অর্থনীতির স্থিতিশীলতা কেন প্রয়োজন?
একটি দেশের অর্থনীতিতে সব সময় স্থিতিশীলতা বজায় থাকতে হবে। অন্যথায় মানুষের মধ্যে একটা ভয় কাজ করবে যেমনটি গভীর রাতে মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। অস্থিতিশীল অর্থনীতির সাথে দরিদ্র মানুষরা কখনো এগিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটা জুয়া খেলার মতো যেমন আজকে জুয়ায় আপনি হারলেন, দ্বিতীয় দিন হারলেন, তৃতীয় দিন হারলেন আবার চতুর্থ দিন জিতলেন। এটা জুয়া খেলায় সম্ভব কারণ যারা জুয়ার নেশায় বিভোর থাকে তাদের কাছে অর্থনৈতিক মুক্তির চেয়ে জুয়া খেলায় সবচেয়ে বেশি আনন্দের।
পৃথিবীতে বিলিয়নারি জন্মাবে আবার বিলিয়নারি বিলীন হয়ে যাবে এটা একটা বিনিয়োগের সাধারণ খেলা। আমেরিকায় ইলন মাস্ক, বিল গেটস এবং ওয়ারেন বাফেট ও অসংখ্য বিলিয়নিয়ার রয়েছে কিন্তু এই বিলিয়নারিরা কেউ অর্থনীতির মূল জায়গায় হাত দেয় না। যেমন তারা ব্যাংক বা ইন্সুরেন্স এর কোথাও কোন মালিক হয় না। তাদের একটাই লক্ষ্য বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ব্যবসা সম্প্রসারণ করা। আর বাংলাদেশে হয় তার উল্টোটা। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীর একটাই উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকে যে কোন একটা ব্যাংকের অথবা ইন্সুরেন্স এর মালিক হওয়া। এভাবেই তারা অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে হাত দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে ভয় কেন?
রাজনীতি সবচেয়ে অশুভ একটা শব্দ বলে মনে হয় আমাদের দেশে। এই শব্দটা অনেকে উচ্চারণ করতেও আজকাল অরুচি বোধ করে। রাজনীতির পাঠশালায় সঠিক নীতির সম্প্রসারণ অনেকটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখানে রাজবংশীয় রীতিনীতি পালনেই আমরা অনেকটা এগিয়ে আছি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে “রাজনীতি” নামক শব্দটা চয়ন করতেও অরুচি বোধ করছে, সেটার পিছনে শতভাগ না হলেও অনেকটাই বলা যায় বিএনপি দায়ী, কারণ তারা তাদের চিন্তা চেতনায় এমন কি উপকরণ খুঁজে পায় যে তারা নির্বাচন বর্জন করে। তাদের একটি বাক্য নির্বাচনের সময় শুনা যায়, “এ ধরনের অবৈধ নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব না”। যে দল সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মনে স্থান নিয়ে রয়েছে, তারা কি পারে না তাদের ঐ চিন্তা চেতনাকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে এসে নিজেদের আস্থা ও বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে। পাকিস্তানে ইমরান খানকে জেলে ভরলো, প্রতীক কেড়ে নিল, কিন্তু তারপরও তার দল নির্বাচনে অনড় ছিল এবং স্বতন্ত্রভাবে পুরো দেশ জুড়ে নির্বাচনে দলের নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ করল। ৩৩৬ টা আসনের মধ্যে ৯৮ টি আসনে পিটিআই জয়লাভ করল।
ফুটবলার মেসি থেকে রোনালদো তারা চাইলে তাদের নিজ নিজ দেশে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারে। কারণ তাদের এত জনপ্রিয়তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যেটা বলে শেষ করা যাবে না। আর আমাদের দেশে খেলাধুলায় একটু জনপ্রিয়তা অর্জন করলেই তারা জাতীয় অঙ্গন থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে না গিয়ে সোজা সংসদ ভবনে ঢুকে যায়। খেলাধুলায় খ্যাতি অর্জন করা ব্যক্তি সমূহ শুধু মাত্র জাতীয় সম্পদ নয় এরা আন্তর্জাতিক সম্পদও বটে। সুতরাং খ্যাতি অর্জন করা খেলোয়াড়দের অবশ্যই মন ও মননে অনেক উদার হতে হবে।
অর্থনীতি এবং রাজনীতি একটা ব্রিজের মতো। অর্থনীতি হচ্ছে একটা পাড় বা তীর আর রাজনীতি হচ্ছে অন্য আরেকটা পাড় বা তীর। এই সংযোগ স্থাপন ব্রিজকে অবশ্যই স্বচ্ছ এবং দৃশ্যমান হয়ে থাকতে হবে তাহলেই দেশ ও দশের উন্নয়নে সফলতা আসবে।
লেখক
শেখ জাহাঙ্গীর হাছান মানিক
[email protected]