নিজস্ব প্রতিবেদক :
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা দেশটির বর্ডার গার্ড সদস্যদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রী সঠিক কোন দিন তারিখ জানাননি, তবে সরকারের একাধিক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বাংলা’কে নিশ্চিত করেছে, “এ সপ্তাহের মধ্যেই পাঠানো হচ্ছে তাদের।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “মিয়ানমার সেনাদের খুব শিগগিরই ফেরানোর বিষয়ে কাজ চলছে”। তবে, নিরাপত্তাজনিত কারণে দিনক্ষণ প্রকাশ করেননি তিনি।
বিবিসি বাংলাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন অঞ্চলের নৌ রুট দিয়েই তাদের পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এবং সেটি এই সপ্তাহের মধ্যেই হতে পারে।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজারে দায়িত্বরত একজন সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন “১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবারই পাঠানো হতে পারে আটককৃত মিয়ানমার বাহিনীর সবাইকে।
যদিও তাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন দেখা যাচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘জলসীমা ব্যবহার করে কোন জাহাজ অন্য দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম ও প্রটোকলের বিষয় আছে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলেই পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
এদিকে, উখিয়ার হোয়াইক্যাং সীমান্ত ও লম্বার বিল এলাকায় সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পেয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের একটি এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন করেছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।
সীমান্তের স্থলভাগ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছিলো মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য। তারা সীমান্তের যে সব এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলো এখন সে সমস্ত বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে।
গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি থেকে বিজিপি সদস্যসহ ৩৩০ জন মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে তাই মিয়ানমার সরকারের সাথে গত সপ্তাহ থেকে যোগাযোগ শুরু করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দিল্লী সফর শেষে দেশে ফিরে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, “মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এই রিজিওনে সংকট তৈরি হয়েছে। দেশের জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হয়েছে”।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “মিয়ানমার থেকে যে সব বর্ডার সিকিউরিটি গার্ড, সেনাবাহিনী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এসেছেন সহসাই আমরা তাদের ফেরত পাঠাবো। তবে, সিকিউরিটি ইস্যুর কারণে আমরা দিনক্ষণ বলতে চাই না”।
দুই দেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা তাদের বাহিনীকে ফেরত পাঠাতে দুই দেশের সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে।