ঢাকা ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাত্ররাজনীতিতে পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ইনানীতে আত্মপ্রকাশ করলো শফির বিল জেলে কল্যাণ সমিতি

নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু, দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার
আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরকার ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি এবং সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদারে কাজ শুরু করেছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচন বিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে অক্টোবর ও নভেম্বর পর্যন্ত।

আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতির ওপর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বরাতে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘তারা (পুলিশ) মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেনাসদস্যরা এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট থেকে মাঠে সক্রিয় আছেন এবং তাঁদের বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে।’নির্বাচনের সময় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন ঘিরে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় সরকার ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠনের চিন্তাভাবনা করছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘এই সেন্টারটি খুব দ্রুত গুজব শনাক্ত ও প্রতিরোধ করবে এবং সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘এই কেন্দ্রটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইতিবাচক ও তাৎক্ষণিক কর্মকাণ্ড প্রচারে সাহায্য করবে, যেগুলো বর্তমানে প্রচার না পাওয়ায় অনেক সময় অজ্ঞাতই থেকে যায়।’

বৈঠকে নতুন করে গঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমান্ড কাঠামোর অধীনে মিডিয়া উইং প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং এবং তাৎক্ষণিক তথ্য প্রকাশে সহায়ক হবে।

সম্প্রতি গোপালগঞ্জসহ কিছু জায়গায় অস্থিরতা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পূর্বাভাস দিতে না পারায় সমালোচনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, সরকার ইতিমধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এমন ব্যর্থতা এড়াতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরও সমন্বিতভাবে এবং আগেভাগেই তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনপূর্ব প্রশাসনিক রদবদল নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সার্বিকভাবে নয়, শুধুমাত্র যেখানে প্রয়োজন সেখানেই রদবদল হবে।’ তিনি বলেন, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সম্ভাব্য নির্বাচনের আগে ‘হটস্পট’— যেখানে সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে — সেসব এলাকা দ্রুত চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। এসব এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

দিনের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম, ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপ এবং শুল্ক নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘সরকার সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলছে এবং নির্বাচনী নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’

এদিন রাতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিতে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করবে বলে জানানো হয়।

প্রেস সচিব আশা করেন, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনের মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশ একটি নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সূত্র: প্রথম আলো

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে?

This will close in 6 seconds

নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু, দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

আপডেট সময় : ০৬:৫৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার
আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরকার ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি এবং সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদারে কাজ শুরু করেছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচন বিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে অক্টোবর ও নভেম্বর পর্যন্ত।

আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতির ওপর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বরাতে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘তারা (পুলিশ) মূলত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেনাসদস্যরা এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট থেকে মাঠে সক্রিয় আছেন এবং তাঁদের বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে।’নির্বাচনের সময় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন ঘিরে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় সরকার ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠনের চিন্তাভাবনা করছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘এই সেন্টারটি খুব দ্রুত গুজব শনাক্ত ও প্রতিরোধ করবে এবং সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘এই কেন্দ্রটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইতিবাচক ও তাৎক্ষণিক কর্মকাণ্ড প্রচারে সাহায্য করবে, যেগুলো বর্তমানে প্রচার না পাওয়ায় অনেক সময় অজ্ঞাতই থেকে যায়।’

বৈঠকে নতুন করে গঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমান্ড কাঠামোর অধীনে মিডিয়া উইং প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে। এটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং এবং তাৎক্ষণিক তথ্য প্রকাশে সহায়ক হবে।

সম্প্রতি গোপালগঞ্জসহ কিছু জায়গায় অস্থিরতা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পূর্বাভাস দিতে না পারায় সমালোচনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, সরকার ইতিমধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এমন ব্যর্থতা এড়াতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আরও সমন্বিতভাবে এবং আগেভাগেই তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনপূর্ব প্রশাসনিক রদবদল নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সার্বিকভাবে নয়, শুধুমাত্র যেখানে প্রয়োজন সেখানেই রদবদল হবে।’ তিনি বলেন, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সম্ভাব্য নির্বাচনের আগে ‘হটস্পট’— যেখানে সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে — সেসব এলাকা দ্রুত চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। এসব এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

দিনের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম, ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপ এবং শুল্ক নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘সরকার সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলছে এবং নির্বাচনী নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’

এদিন রাতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিতে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করবে বলে জানানো হয়।

প্রেস সচিব আশা করেন, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনের মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশ একটি নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সূত্র: প্রথম আলো