Saturday, April 27, 2024

মিয়ানমার থেকে মাসে ৪৫ লাখ ইয়াবা আনতেন ইউপি সদস্য বাবুল

টিটিএন ডেস্কঃ

২০২১ সালে কক্সবাজারের টেকনাফের পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার (সদস্য) নির্বাচিত হন জাফরুল ইসলাম ওরফে বাবুল (৪২)। তার নেতৃত্বেই টেকনাফে গড়ে উঠে শীর্ষ মাদক সিন্ডিকেট।

মাসে মিয়ানমার থেকে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ ইয়াবা নিয়ে আসতো এ সিন্ডিকেট। এরপর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেসব ইয়াবা ছড়িয়ে দেওয়া হতো। শুধু মাদক কারবারিই নয়, অস্ত্র ব্যবসা, সোনা চোরাচালানসহ এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসা এ বাবুল মেম্বারের নামে হত্যাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভোরে টেকনাফের কাটাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাফরুল ইসলাম ওরফে বাবুল মেম্বারকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৫)। এ সময় তার কাছ থেকে ৫৫ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার বাবুল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার একজন শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী। তিনি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে পরিচিত। মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এলাকায় ২০ থেকে ২৫ জনের একটি চক্র গড়ে তোলেন। তিনি মাদক কারবারির পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, সোনা চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, অবৈধ বালু উত্তোলন, অবৈধভাবে চোরাই পথে গবাদি পশু চোরাচালান, অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, বাবুল ২০০৫ সালের পরবর্তীতে টেকনাফ এলাকায় মাদক ও অন্যান্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে যান। ২০১৭ সালে এলাকার অপর এক মাদক কারবারি লুৎফুর রহমানের মাধ্যমে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নবীর সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকে বাবুল মাদক সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়ে। তিনি নবী হোসেনের সঙ্গে চুক্তি করে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে নাফ নদী দিয়ে মাদক, অস্ত্র ও সোনা চোরাচালান করে আসছিলেন।

মাদকসহ অন্যান্য চোরাকারবারির সময় তার দলের ২০ থেকে ২৫ জন সশস্ত্র সদস্য পাহাড়া দিয়ে চালান বাংলাদেশে পৌঁছে দিতো। বাবুল মিয়ানমার থেকে সপ্তাহে ৪/৫টি ইয়াবার চালান এনে বালুখালী ক্যাম্প সংলগ্ন তার নিয়ন্ত্রিত বেশকিছু চিংড়ির খামারের ভেতরে রাখতো। প্রতি চালানে প্রায় ২ লাখ পিস ইয়াবা থাকতো এবং সেসব ইয়াবা দেড় লাখ টাকায় কিনে এনে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকায় বিক্রি করতো। প্রতি মাসে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ ইয়াবা নিয়ে আসতো বাবুলের সিন্ডিকেট।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বাবুল ২০০১ সালে চট্টগ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হয়ে এক বছর পড়াশোনা করেন। পরে সেখানে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ২০০৩ সালে স্থানীয় কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ২০০৫ সালে পালংখালী এলাকায় জাবু নামে এক ব্যক্তির খুনের দায়ে মামলার আসামি হন। এরপর থেকেই তিনি অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ অর্থ দিয়ে কক্সবাজারে বিলাশ বহুল ফ্ল্যাট, ট্রাক, এলাকাতে জমি এবং মাছের পজেক্টসহ প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page