ঢাকা ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাত্ররাজনীতিতে পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ইনানীতে আত্মপ্রকাশ করলো শফির বিল জেলে কল্যাণ সমিতি

‘ঘুরতে’ আসলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে আছেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিন কক্সবাজার আসা জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি’র ৫ শীর্ষ নেতা হোটেল পরিবর্তন করে এখন পর্যটন শহরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন।

এনসিপিরি এই শীর্ষ নেতারা কক্সবাজারে আসার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে রয়েছেন। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) জসীম উদ্দিন জানান, এনসিপির নেতারা আসবেন বিষয়টি নিয়ে পুলিশ অবগত ছিলেন না। তবে যখন থেকে কক্সবাজার এসেছেন তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখছেন।

জসীম উদ্দিন বলেন, কোনো সিকিউরিটি থ্রেট নেই। তাই বিশেষ কোনো কিছুও না। দেশের একজন নাগরিকের যতোটুকু নিরাপত্তা দরকার তাই দিচ্ছি৷ তবে এই মুহুর্তে তারা যেহেতু রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ তাই তাদের মুভমেন্ট গুলো নজরদারিতে রেখে যতোটুকু দরকার নিরাপত্তা দিচ্ছি।

এনসিপির নেতারা কখন কক্সবাজার ত্যাগ করবেন এই বিষয়ে পুলিশও অবগত নয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন।

এদিকে বুধবার দুপুর ১ টার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরের ইনানীর জালিয়াপালং এলাকার হোটেল সী পার্ল রিসোর্ট ত্যাগ করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীর উদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম আহবায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং তাঁর স্ত্রী দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। তাদের সাথে আছেন সারজিসের স্ত্রীও।

হোটেলটির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কামরুজ্জামান বলেন, দুপুরে তারা চেক আউট করেন এবং তারা প্রবেশ করার দিন গতকাল ও আজ আমাদের হোটেলে কোনো বিদেশী নাগরিক অবস্থান করেনি।

কক্সবাজার শহরে পৌঁছে কলাতলীর শালিক রেস্টুরেন্টে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন বলে জানান রেস্টুরেন্টের একজন কর্মকর্তা। এরপর বিকেল ৩ টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে অবস্থিত ‘প্রাসাদ প্যারাডাইজ’ হোটেলে উঠেন তারা।

হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজের ব্যবস্থাপক মো. ইয়াকুব আলী বিডিনিউজকে জানান, সাড়ে ৩টার দিকে তারা হোটেলে উঠেন।

ইয়াকুব আলী বলেন, প্রথমে তারা পার্শ্ববর্তী একটি হোটেলে গিয়েছিলেন সম্ভবত সেখানে ভালো লাগেনি, তাই আমাদের এখানে এসেছেন। আগে থেকে বুকিং ছিলোনা। আজকে এসেই চেক ইন করেছেন, তবে কখন তারা চলে যাবেন সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) তারা হোটেল থেকে বেরিয়ে সৈকতে সময় কাটাচ্ছেন।

তাদের সাথে থাকা স্থানীয় এনসিপির একজন সংগঠক বিডিনিউজকে জানান, গতকাল যখন নেতারা এসেছিলেন কক্সবাজারের স্থানীয় কোনো নেতাকর্মীই বিষয়টি জানেন না। তারা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সফরে এসেছেন। মিডিয়ায় খবর পাওয়ার পর কয়েকজন নেতাকর্মী রাতে হোটেলে দেখা করেন। ছড়িয়ে পড়া গুজবে নেতাদের বিরক্ত মনে হয়েছে তাদের৷

তবে আজ কক্সবাজারে আসার পর থেকে স্থানীয় কয়েকজন সংগঠক তাদের সাথে আছেন। তবে কখন নাগাদ কক্সবাজার ত্যাগ করবেন এ বিষয়ে তারাও অবগত নন বলে জানান এই সংগঠক।

এদিকে, বুধবার বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর পক্ষ থেকে দলের রাজনৈতিক পর্ষদকে না জানিয়ে কক্সবাজার সফরে আসা পাঁচ নেতাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ পাঠানো হয়েছে ।

নোটিশে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের কাছে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে নেতাদের লিখিত বক্তব্যে ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হয়েছে।

এই নোটিশের জবাব দিতে হলে আগামীকাল দুপুরের আগে তাদের ঢাকায় ফিরে যেতে হবে।

এনসিপিরি নেতাদের এমন ‘গোপনে’ ও বিশেষ দিনে কক্সবাজার আগমন ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মঙ্গলবার ইনানীর হোটেলের সামনেই বিক্ষোভ করেন সেখানকার স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে থাকা উখিয়া উপজেলা বিএনপির নেতা সেলিম সিরাজী বলেন, বিক্ষোভ করার জন্য কোনো দলীয় নির্দেশনা ছিলোনা। মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়েই আমরা গিয়েছি।

“তাদের দল থেকে আজকে তাদেরকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তাই আমাদের বিক্ষোভ করা যে যৌক্তিক সেটা তো এখানেই প্রমাণিত।”

বিক্ষোভে থাকা জেলা যুবদলের সদস্য রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, এমন বিশেষ দিনে এসব গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এখানে কেনো আসবেন? এটা তো সন্দেহের। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়েই এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে বিক্ষোভ করেছি।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে?

This will close in 6 seconds

‘ঘুরতে’ আসলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে আছেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

আপডেট সময় : ১০:৫৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিন কক্সবাজার আসা জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি’র ৫ শীর্ষ নেতা হোটেল পরিবর্তন করে এখন পর্যটন শহরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন।

এনসিপিরি এই শীর্ষ নেতারা কক্সবাজারে আসার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে রয়েছেন। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) জসীম উদ্দিন জানান, এনসিপির নেতারা আসবেন বিষয়টি নিয়ে পুলিশ অবগত ছিলেন না। তবে যখন থেকে কক্সবাজার এসেছেন তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখছেন।

জসীম উদ্দিন বলেন, কোনো সিকিউরিটি থ্রেট নেই। তাই বিশেষ কোনো কিছুও না। দেশের একজন নাগরিকের যতোটুকু নিরাপত্তা দরকার তাই দিচ্ছি৷ তবে এই মুহুর্তে তারা যেহেতু রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ তাই তাদের মুভমেন্ট গুলো নজরদারিতে রেখে যতোটুকু দরকার নিরাপত্তা দিচ্ছি।

এনসিপির নেতারা কখন কক্সবাজার ত্যাগ করবেন এই বিষয়ে পুলিশও অবগত নয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন।

এদিকে বুধবার দুপুর ১ টার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরের ইনানীর জালিয়াপালং এলাকার হোটেল সী পার্ল রিসোর্ট ত্যাগ করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীর উদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম আহবায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং তাঁর স্ত্রী দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। তাদের সাথে আছেন সারজিসের স্ত্রীও।

হোটেলটির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কামরুজ্জামান বলেন, দুপুরে তারা চেক আউট করেন এবং তারা প্রবেশ করার দিন গতকাল ও আজ আমাদের হোটেলে কোনো বিদেশী নাগরিক অবস্থান করেনি।

কক্সবাজার শহরে পৌঁছে কলাতলীর শালিক রেস্টুরেন্টে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন বলে জানান রেস্টুরেন্টের একজন কর্মকর্তা। এরপর বিকেল ৩ টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে অবস্থিত ‘প্রাসাদ প্যারাডাইজ’ হোটেলে উঠেন তারা।

হোটেল প্রাসাদ প্যারাডাইজের ব্যবস্থাপক মো. ইয়াকুব আলী বিডিনিউজকে জানান, সাড়ে ৩টার দিকে তারা হোটেলে উঠেন।

ইয়াকুব আলী বলেন, প্রথমে তারা পার্শ্ববর্তী একটি হোটেলে গিয়েছিলেন সম্ভবত সেখানে ভালো লাগেনি, তাই আমাদের এখানে এসেছেন। আগে থেকে বুকিং ছিলোনা। আজকে এসেই চেক ইন করেছেন, তবে কখন তারা চলে যাবেন সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) তারা হোটেল থেকে বেরিয়ে সৈকতে সময় কাটাচ্ছেন।

তাদের সাথে থাকা স্থানীয় এনসিপির একজন সংগঠক বিডিনিউজকে জানান, গতকাল যখন নেতারা এসেছিলেন কক্সবাজারের স্থানীয় কোনো নেতাকর্মীই বিষয়টি জানেন না। তারা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সফরে এসেছেন। মিডিয়ায় খবর পাওয়ার পর কয়েকজন নেতাকর্মী রাতে হোটেলে দেখা করেন। ছড়িয়ে পড়া গুজবে নেতাদের বিরক্ত মনে হয়েছে তাদের৷

তবে আজ কক্সবাজারে আসার পর থেকে স্থানীয় কয়েকজন সংগঠক তাদের সাথে আছেন। তবে কখন নাগাদ কক্সবাজার ত্যাগ করবেন এ বিষয়ে তারাও অবগত নন বলে জানান এই সংগঠক।

এদিকে, বুধবার বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর পক্ষ থেকে দলের রাজনৈতিক পর্ষদকে না জানিয়ে কক্সবাজার সফরে আসা পাঁচ নেতাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ পাঠানো হয়েছে ।

নোটিশে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের কাছে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে নেতাদের লিখিত বক্তব্যে ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হয়েছে।

এই নোটিশের জবাব দিতে হলে আগামীকাল দুপুরের আগে তাদের ঢাকায় ফিরে যেতে হবে।

এনসিপিরি নেতাদের এমন ‘গোপনে’ ও বিশেষ দিনে কক্সবাজার আগমন ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মঙ্গলবার ইনানীর হোটেলের সামনেই বিক্ষোভ করেন সেখানকার স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে থাকা উখিয়া উপজেলা বিএনপির নেতা সেলিম সিরাজী বলেন, বিক্ষোভ করার জন্য কোনো দলীয় নির্দেশনা ছিলোনা। মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়েই আমরা গিয়েছি।

“তাদের দল থেকে আজকে তাদেরকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তাই আমাদের বিক্ষোভ করা যে যৌক্তিক সেটা তো এখানেই প্রমাণিত।”

বিক্ষোভে থাকা জেলা যুবদলের সদস্য রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, এমন বিশেষ দিনে এসব গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এখানে কেনো আসবেন? এটা তো সন্দেহের। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়েই এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে বিক্ষোভ করেছি।