বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহ দেখিয়েছে মিয়ানমারের রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা ইউনাইটেড লীগস অব আরকান (ইউএলএ)।
রাখাইনে এই মূহুর্তে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শক্তি ইউএলএ’র সামরিক শাখা আরকান আর্মি জান্তার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে ১৪টি টাউনশীপ দখলে নিয়েছে, ২৭১ কিলোমিটার বাংলাদেশ লাগোয়া সীমান্ত এলাকাতেও তাদের আধিপত্য দৃশ্যমান।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে, নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে আরকান আর্মির হাতে বিভিন্ন সময় আটক ২৬ জেলে বিজিবির সহায়তায় টেকনাফে ফেরত এসেছে।
এসব জেলেদের একজন ইব্রাহিম (২৮), টেকনাফের এই জেলে জানালেন কেনো তাদের ধরে নেওয়া হয়েছিলো? তিনি বলেন, ‘আমরা নাফ নদীতে মাছ ধরছিলাম হঠাৎ তারা আসলো বন্দুক দেখিয়ে নিয়ে গেলো। তারা বলেছে আমরা তাদের সীমানায় ঢুকে গেছি।’
ফেরত আসা জেলেদের মধ্যে থাকা আশ্রিত রোহিঙ্গা ছলিম উল্লাহ বুঝেন আরকান আর্মি’র সদস্যদের কথ্য ভাষা।
রাখাইনের মংডুর জলসীমার নিকটবর্তী আরকান আর্মি’র যে ঘাটিতে তারা ছিলেন সে ঘাটির কমান্ডারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ” আরকান আর্মি বলেছে, বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি আরকানের জলসীমায় মাছ ধরতে চায় তাহলে তাদের অনুমতি লাগবে।”
আরকান আর্মি বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সহ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ” তারা বাংলাদেশের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়তে চায়, বাণিজ্যও করতে চায়।”
জেলেরা যখন ফিরে আসলো তখন ঢাকায় অবস্থান করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস।
একই দিনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আরাকান আর্মিকেও আলোচনায় যুক্ত করা উচিত।
তাঁর মতে,”আরাকান আর্মিও এখন একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আমি মনে করি তাদের সাথেও প্রয়োজনীয় সংলাপ হওয়া উচিত। কারণ আমরা জানি যে অতীতে রাখাইন এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক সহজ ছিল না।”
এক দিন আগেই উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুতেরেসকে সাথে নিয়ে লাখো রোহিঙ্গাদের সাথে ইফতার করেন প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনূস।
ইফতার শেষে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া বক্তব্যে ইউনূস রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী বছর আপনারা নিজ দেশে ঈদ করতে পারবেন।’
২০১৭ সালে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় পায় মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।