ফরহাদ মাহমুদ, টেকনাফ
অপহৃত হওয়া নিজের ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আছেন অপহৃত মো. নুরের বাবা আব্দুর রহিম। ছেলে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসবে এমন আশায় অসহায় পিতার এমন অপেক্ষা।
গেলো বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের পানখালির পাহাড়ে জুম চাষ পাহারা দেওয়ার সময় রহিমের ছেলেসহ তার পরিবারের ৫ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। দু’দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের কোন খোঁজ মেলেনি।
নুরের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, “আমার একই পরিবারের ৫ জনকে অপহরণকারীরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আমাদের তেমন কোন সামর্থ্য নেই। এখন অপহরণকারীরা জনপ্রতি ৫ লক্ষ টাকা করে দাবি করছে। আমরা এ টাকা পাব কোথায়। আমরাতো গরিব মানুষ। চাষ করে সংসার চলে আমাদের। আমাদের ৫ টাকাও জমা নেই। তাঁদের অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই”।
অপহৃতদের স্বজনরা জানান, ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে অপহরণকারীরা। ভুক্তভোগী পরিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী জানান, “স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাথে মিলে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা এ অপহরণ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৭ সালের পর থেকে অপহরণের ঘটনা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারি অস্ত্রের মুখে অসহায় মানুষগুলোকে অস্ত্রধারীরা অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান দাবী করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, “আজকে সকাল পর্যন্ত এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু আমরা স্থানীয় বাসিন্দা এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করতে আমাদের টিম কাজ করছে। পরিবার কেন অভিযোগ দিচ্ছে না আমরা জানি না। যদি পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হতো বা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হত তাদের উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে আরও সুবিধা হতো”।
অপহৃতরা হলেন-হ্নীলা পানখালী এলাকার ফকির মোহাম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২) শাহাজানের ছেলে জিহান (১৩), ছৈয়দ উল্লাহর ছেলে শাওন (১৫), আব্দু রহিমের ছেলে মো. নুর (১৮) ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দু রহমান (১৫)।
টেকনাফে কয়েক দিন পরপর ঘটছে অপহরণের ঘটনা। যার কারণে আতঙ্কে দিন যাপন করছে পাহাড়ি এলাকার স্থানীয় চাষীরা।