আবারো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা মিয়ানমারের ওপার থেকে আসা গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন।
তবে রাত ১ টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর কিংবা এপারে গুলি আসার তথ্য মেলেনি।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সীমান্ত সংলগ্ন ঘুমধুমের তুমব্রু বাজারে অবস্থান করছিলেন স্থানীয় যুবক মোস্তাকিম আজিজ।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঐ স্থান থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন যেখানে কয়েক রাউন্ড স্পষ্ট গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া গেছে।
একই সময়ে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শফি মুঠোফোনে ঢাকা পোস্ট’কে বলেন, ‘ ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছি। রাতে এমন পরিস্থিতি হলে আমরা স্থানীয়রা স্বাভাবিকভাবে শংকায় থাকি। জানিনা ওপারে আসলে কি হতে চলেছে।’
স্থানীয়রা আরো জানান, সীমান্তের অপর প্রান্তে রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির দুটি ক্যাম্প রয়েছে।
তাদের ধারণা, ক্যাম্পগুলোর মাঝামাঝি স্থান নারিকেল বাগিচায় দশদিন পর আবারো সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে।
এর আগে গত ১০ আগস্ট রাতে, দীর্ঘদিন পর রাতভর চলতে থাকা গোলাগুলির শব্দ এপারে আসে এবং শুন্য রেখার প্রায় ৩০০ মিটার দূরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটা সে ঘটনায় বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছিলেন, ৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম খায়রুল আলম।
‘আরকান আর্মির সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী অন্য কোনো সংগঠন আরসা-আরএসওর মধ্যে গোলাগুলি হতে পারে’ এমন ধারণার কথাও সেসময় বলেছিলেন বিজিবির এই কর্মকর্তা।
এ ঘটনার পরদিন সকালে ঘুমধুম সীমান্তের পার্শ্ববর্তী উখিয়ার বালুখালীতে বিজিবির কাছে অস্ত্র সহ জীবন তঞ্চ্যঙ্গা নামে নিজেকে ‘আরকান আর্মি’র সদস্য দাবী করা ঘুমধুমের স্থানীয় এক যুবক বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট দুপুরে বিজিবি’র তুমব্রু বিওপির দুই ব্যক্তিকে আটক করে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, আটককৃতরা রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি’র সহযোগী।
সীমান্ত সুরক্ষা ও সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা বিবেচনায় তৎপরতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিজিবি।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি দাবী করে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার রাখাইন অংশের পুরো ২৭১ কিলোমিটার এলাকায় তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে জান্তা’কে প্রতিরোধ শুরুর এক বছরেরও বেশি পরে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার রাখাইন অংশের পুরো ২৭১ কিলোমিটার নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবী করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি।