছিল। এতে একটা অবস্থা গড়ে উঠছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সেটা ভেঙে গেছে”। র‌্যাবের উপরে কেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে তা এখন পিটার হাসের কল্যানে একটা অবুঝ শিশুও‌ বুঝেছে। বিচার বহির্ভূত হত্যা কখনো ছিল না সুতরাং যে জিনিস ছিল না, তা আবার বন্ধ হয় কিভাবে?

“দেশ অনিবার্য একটা খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে মনে করেন আলী ইমাম মজুমদার”। অনিবার্য খারাপ পরিস্থিতির দিকে বিএনপি নিয়ে যাচ্ছে এখানে সরকার বা আওয়ামী লীগের কোন দায় নেই। “তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের পরে সরকারের দমনপীড়নের মধ্যেও অনেক মিছিল-মিটিং হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো অনুপস্থিত। যাঁরা জেলের বাইরে আছেন, তাঁদের সক্রিয়তাও দেখা যাচ্ছে না”। দেশের সাধারণ মানুষ পাশে না‌ থাকলে আপনারা এই গুলো দেখবেন না এটাই সত্য।

“সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনীতিতে দুটি বড় ব্র্যান্ড আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এর মধ্যে যদি কেউ না থাকে, তাহলে ছোট দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে বড় দলই জিতবে। কারণ, এগুলো যথার্থ বিকল্প নয়। এখানে কী ঘটবে, তা নির্ধারিত। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে সীমাহীন দলীয়করণ হয়েছে”। আওয়ামীলীগ ব্রান্ডে বিশ্বাসী না আওয়ামী লীগ জনগণের সেবায় এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটা সরকার এবং ঐতিহ্যবাহী একটা দল। এখানে কে আসবে কে আসবে না এটা আওয়ামী লীগের দেখার কোন দরকার নেই। জনগণের চাপ থাকলেই সবাই আসবে, আর চাপ না থাকলে বিভিন্ন দানাই পানাই করবে। আওয়ামীলীগ কখনো দলীয় করনে বিশ্বাসী নয়। দলীয় করন হলে একাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে হত্যা করা হতো না। ২১ আগস্ট বোমা হামলা হয়েছিল তত্কালীন দলীয় সরকারের দলীয় করনের কারনে। এখনো আওয়ামীলীগ এই রকম কাজ করার সুযোগ কাউকে দেয় নাই।

“২৮ অক্টোবরের পর নির্বাচনী মাঠ আরও অসমতল হয়েছে উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজটা কী? ক্ষমতাসীনদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা? ক্ষমতাশীনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করায় কি নির্বাচন কমিশনারের কাজ”? সেটা বর্তমানে নির্বাচন কমিশনার কে জিজ্ঞেস না করে আপনার পাশে বসা বিজ্ঞ সাখাওয়াত সাহেবকে জিজ্ঞেস করলে তো হয়। তিনিও তো ছিলেন নির্বাচন কমিশনার। তিনিও কি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছিলেন। “তিনি আরও বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সংবিধানকে অস্ত্রে পরিণত করে নির্বাচনী মাঠকে আরও অসমতল করা হয়েছে। ইসির রেফারি হিসেবে যে ভূমিকা পালন করার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না”। সংবিধান তার আদি অবস্থানে ফিরে গেছে। যেখানে ছুরি চালিয়ে ছিলেন স্বৈরাচার ও অ-গণতান্ত্রিক সরকার।

“উন্নয়ন ও অর্থনীতি গবেষক এবং জার্মান ফেডারেল শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প গবেষক জিয়া হাসান বলেন, দেশের ব্যাংক খাত, মুদ্রা খাতে অস্থিরতা চলছে। যাদের খুশি করার জন্য গত ১০ বছরে এই সংকট তৈরি করা হয়েছে, তারা আওয়ামী লীগের ভেতরেই আছে। তারা আবার ক্ষমতায় এলে সংকট থেকে মুক্তি সম্ভব নয়”। জিয়া সাহেব একটু বললেই তো হয়, উনি তো গবেষক কি করলে মুদ্রা খাতে বিরাজমান অস্থিরতা কমানো যায়? উনাদের মতে তো সারা পৃথিবীতে এখন মুদ্রাস্ফীতি বা মুদ্রা খাতে অস্থিরতা নেই। ওনি তো জার্মানের শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প গবেষক, আচ্ছা বলুনতো জার্মানের কি অবস্থা? আপনি কতটুকু ভালো আছেন সেখানে?

“গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে সিইসির বৈঠকের সমালোচনা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ৭ নভেম্বর তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। বিষয়টি নিয়ে ওয়েবিনারে আলোচকেরা সমালোচনা করেন”। কার সাথে করবে আপনাদের মতো সুশীলদের সাথে। যারা আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যে বসে বসে জ্ঞানদান করেন তাদের সাথে?

“নির্বাচন বিশ্লেষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আগে কখনো শুনিনি তিন গোয়েন্দা প্রধান উপযাচিত হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন”। নির্বাচন কমিশন ওপেন ফোরাম। সেখানে গোপন বৈঠক বলে কিছু হয় না। বৈঠক করলে পুরো কমিশনের সঙ্গে করতে হয়। ব্যক্তিগত বা একা এ ধরনের বৈঠক হয় না। আচ্ছা আপনিও কি করেছিলেন? অযতা ফোরামে এই গুলো বলার কারণ কি?

“এ বিষয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বাংলাদেশের তিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সিইসির সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা তাঁদের মতো করে বলেছেন কী করতে হবে। নিশ্চয় তাঁরা এটাই বলতে গেছেন। এর বাইরে আর কী আলোচনা হতে পারে”? রীয়াজ সাহেবের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় এতোই ভালো যে গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সাথে কি কথা হয়েছিলো হুবুহু বলে দিচ্ছেন! ইসরাইলের আড়িপাতার প্রযুক্তি মনে হয় ঘরে ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে।

লেখক
শেখ জাহাঙ্গীর হাছান মানিক
[email protected]

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page