Friday, May 17, 2024

বিশ্ব মোড়লরা দুমুখো নীতিতে বিশ্বাস করে: প্রধানমন্ত্রী

টিটিএন ডেস্ক:

‘বিশ্ব মোড়লদের’ বিরুদ্ধে দুমুখো নীতি গ্রহণের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ব মোড়লরা দুমুখো নীতিতে বিশ্বাস করে। এক জায়গায় ফিলিস্তিনের সমস্ত জমি দখল করে রেখেছে, সেটা ইনভেশন (আগ্রাসন) না। ইউক্রেনেরটা ইনভেশন! এই দুমুখো নীতি কেন হবে, সেটা আমার প্রশ্ন ছিল। অনেকেই সাহস করে বলবে না। আমি বলেছি।’

জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলন অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই সাহস করে বলবে না। নানাজনের নানা দুর্বলতা আছে, আমার কোনও দুর্বলতা নেই। আমার কোনও চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার কাছে ক্ষমতাটা হলো ‘থাকে লক্ষ্মী যায় বলাই’, একটা কথা আছে না, আমার কাছে সেটাই। থাকলে ভালো! আমি দেশের জন্য কাজ করতে পারবো। না থাকলে আমার কোনও আফসোস নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধকালীন যে কষ্ট আমরা তার ভুক্তভোগী। আমি নিজেই ভুক্তভোগী। আমাদের দেশের মানুষ যে গণহত্যার শিকার হয়েছে সেটা তো আমি জানি। সেজন্য সব সময় বলে আসছি, আমরা যুদ্ধ চাই না। শান্তি চাই। আজ ফিলিস্তিনে যেটি হচ্ছে সেটি তো অমানবিক কাজ। হাসপাতালের ওপর আক্রমণ। হাসপাতালে গিয়ে মানুষ মারা। সব থেকে বেশি, বাচ্চাদের কী দূরবস্থা! এটা মানবতাবিরোধী।’

তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ছিল ২০২১ পর্যন্ত থাকতে হবে। বাংলাদেশকে একটা ধাপে তুলতে হবে। আমি সেটি করে দিয়েছি। আমি ক্ষমতায় আসবো কি আসবো না, আমি তো পরনির্ভরশীল হয়ে করি নাই। আমার একমাত্র নির্ভরতা হচ্ছে দেশের জনগণ। আমি সব সময় চেয়েছি জনগণের সমর্থন। হ্যাঁ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব প্রয়োজন। দেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন হবে। এখন তো বিশ্বটা গ্লোবাল ভিলেজ, একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অনেক জিনিস কিনতে হচ্ছে, আমরা বাধা পাচ্ছি। সে ক্ষেত্রে আমরা বলেছি যুদ্ধটা যখন শুরু হয়, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, সেটি ওই জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে না। সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে মুদ্রাস্ফীতি ছড়িয়ে পড়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্ব কষ্ট পাচ্ছে। এর ক্ষতিকর প্রভাব শুধু একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। সারা বিশ্বে প্রভাব পড়ছে। মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি করেছি। আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাইনি, ঝগড়া করতে যাইনি। আমরা ধৈর্য ধরেছি, আলোচনা করেছি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি, তারা ফেরত নিক। এখন যে অবস্থা চলছে, আমি সবাইকে বলেছি ধৈর্য ধরতে। আমরা লক্ষ্য রাখবো কোনও কিছুতে আমাদের কোনও রকম উত্তেজিত হলে চলবে না। শান্ত মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সেটা করে আমরা সুফল পাচ্ছি। যদি হিসাব করেন, দক্ষিণ এশিয়া-দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় আমরাই কিন্তু সব থেকে সুস্থ অবস্থায় বিরাজ করছি। অন্য দেশগুলো কষ্ট পাচ্ছে।’

এক সংবাদিক প্রশ্ন করেন, আমরা চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার একটা চাপের ভেতরে আছি। এ অবস্থায় বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মিডল পাওয়ার বা ইমার্জিং পাওয়ারের একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরির চিন্তা কি আপনি করছেন?

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সাধারণ একজন মানুষ। ছোট একটা ভূখণ্ডে বিশাল জনগোষ্ঠী। আমি সেটি নিয়েই ব্যস্ত। তবে কোথাও কোনও অন্যায় দেখলে আমি আমার কণ্ঠ সোচ্চার করি। প্রতিবাদ করি। যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই– এই কথাটা বলি। কিন্তু কোনও প্ল্যাটফর্ম করবার মতো দক্ষতা আমার নেই। যোগ্যতাও আমার নেই। সেই চিন্তাও আমার নেই। আমি মনে করি অনেক প্ল্যাটফর্ম হয়ে গেছে। কিন্তু আসলে তো কাজের সময় কাজে লাগে না, সেটা হলো বাস্তব। না হলে আজ গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নিরাপত্তা কাউন্সিলে প্রস্তাব আসে। সেখানে ভেটো দেওয়া হয়। বাংলাদেশের যুদ্ধ চলার সময়ও এই অবস্থাটা আমরা দেখেছি। আমার যেটুকু ক্ষমতা। আমার ক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। এর থেকে বড় কিছু চিন্তা করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। সেই দক্ষতাও আমার নেই।’

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page