স্পোর্টস ডেস্কঃ
বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জেতার জন্য বাংলাদেশকে বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের রান তাড়ার নতুন রেকর্ড গড়তে হতো। কিন্তু রেকর্ড গড়া তো দূর, ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারের লজ্জায় ডুবতে হলো বাংলাদেশকে। ফলে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ২০২৩ বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই হোঁচট খেল টাইগাররা।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে ইংল্যান্ড। জবাবে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম ছাড়া আর কেউ মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারায় ৪৮.২ ওভারে ২২৭ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হলেও টাইগারদের রানে হারিয়ে দারুণভাবে ফিরে এলো ইংলিশরা।
৩৬৫ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্রিস ওকসকে তৃতীয় বল থেকে টানা তিনটি চার মেরে লিটন দাস দারুণ শুরু এনে দেন বাংলাদেশকে। কিন্তু রিচি টপলির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জোড়া আঘাতে ছন্দ হারায় বাংলাদেশ। টপলির বলে সেকেন্ড স্লিপে জনি বেয়ারস্টোর ক্যাচ হন তানজিদ হাসান তামিম। ২ বলে মাত্র ১ রান করেন বাংলাদেশি ওপেনার। পরের বলে নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন লিয়াম লিভিংস্টোনকে।
দলের বিপদে হাল ধরতে ব্যর্থ হন সাকিব আল হাসান। ৯ বলে মাত্র ১ রান করে বোল্ড হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক টপলির তৃতীয় শিকারে পরিণত হলে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা। সাকিবের পর ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজও। মাত্র ৮ রান করে ক্রিস ওকসের বলে মিরাজ ক্যাচ দেন জস বাটলারকে।
দলীয় ৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট পড়লে লিটনের সঙ্গে মিলে দলের হাল ধরেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। পঞ্চম উইকেটে দুজন মিলে যোগ করেন ৭২ রান। বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে আশার আলো জ্বালিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করেন লিটন। ৭টি চার ও ২টি ছয়ে ৬৬ বলে ৭৬ রান করে ২১তম ওভারে আউট হন এ ডানহাতি ওপেনার।
২৮তম ওভারে আদিল রশিদের বলে তাওহীদ হৃদয় এলবিডব্লিউ হয়েছেন ভেবে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। হৃদয় অবশ্য আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বল প্যাডে লাগার আগে তার ব্যাট ছুঁয়েছে। রিভিউ নিতে দেরি করেননি। তাতে রক্ষা পান এ তরুণ ব্যাটার।
লিটনের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন মুশফিক। ফিফটিতে ইনিংসটা আরও এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে হৃদয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন। কিন্তু ফিফটির পরই শর্ট বলে ডিপ থার্ডে মুশফিককে ক্যাচে পরিণত করেছেন টপলি। বিদায় নেওয়ার আগে মুশফিক ৬৪ বলে ৪টি চারে ৫১ রান করেন।
অভিজ্ঞরা ফিরে গেলেও হৃদয় একা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ৪০তম ওভারে লিয়াম লিভিংস্টোনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৩৯ রান করা এ ডানহাতি ব্যাটার। হৃদয়ের বিদায়ের প্রতিরোধ আরও দুর্বল হয়ে পড়ে বাংলাদেশের। হৃদয়ের আউট হওয়ার পরের ওভারে ১৪ রান করা মেহেদীকে বোল্ড করেন রশিদ।
শেষে তাসকিন ১৫ আর শরিফুল ১২ রান করলেও সেটি শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে। ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন রিস টপলি। ৪৯ রানে দুটি নিয়েছেন ক্রিস ওকস। একটি করে নিয়েছেন স্যাম কারান, আদিল রশিদ ও লিয়াম লিভিংস্টোন।