ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শোক পালন: সাগরতীরের তারকা হোটেলগুলোতে থার্টি-ফার্স্টের আয়োজন বাতিল চকরিয়ায় যুবদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা রুমিন ফারহানা-নীরবসহ ৮ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার থার্টি ফার্স্ট নাইট:জেলা পুলিশের কঠোর বিধি-নিষেধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে যৌথ অভিযান কোস্টগার্ডের খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের শোক খালেদা জিয়ার স্মৃতিচিহ্ন এবং একটি চেয়ার বিএনপি চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শোক খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার শোক খালেদার সেবাসঙ্গী ফাতেমা খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, একদিনের সাধারণ ছুটি খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাত দিন শোক পালনের কর্মসূচি বিএনপির রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার ৪১ বছর
শ্রীলঙ্কার সাহায্য নাকি নিজেদের যোগ্যতা!

টাইগারদের সুপার ফোরে ওঠার লড়াইয়ের ময়নাতদন্ত

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ সুপার ফোরে উঠেছে—এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা। অনেকেই দাবি করছেন, শ্রীলঙ্কার জয়ে ভর করেই বাংলাদেশ টিকে গেছে। কিন্তু আসল চিত্রটা ভিন্ন। আফগানিস্তানের ব্যর্থতাই তাদের বিদায়ের কারণ হয়েছে, আর তুলনামূলকভাবে ভালো খেলার ফলেই বাংলাদেশ পরের পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।

আফগানিস্তানের গ্রুপপর্বের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়, তারা কোথায় পিছিয়ে গেছে। হংকংয়ের বিপক্ষে বড় জয় ছাড়া তাদের আর কোনো স্মরণীয় সাফল্য নেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৭০ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে ১৮ ওভারের মধ্যেই হেরে বসেছে।

পুরো গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের ব্যাটিং ভর করেছে গুটিকয়েক ইনিংসে। নবীর ৬২, হংকংয়ের বিপক্ষে সাদিক অটলের ৭৩ আর ওমরজাইয়ের ফিফটি ছাড়া আর কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান নেই। বেশিরভাগ সময় ব্যাটাররা ২০–৩০ রান তুলতেই হিমশিম খেয়েছেন। বোলিংয়েও প্রত্যাশিত ধার ছিল না। সেরা দশ বোলারের তালিকায় আফগানিস্তানের মাত্র একজন জায়গা পেয়েছেন, যেখানে বাংলাদেশের আছেন তিনজন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ দেখিয়েছে তুলনামূলক স্থিতিশীল দলীয় পারফরম্যান্স। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের ম্যাচেও জাকের আলি আর শামীম হোসেনের ৪০+ ইনিংস ছিল। হংকংয়ের বিপক্ষে লিটনের ৫৯, আফগানিস্তানের বিপক্ষে তামিমের ৫২ দলের লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ডু-অর-ডাই ম্যাচে বাংলাদেশ ১৫৫ রান ডিফেন্ড করে জয় পেয়েছে। চাপের ম্যাচে জয়লাভই বলে দেয়, কে মানসিকভাবে বেশি প্রস্তুত ছিল।

এশিয়া কাপ ইতিহাসে বাংলাদেশ একাধিকবার “সবাই হারবে” বলা পরিস্থিতি থেকেও ফাইনালে উঠেছে। এবারও তারা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। তাই বাংলাদেশ সুপার ফোরে গেছে শ্রীলঙ্কার সহায়তায় নয়, বরং নিজেদের কনসিসটেন্ট দলীয় পারফরম্যান্সের কারণেই। আর আফগানিস্তানের অতিরিক্ত শর্ট বল, এক্সট্রা, আর দিশাহীন ব্যাটিংই তাদের বিদায়ের মূল কারণ।

সব মিলিয়ে, ক্রিকেট মানে খালি কয়েকটা ফ্লেয়ারফুল শট নয়, ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই এখানে মুখ্য। সেই জায়গাতেই বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থেকেছে, আর যোগ্যতর দল হিসেবেই জায়গা করে নিয়েছে সুপার ফোরে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

This will close in 6 seconds

শ্রীলঙ্কার সাহায্য নাকি নিজেদের যোগ্যতা!

টাইগারদের সুপার ফোরে ওঠার লড়াইয়ের ময়নাতদন্ত

আপডেট সময় : ০৮:১২:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ সুপার ফোরে উঠেছে—এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা। অনেকেই দাবি করছেন, শ্রীলঙ্কার জয়ে ভর করেই বাংলাদেশ টিকে গেছে। কিন্তু আসল চিত্রটা ভিন্ন। আফগানিস্তানের ব্যর্থতাই তাদের বিদায়ের কারণ হয়েছে, আর তুলনামূলকভাবে ভালো খেলার ফলেই বাংলাদেশ পরের পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।

আফগানিস্তানের গ্রুপপর্বের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়, তারা কোথায় পিছিয়ে গেছে। হংকংয়ের বিপক্ষে বড় জয় ছাড়া তাদের আর কোনো স্মরণীয় সাফল্য নেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৭০ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে ১৮ ওভারের মধ্যেই হেরে বসেছে।

পুরো গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের ব্যাটিং ভর করেছে গুটিকয়েক ইনিংসে। নবীর ৬২, হংকংয়ের বিপক্ষে সাদিক অটলের ৭৩ আর ওমরজাইয়ের ফিফটি ছাড়া আর কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান নেই। বেশিরভাগ সময় ব্যাটাররা ২০–৩০ রান তুলতেই হিমশিম খেয়েছেন। বোলিংয়েও প্রত্যাশিত ধার ছিল না। সেরা দশ বোলারের তালিকায় আফগানিস্তানের মাত্র একজন জায়গা পেয়েছেন, যেখানে বাংলাদেশের আছেন তিনজন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ দেখিয়েছে তুলনামূলক স্থিতিশীল দলীয় পারফরম্যান্স। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের ম্যাচেও জাকের আলি আর শামীম হোসেনের ৪০+ ইনিংস ছিল। হংকংয়ের বিপক্ষে লিটনের ৫৯, আফগানিস্তানের বিপক্ষে তামিমের ৫২ দলের লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ডু-অর-ডাই ম্যাচে বাংলাদেশ ১৫৫ রান ডিফেন্ড করে জয় পেয়েছে। চাপের ম্যাচে জয়লাভই বলে দেয়, কে মানসিকভাবে বেশি প্রস্তুত ছিল।

এশিয়া কাপ ইতিহাসে বাংলাদেশ একাধিকবার “সবাই হারবে” বলা পরিস্থিতি থেকেও ফাইনালে উঠেছে। এবারও তারা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। তাই বাংলাদেশ সুপার ফোরে গেছে শ্রীলঙ্কার সহায়তায় নয়, বরং নিজেদের কনসিসটেন্ট দলীয় পারফরম্যান্সের কারণেই। আর আফগানিস্তানের অতিরিক্ত শর্ট বল, এক্সট্রা, আর দিশাহীন ব্যাটিংই তাদের বিদায়ের মূল কারণ।

সব মিলিয়ে, ক্রিকেট মানে খালি কয়েকটা ফ্লেয়ারফুল শট নয়, ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই এখানে মুখ্য। সেই জায়গাতেই বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থেকেছে, আর যোগ্যতর দল হিসেবেই জায়গা করে নিয়েছে সুপার ফোরে।