Sunday, May 5, 2024

গণতন্ত্র না গণ বিপর্যয়

 

একটা প্রবাদ আছে “টাকায় কি না হয়” এইটা আসলে আংশিক সত্য।‌ পুরো সত্য হচ্ছে “ভিসায় কি না হয়”। ডলারে নিষেধাজ্ঞা হয় মানবাধিকারের নামে, নতুন ভাবে ভিসায় নিষেধাজ্ঞা হয় নির্বাচনের “সহিংসতার” নামে।

আমরা যখন গনিত শিখি একটা বিষয় সবাই দেখি সেইটা হচ্ছে মনে করি X সমান 1 অথবা ক সমান এক। এভাবেই কিন্তু অংক করে একটা সময় আমরা ফলাফল পেয়ে থাকি। আর অংকে যদি বেশি কাঁচা হয় তখন নির্ভুল সমাধান নাও হতে পারে। এখানে দেখতে হবে গনিতে কে কেমন ছাত্র। যে কেউ পারবে, যে কোনো একটা মান ধরে এগোতে।

এবার আসি বিশ্লেষণে আমরা কখন মনে করি বা হাতে আছে নিয়ে কাজ করবো? যখন আমরা একটা নির্দিষ্ট গনিতের সমাধান করতে যাব। তাহলে এখানে গনিত কোনটা? হা, এখানে গনিত হচ্ছে কোয়াডে যোগ দেওয়া, সেন্টমার্টিন দ্বীপ যেইটা প্রাকৃতিক ভাবে সাবমেরিন উদাহরণ স্বরুপ তাইওয়ান এইটা কে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া, জাতি সংঘে তাদের আনিত সব বিলে ভোট দেওয়া এবং বিশ্বব্যাপি তাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা।

এখন আসি উপরুক্ত কাজের পরিধির বিনিময় কি হতে পারে। সমর অস্ত্র পাওয়া, বিশ্ব ব্যাংক, ও আই এম এফ থেকে ঋণ পাওয়া, এবং গনতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পাওয়া সর্বোপরি বাক প্রতিবন্ধী হওয়া।

এক সময় মনে হয় ভারত, আমেরিকার পক্ষে উপমহাদেশ দেখতো এখন আর ভারত সেইটা হয়তো করতে অনিচ্ছুক তাই জাপান এই দায়িত্বটা বুঝে নিয়েছে বলে মনে হয়।

আপনাদের জানুয়ারি ০৬, ২০২১ তারিখের ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গার দুর্লভ ছবির কথা হয়তো মনে থাকার কথা যা, অনেক টা জ্বলজ্বল করছে স্মৃতি হিসেবে। নির্বাচনের সহিংসতার উদ্বেগ প্রকাশ করা পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ একটা কাজ কারন উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য কোথাও ভ্যাট প্রযোজ্য নয়। ধরুন আপনি আর্জেন্টিনার ফুটবলের ভক্ত, মেসি খেলছে কিন্তু আপনি টিভিতে দেখে দেখে ভাবছেন আর বলছেন এইভাবে মারলেই তো হয়! আসলে আপনি যেইটা ভাবছেন সেইটা পুরোটাই সত্যি নয়। বরং মেসি যা করছে সেটাই সঠিক। সুতরাং উদ্বেগ প্রকাশ করা খুব সহজ, উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা খুব কঠিন।

গনতন্ত্রের সংজ্ঞায় কি বলা আছে তার চেয়ে ঢের বেশি প্রয়োজন আপনি কোথায়, কার জন্য এবং কিভাবে সেই সংজ্ঞার ভাষা প্রয়োগ করছেন। বাস্তুসংস্থানের তৃতীয় স্তরের খাদক কে প্রথম স্তরের খাদক এর খাবার খেতে দেওয়া যায় তবে সেই খাবার তারা কতটুকু গ্ৰহন করছে সেটাই মুখ্য। মাটির নিচের স্তর ভালো থাকলে টিউবলে চাপ দিলে পানি আসবে অন্যতায় চাপা চাপিতে সময় এবং শ্রম উভয় নষ্ট হবে।

২৭তম জলবায়ু সম্মেলন হয় মিশরের শারম-আল-শেখে, যার আনুষ্ঠানিক নাম কনফারেন্স অব পার্টিজ-২৭ বা কপ-২৭। বিশ্বের যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। অতীতে এসব সম্মেলন থেকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধের যেসব প্রতিশ্রুতি এসেছে, বাংলাদেশের জন্য কে বা কারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটিকে রক্ষায়। ইসি, এমিশন ডেটাবেজ ফর গ্লোবাল অ্যটমসফরিক রিসার্চ, ২০১৮ অনুসারে পৃথিবীর দ্বিতীয় কার্বন নিঃসরণের দেশ আমেরিকা যারা প্রতি বছর ৫,২৭৫ মেগাটন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃশরণ করে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি সাগরের পানি ফুলে ওঠে উপকূলীয় এলাকা গ্রাস করছে যার দরুন বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং কক্সবাজারের অধিকাংশ মানুষ গৃহীন হয়ে পড়ছে। যেখানে দেশই থাকছে না উন্নত দেশের কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃশরণের ফলে সেখানে গনতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগকে “ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না” এই রকম শুনায়।

টিপু সুলতানকে হত্যার পর তাঁর প্রাসাদ লুট করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। প্রাসাদের অন্দরমহলে সুলতানের তলোয়ারটি পাওয়া যায়। ব্রিটিশ মেজর জেনারেল ডেভিড বেয়ার্ডকে তাঁর সাহসের স্মারকস্বরূপ তলোয়ারটি দেওয়া হয় সূত্র দৈনিক প্রথম আলো। গত মঙ্গলবার লন্ডনের বনহ্যামস নিলাম হাউসে ১৮৬ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে আঠারো শতকের প্রখ্যাত ভারতীয় শাসকের বিখ্যাত সেই তলোয়ারটি সূত্র সিএনএন। এখন আসি একজন সুলতান কে হত্যা করে ইতিহাসের লজ্জাজনক কাজ করার পর ঐতিহাসিক জিনিসপত্র লুট করে নিলামে বিক্রি করে মানবাধিকারের সবক শেখাতে আসাটা কতটুকু গ্ৰহন যোগ্য।

ডেমোক্রেটিস এন্ড ইটস ক্রিটিকস বইয়ে গনতন্ত্রের মৃদু সমালোচক হিসেবে অ্যারিস্টটল বলেন “যিনি সেই ক্ষমতা অপছন্দ করতেন যা তিনি মনে করেন যে গণতন্ত্রের সম্প্রসারণ অগত্যা দরিদ্রদের দেয়।” অন্যদিকে গনতন্ত্র বিরোধী প্লেটো বলেন “সর্বোত্তম যোগ্যদের দ্বারা সরকার”। যেকোন বিপর্যয় মানবজাতির জন্য ইতিবাচক নয়, সেইটা গনতন্ত্র হোক, জলবায়ু হোক বা মানবাধিকার হোক।

লেখক
শেখ জাহাঙ্গীর হাছান মানিক

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page