Thursday, May 9, 2024

বিদেশিদের কাছে সমর্থন চেয়েও ব্যর্থ বিএনপি: কাদের

টিটিএন ডেস্ক:

বিএনপি মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে যে পক্ষপাতমূলত সমর্থন চেয়েছিল, সেটা ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিদেশিরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমরা সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন করব।’

শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে আগত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অভাব ও নিরপেক্ষ প্রত্যাশা করেছেন। অংশগ্রহণমূলক কোনো নির্বাচনের কথা তারা বলেননি।

বিদেশিরা বাংলাদেশে বিভিন্ন কাজ নিয়ে এসেছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের এখানে বিদেশিরা এসেছেন। সবাই যে শুধু নির্বাচনের জন্য আসছেন, সেটা কিন্তু না। তারা প্রথমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন। এরা আসার আগে বিএনপি তাদের অপপ্রচারের মাধ্যমে যে আশঙ্কা, যে ধারণাটা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল যে, এবার আর সরকারের উপায় নাই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিনিধিরা সরকারকে বিপদে ফেলবে। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসবে। হয়ত সরকারকে বলে দেবে, এইভাবে নির্বাচন করো। পার্লামেন্ট ভেঙে যাবে। জনমনে একটা ধারণা ছিল।

‘শেষ পর্যন্ত কি হলো? তারা মূলত একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তাদের কাম্য। বন্ধু দেশ হিসেবে তারা বলেছে। ভিসা নীতি আসবে, এ ধরনের কোনো উক্তি তারা করেননি। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা তারা বলেছেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে তারা কিছু বলেননি। এটাই ছিল তাদের বক্তব্যের মূল কথা।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে দফা কয়টা তা জানে না। দল কয়টা সেটাও জানে না। এবার দেখলাম ৫৪টা, আবার ৩২টা। রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ২৭ দল।

এ সময় গণমাধ্যমে সঠিক চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে চিত্রটা বুঝে গেছে। তারা সে ডিসেম্বর থেকে যে তোড়জোড়, গণঅভ্যুত্থান। এখন তো এটাই হলো বাস্তবতা-গণঅভ্যুত্থানের ডাক দিয়ে সেখান থেকে পদযাত্রা। তার মানে তাদের কতটা মনস্তাত্বিক দিকটা সেটার অবনতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যে অপপ্রচার হয়েছে, তাতে মনে হয়েছে ঢাকা শহর তারা ঘিরে ফেলবে, আমরা পালাবার পথ পাব না। পরে দেখা গেলো সব লাফ-ঝাঁপ গোলাপবাগের গরুর হাটে গিয়ে হোচট খেয়েছে।

‘এ দফায় তারা এক দফার যে হাক ডাক দিল, নেতাকর্মীদের বুঝাতে চাইলো, এবার সরকার পতন। আবারও তারা পদযাত্রায় গেলো। এর কারণ কি তাদের যে শক্তি সমাবেশ দরকার, তা তারা ঘটাতে পারছে না। এর মূল কারণ হচ্ছে, এর কৃতিত্ব পুরোটা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। তার জনপ্রিয়তা বিরোধীদলের ভয়ের কারণ। তারা এই জনপ্রিয়তাকে ভয় পায়।’

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এসব কর্মসূচি সম্পৃক্ত করা হয়েছে সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোকে। আগস্টে শোকের মাসের কর্মসূচির বিষয় জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ব্যাপকভাবে ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’ হবে।

তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাস নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সতর্কতার সাথে রাজপথে আছি, থাকব। এটা হলো অভিন্ন কর্মসূচি। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। সে পরিবেশ আমরা রক্ষা করব।

সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কারও কোনো প্রকার খারাপ আচরণের জন্য নির্বাচনের পরিবেশ যেন নষ্ট না হয়, এটা আপনাদের বলে দেওয়া প্রয়োজন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এমন কিছু করব না, যাতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দূরত্ব দেখা গেছে, যা সমাধানের তাগিদ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। সবাইকে ঐক্য ধরে রাখার তাগিদ দেন তিনি।

আগামী ১৮ জুলাই শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এদিন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাত রাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত শোভাযাত্রা করবে৷ এসব কর্মসূচিতে বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে যেন মুখোমুখি না হয়, তা নিশ্চিত করতে সংগঠনের নেতাদের নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।

এ সময় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page