নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘড়ির কাঁটা তখন বলছিল বিকেল ৪ টা ১২ মিনিট। তীব্র গরম উপেক্ষা করে কেউ বুদ্ধের স্মরণে, কেউ নানান ভঙ্গিমায় নৃত্যরত সবার একই গন্তব্য স্বর্গ। এখানে কোনো দুঃখ কাউকে স্পর্শ করতে পারে না। এই হলো স্বর্গের কল্পিতরূপ। কোনো লোক চাইলেই বহু আকাঙ্খিত এ স্বর্গে পৌঁছাতে পারে না। সংসার চক্রে ঘুরতে ঘুরতে জীবদ্দশার ভালো কর্মের প্রভাবে একপর্যায়ে মানুষ স্বর্গে আরোহণ করতে সক্ষম হয়, আবার পুনঃজন্ম গ্রহণ করে মর্ত্যলোকে ফিরে আসে। এমনিভাবেই ঘুরতে ঘুরতে প্রাণীকুল এক সময় নির্বাণ সুখ লাভ করে। এমন বৌদ্ধিক ধারণা থেকেই রামুর উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারে কৃত্রিম স্বর্গ তৈরি করে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালায় ৩৮ তম স্বর্গপুরী উৎসব উদযাপন করা হয়।
আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রামুর উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ছিলো ভোরে প্রভাতফেরি সহকারে বুদ্ধ পুজা, সকালে অষ্টপরিস্কারসহ মহাসংঘদান, মহতী ধর্মসভা, ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, অতিথি ভোজন, দুপুরে স্বর্গপুরী উদ্বোধন, বিকালে স্বর্গপূরী মেলা, ধর্মালোচনা সভা, সন্ধ্যায় স্বর্গপূরী উৎসর্গ, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, প্রয়াত ধর্মগুরু প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরো এবং প্রয়াত সারমিত্র মহাথেরোর নির্বাণ সুখ কামনা ও বাংলাদেশসহ বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুইপ কমল বলেন,” যাঁরা বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করে,যাঁরা হিন্দু মন্দিরে হামলার জন্যে সহোযোগিতা দেয়, যাঁরা মুসলমানদের মুসলমানিত্ব রক্ষা করে না ; তাদের প্রত্যাখ্যান করা দরকার।
হুইপ কমল আরও বলেন, ” আমরা শান্তি প্রিয় মানুষ। ধর্মেই আমরা বিশ্বাস করি। আমরা চাই মুসলমানরা মুসলিম ধর্ম পালন করুক। হিন্দু, বৌদ্ধরা নিজ নিজ ধর্ম পালন করুক। ধর্মীয় স্বাধীনতা ব্যতীত, ধর্মীয় জ্ঞান ব্যতীত একজন মানুষ কখনো পরিপূর্ণ হতে পারে না। তাই আমরা একে অপরের ধর্মকে যতটুকু সম্ভব সম্মান প্রদর্শন করবো।
এদিকে আয়োজক কমিটির সভাপতি শীলমিত্র মহাথেরো জানান,”আজকের এই অনুষ্ঠানে সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতিতে এখানে সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। “