ঢাকা ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
উখিয়া হাসপাতালের ২ টন ময়লা অপসারণ করলো বিডি ক্লিন টিম মাতারবাড়িতে শ্রমিক দলের সভাপতি মামুনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন মধ্যরাতে ইডেন গার্ডেনের ‘ছাদ থেকে পড়ে’ যুবকের মৃত্যু! বাঁকখালী নদীর তীরে পুনঃদখল উচ্ছেদে প্রশাসনের ফের অভিযান টেকনাফে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ যুবকের লাশ নাফ নদীতে ২০২৬ বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বল ‘ট্রায়োন্ডা’ উন্মোচন ৩৯ জন নারী শিশু আটকে ছিলো পাহাড়ে! রাজা কংসনারায়ণের দূর্গা পূজা ও সমাজের ঐক্য ডিসেম্বরে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দেশে ফিরছেন সেফুদা! সু’মু’দ ফ্লো’টি’লা’য় পৌঁছে গেলো টিটিএনের সংবাদ, শহীদুল আলমের ফেসবুক পোস্ট.. জালিয়াপালংয়ে জেলা আমীর আনোয়ারী-“জামায়াতে ইসলামী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ” বিসর্জনের সুরে ‘ফিলিস্তিন মুক্তির’ প্রার্থনা টেকনাফে বিএনপি কার্যালয়ে র‍্যাবের অভিযান: ‘স্বৈরাচারী পদক্ষেপ’ বলছে স্থানীয় নেতারা বৈরি আবহাওয়াতেও কক্সবাজারে হোটেল রুম ‘সোল্ড আউট’ কক্সবাজারে চুরি হওয়া ৬৫ মোবাইলসহ কুমিল্লা থেকে ‘চোর’ গ্রেপ্তার
সায়ন্তন ভট্টাচার্যের ফিচার-

রোনালদো: সময়ের বিপরীতে এক অদম্য যোদ্ধা

আর্মেনিয়ার আকাশে হালকা শীতের আবেশ। রাতের ম্যাচে আলো ঝলমল করছে স্টেডিয়াম, দর্শকদের গর্জনে কাঁপছে চারদিক। পর্তুগালের তরুণেরা মাঠে নামছে তাজা উদ্যম আর গতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে। দলের গড় বয়স মাত্র ২৫.৭ বছর। আর সবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন এক মানুষ, যিনি ৪০ বছর বয়সে এখনও সেই একই দৃঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন গোলপোস্টের দিকে। তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

বয়স যেন সংখ্যার খেলাই বটে। রোনালদোর পরে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ক্যান্সেলোই যখন ৩১, তখনও রোনালদো তাঁর থেকে ৯ বছরের সিনিয়র। ১৪ বছরের বয়সের ব্যবধান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন একদল তরুণ প্রতিভার সঙ্গে সমানে সমান। ফুটবলে যেখানে ২৭ বছরকেই ধরা হয় খেলোয়াড়দের সেরা বয়স, সেখানে রোনালদো সেই প্রাইমকে বহু আগেই অতিক্রম করেছেন। অথচ শরীরের ভাষা বলে অন্য কথা। মাঠে তাঁর দৌড়, লাফ, চিৎকার—সবকিছু এখনও যেন এক অদম্য যোদ্ধার মতোই।

রোনালদোর ২৩ বছরের ক্যারিয়ার এক মহাকাব্যের মতো। এত অর্জন, এত ট্রফি, এত গোল—যেখানে পাঁচ বছরের সাফল্য পেলেও যে কাউকে কিংবদন্তি বলা যেত। কিন্তু তাঁর জন্য সেটাই ন্যূনতম। ছোট্ট কোনো ভুল, সামান্য কোনো বিচ্যুতিই হয়তো সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন তুলতে পারত। অথচ রোনালদোর ভেতরে নেই সে ভয়। নেই কোনও ইনসিকিউরিটি, নেই ব্যর্থতার আতঙ্ক। কারণ তিনি জানেন—খেলা মানেই তাঁর অস্তিত্ব।

স্টেডিয়ামের আলো যখন তাঁর মুখে পড়ে, চোখে দেখা যায় অদ্ভুত এক দৃঢ়তা। ২০ বছরের জোয়াও নেভেসের পাশে দাঁড়িয়েও তিনি নিজেকে ছোট ভাবেন না। বরং মনে করিয়ে দেন—বয়স কেবল একটি সংখ্যা নয়, বয়স কেবল একটি চ্যালেঞ্জ। আর চ্যালেঞ্জ জেতাই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র।

“Age is just a number”—সাধারণ মানুষের জন্য কথাটা যতটা অবাস্তব, রোনালদোর জন্য ততটাই বাস্তব। তিনি যেন প্রতিদিন লড়ছেন যুক্তির সঙ্গে, সময়ের সঙ্গে। প্রতিদিন প্রমাণ করছেন, লজিককে হার মানাতে পারে কেবল অনমনীয় মানসিকতা।

ট্রফি, রেকর্ড, গ্লোরি—এসব ভুলে গেলেও তাঁর মানসিকতাই তাঁকে আলাদা করে দিয়েছে। রোনালদো শুধু once in a generation নন, once in a lifetime নন—তিনি once in history।

স্টেডিয়ামের ভিড়ে যখন আবারও শোনা যায় তাঁর নাম ধ্বনিত হচ্ছে, বোঝা যায়—এমন একজন আর জন্মাবে না। না ফুটবলে, না অন্য কোথাও।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

উখিয়া হাসপাতালের ২ টন ময়লা অপসারণ করলো বিডি ক্লিন টিম

This will close in 6 seconds

সায়ন্তন ভট্টাচার্যের ফিচার-

রোনালদো: সময়ের বিপরীতে এক অদম্য যোদ্ধা

আপডেট সময় : ০৪:৫৭:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আর্মেনিয়ার আকাশে হালকা শীতের আবেশ। রাতের ম্যাচে আলো ঝলমল করছে স্টেডিয়াম, দর্শকদের গর্জনে কাঁপছে চারদিক। পর্তুগালের তরুণেরা মাঠে নামছে তাজা উদ্যম আর গতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে। দলের গড় বয়স মাত্র ২৫.৭ বছর। আর সবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন এক মানুষ, যিনি ৪০ বছর বয়সে এখনও সেই একই দৃঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন গোলপোস্টের দিকে। তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

বয়স যেন সংখ্যার খেলাই বটে। রোনালদোর পরে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ক্যান্সেলোই যখন ৩১, তখনও রোনালদো তাঁর থেকে ৯ বছরের সিনিয়র। ১৪ বছরের বয়সের ব্যবধান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন একদল তরুণ প্রতিভার সঙ্গে সমানে সমান। ফুটবলে যেখানে ২৭ বছরকেই ধরা হয় খেলোয়াড়দের সেরা বয়স, সেখানে রোনালদো সেই প্রাইমকে বহু আগেই অতিক্রম করেছেন। অথচ শরীরের ভাষা বলে অন্য কথা। মাঠে তাঁর দৌড়, লাফ, চিৎকার—সবকিছু এখনও যেন এক অদম্য যোদ্ধার মতোই।

রোনালদোর ২৩ বছরের ক্যারিয়ার এক মহাকাব্যের মতো। এত অর্জন, এত ট্রফি, এত গোল—যেখানে পাঁচ বছরের সাফল্য পেলেও যে কাউকে কিংবদন্তি বলা যেত। কিন্তু তাঁর জন্য সেটাই ন্যূনতম। ছোট্ট কোনো ভুল, সামান্য কোনো বিচ্যুতিই হয়তো সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন তুলতে পারত। অথচ রোনালদোর ভেতরে নেই সে ভয়। নেই কোনও ইনসিকিউরিটি, নেই ব্যর্থতার আতঙ্ক। কারণ তিনি জানেন—খেলা মানেই তাঁর অস্তিত্ব।

স্টেডিয়ামের আলো যখন তাঁর মুখে পড়ে, চোখে দেখা যায় অদ্ভুত এক দৃঢ়তা। ২০ বছরের জোয়াও নেভেসের পাশে দাঁড়িয়েও তিনি নিজেকে ছোট ভাবেন না। বরং মনে করিয়ে দেন—বয়স কেবল একটি সংখ্যা নয়, বয়স কেবল একটি চ্যালেঞ্জ। আর চ্যালেঞ্জ জেতাই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র।

“Age is just a number”—সাধারণ মানুষের জন্য কথাটা যতটা অবাস্তব, রোনালদোর জন্য ততটাই বাস্তব। তিনি যেন প্রতিদিন লড়ছেন যুক্তির সঙ্গে, সময়ের সঙ্গে। প্রতিদিন প্রমাণ করছেন, লজিককে হার মানাতে পারে কেবল অনমনীয় মানসিকতা।

ট্রফি, রেকর্ড, গ্লোরি—এসব ভুলে গেলেও তাঁর মানসিকতাই তাঁকে আলাদা করে দিয়েছে। রোনালদো শুধু once in a generation নন, once in a lifetime নন—তিনি once in history।

স্টেডিয়ামের ভিড়ে যখন আবারও শোনা যায় তাঁর নাম ধ্বনিত হচ্ছে, বোঝা যায়—এমন একজন আর জন্মাবে না। না ফুটবলে, না অন্য কোথাও।