Thursday, May 16, 2024

জনাব মুজিবুর রহমান আপনি এখন খাদের কিনারায়-মইনুল হাসান পলাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হারার পর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিগত শাসনামলে জনগনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করে একটি ফেসবুক পোস্ট পোস্ট করেছেন সমুদ্র কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক মইনুল হাসান পলাশ।

পাঠকের উদ্দেশ্যে সেই লেখাটি হুবহু তুলে ধরে হলো–

মুজিব ভাই, (জনাব মুজিবুর রহমান সাবেক মেয়র,কক্সবাজার)।

২০১৮ সালের কক্সবাজার পৌর মেয়র নির্বাচনের প্রাক্কালে আপনার প্রতি ব্যাপক প্রত্যাশা রেখে আপনার উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেছিলাম পত্রিকায় এবং ফেসবুক প্লাটফর্মে।

আগের মেয়ররা অভিযোগ করতেন, তাঁরা সরকারি দলের নন বলে,বাজেট সংকোচন করা হয়। নতুন প্রকল্প অনুমোদন হয় না। ইত্যাদি ইত্যাদি।
আপনি মেয়র হলে সেই সমস্যা থাকবে না। আপনি কক্সবাজার পৌরসভাকে ঢেলে সাঁজাবেন। কক্সবাজার হবে ছবির মতোন সুন্দর, সুশৃঙ্খল, পরিপাটি একটি পর্যটন শহর।

সেই খোলা চিঠিতে সুনির্দিষ্টভাবে মতামত দিয়েছিলাম। আপনার পৌর শাসনামলে এর একটিরও উদ্যোগ আপনি নেন নি।
আপনার দায়িত্বকালীন সময়ে,কক্সবাজার হয়েছে বর্জ্যের নগরী। শহরজুড়ে শুধুই বর্জ্যের প্রদর্শনী।
আমি নাম দিয়েছি বর্জ্যটন নগরী।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনেক বিদেশি ভিআইপি/কর্মকর্তা আসতেন কক্সবাজার শহরে।এই নোংরা শহরের পৌরকর্তা হিসেবে আপনার লজ্জা লাগতো না,মুজিব ভাই? কিন্তু আমার লাগতো,একজন সাধারণ পৌরবাসী হিসেবে। আপনার দায়িত্বকালে কক্সবাজার শহরকে পরিণত করেছিলেন টমটমের শহর হিসেবে। আমি লিখেছিলাম,কক্সবাজার বাস টার্মিনালের তিন রাস্তার মাঝে পুরনো টমটম ঝুলিয়ে স্থাপন করা হোক “টমটম ভাস্কর্য”! আপনার দায়িত্বকালে সাধারণ পৌরবাসী আপনার সাক্ষাত পেতে আপনার চামচাদের পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরতেন। দিনে কয় ঘন্টা থাকতেন আপনি পৌরসভার মেয়রের চেয়ারে? সাধারণ পৌরবাসী তাদের জরুরি প্রয়োজনে দিনের পর দিন পৌরসভায় ঘুরেছে। মৌলিক সেবাটুকুও পায়নি। আপনার আশকারা পেয়ে পৌরসভার কর্মচারীরা একেকজন লাট সাহেবের মতো আচরণ করতো সাধারণ মানুষের সাথে।

আপনার প্রশ্রয়ে টিটন এর মতো তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী অন্তত ৫০/৬০ কোটি টাকা কামিয়েছে পৌরসভার কাজে নয়ছয় করে।অন্যরা তো আছেই।
আপনার বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগে আমি যেতে চাই না।
শুধু মনে করিয়ে দেই আপনাকে এবং সবাইকে।
কর্ণেল ফোরকান আহমদ নিজের জন্মস্থানকে ভালোবেসে কক্সবাজারকে বদলানোর স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন। তিনি আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। হতেনও না কখনো। অথচ,আপনি পায়ে পা লাগিয়ে তাঁর সাথে ঝামেলা করেছেন। কিছু ভাড়াটে অর্বাচীনকে লেলিয়ে দিয়েছিলেন কর্ণেল ফোরকানের বিরুদ্ধে। রাস্তায় তাঁর মূর্তি বানিয়ে আগুনে পুড়িয়ে তাকে সর্বোচ্চ অপমান করেছে সেই অর্বাচীনেরা।
কর্নেল ফোরকান আপনাকে সহযোগিতা করতে চেয়েছিলেন। কক্সবাজার পৌরসভার ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নত করতে, কক্সবাজার পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কক্সবাজার পৌরসভার সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লাট করার জন্য আপনার সাথে কাজ করতে চেয়েছিলেন কর্ণেল ফোরকান। আমি তাঁর সাথে যোগাযোগ রাখতাম বলে এসব জানি।
আপনি কি করেছেন? আপনি সমন্বয় সভা এড়িয়ে চলতেন।তাঁকে বরং কীভাবে বেকায়দায় ফেলা যায়!!
ফোরকান সাহেব যখন প্রধান সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করলেন,আপনিও সাথে সাথে আভ্যন্তরীণ রোডগুলোর কাজ ধরলেন। ধরলেন মানে,ভেতরের রাস্তাগুলো সব খুঁড়ে রাখলেন। কোনোটা ৬ মাস,কোনোটা ৯ মাস এভাবে গর্ত করে রাখলেন।
যাতে মানুষ কর্ণেল ফোরকানের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে।
সবচেয়ে মজার ছিলো বইল্যা পাড়া রোড।
মরহুম এডভোকেট জহিরুল ইসলামের ছেলে রাশেদুল ইসলামের সাথে আপনার ব্যক্তিগত রেষারেষি। আপনি তার বাসার সামনের রোডের পুরোটা গর্ত করে এক বছর সেভাবেই রেখে দিলেন।
আরো অনেক কিছুই আছে বলার। এতোসব লিখতে গেলে পাঠক ধৈর্য হারা হবেন।

সবশেষে, জনাব মুজিবুর রহমান ওরফে মুজিব চেয়ারম্যান। আপনি এখন খাদের কিনারায়। এরপরই অতল গহ্বর!

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page