২০১৫ সাল। তখন কক্সবাজারের মতো প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জানা ছিলো না স্বেচ্ছায় রক্তদানের বিষয়। সেসময় অনেকেই কিনে নিতেন রক্ত। আবার রক্ত জোগাড় করতে না পেরে মৃত্যুর মতো ঘটনাও শোনা যায়। এমন সময়ে ১০ থেকে ১২ জন স্বপ্নবান তরুণ শুরু করে কক্সবাজার ব্লাড ডোনারস সোসাইটি নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মানুষকে বুঝাতে থাকেন স্বেচ্ছায় রক্তদানের ব্যাপারে। উৎসাহ জোগাতে থাকেন সবাইকে। মেডিক্যাল কেন্দ্রীক সংগঠনের বাইরে এটিই কক্সবাজারের প্রথম ব্লাড বিষয়ক সংগঠন।
২০১৫ সাল থেকে ২০২৪। কক্সবাজার ব্লাড ডোনারস সোসাইটিকে দেখে অনেক সংগঠনের জন্ম হয়েছে কক্সবাজারে। রক্তদানেও এসেছে সহজলভ্যতা। বর্তমানে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৪০০ এর অধিক সদস্য রক্তদানসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে থাকে। এই সংগঠন রক্ত দানে উৎসাহ দান, ব্লাড ব্যাংক দালালমুক্ত করা, বাল্য বিবাহ রোধ, অসহায় মানুষকে সেবা দেয়া, অজ্ঞাত রোগিকে সেবা দিয়ে পরিবারে পৌঁছানো, থেলাসেমিয়া-ক্যান্সার সচেতনতা, শীতবস্ত্র বিতরণ, বিভিন্ন দুর্যোগে সহায়তা এবং সামাজিক সকল কাজ করে যাচ্ছে কক্সবাজারে।
কক্সবাজার ব্লাড ডোনারস সোসাইটির পরিচালক (এডমিন) আলী আহসান মুজাহিদ জানিয়েছেন, দিনে ১৫ থেকে ১৭ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দেওয়া হয় প্রতিটি উপজেলায়। মাসে ৫০০ ব্যাগের বেশি এবং বছরে যার সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০০০ ব্যাগের বেশি।
তিনি জানান, কক্সবাজারের রক্তের অভাবে কোন রোগী যেন মারা না যায় আমরা সেই প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি। কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা মানুষের সেবা দিতে চাই। অসহায় মানুষের দোরগোড়ায় কিভাবে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায় সেটিই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।
আজ ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৫ ডিসেম্বর দিনটিকে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবাভিত্তিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবীদের কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ দিনটি পালন করা হয়। আজকের এই দিনে কক্সবাজার লাইফ পরিবার কৃতজ্ঞতা জানায় কক্সবাজার ব্লাড ডোনারস সোসাইটিকে।