কক্সবাজার জেলা প্রশাসক গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে উত্তেজিত দর্শকদের ব্যপক হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুরো স্টেডিয়াম এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ভাঙচুর করা হয় ড্রেসিং রুম, প্রেসবক্সসহ পুরো স্টেডিয়াম ভবন, উপড়ে ফেলা হয় মাঠের গোলপোস্ট।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাটিচার্জ করেছে। এসময় কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী, সদর থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন, একাধিক পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় কক্সবাজারের রামু ও টেকনাফ উপজেলার মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ফাইনাল ম্যাচটি। তবে খেলা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জুমার দিন হলেও বেলা ১২ থেকেই গ্যালারিতে প্রবেশ করে দর্শকরা।
দুপুর ২টার মধ্যেই ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত দর্শক প্রবেশ করে গ্যালারিতে। একপর্যায়ে উত্তেজিত দর্শকরা প্রবেশ গেইট ভেঙে মূল মাঠে ঢুকে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে পুরো মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। মাঠের ভেতরে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
মাঠের ভেতর থেকে দর্শকদের বের করতে সেনাবাহিনীসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। এরপর বের করে দেয়া দর্শকেরা বাইরে থেকে হামলা শুরু করেন।
পরে সময় বিবেচনায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খেলা স্থগিত করে আয়োজক কমিটি। এই ঘোষণা আসার পর মুহুর্তের মধ্যেই ফের মাঠে প্রবেশ করে হাজারো দর্শক। শুরু করে ব্যপক ভাঙচুর।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য মোহাম্মদ হুসাইন জানান, স্টেডিয়ামের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবকিছু তছনছ করা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তিনি কথা বলতে পারেননি।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত সেখান থেকে ৩০ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন এঘটনায়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, আমাদের (পুলিশের) অনেকেই আহত আছেন। বাকিটা পরে বলা যাবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব খান জানান, গ্যালারিতে ধারণ ক্ষমতার বেশি দর্শক উপস্থিত হওয়ায় এধরণের ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি দর্শকরা যেনো কোনো ভাবে আহত না হয়। কিন্তু অনেকেক উশৃংখল আচরণ করাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের সদস্যরা চেষ্টা করেছেন। এখন পর্যন্ত কতোজন আহত বলতে পারবোনা। পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে এলে পরবর্তীতে জানানো হবে।
নাজমুস সাকিব খান বলেন, এঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থার বিষয়ে পরবর্তীতে উর্ধতন কর্মকর্তারা বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দর্শকদের অভিযোগ, তারা আগেই টিকিট কিনেছেন। টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারিত হলেও অধিকাংশকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়েছে টিকিটের জন্য। অথচ অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেও তারা মাঠে প্রবেশ করতে পারছিলেন না।
টেকনাফ থেকে আসা সাব্বির নামের এক দর্শক বলেন, “আমি ২০০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছি, অথচ গেইটে দাঁড়িয়ে ছিলাম ঘণ্টাখানেক। কেউ ঢুকতে দিচ্ছিল না। পরে দেখি সবাই একসাথে গেইট ঠেলে ঢুকে গেল।
খেলা দেখতে আসা কামাল উদ্দিন নামে আরেকজন বলেন, “বাচ্চা নিয়ে এসেছিলাম খেলা দেখতে। এই ভিড় আর ধাক্কাধাক্কিতে বাচ্চা সামলানো দায় হয়ে গিয়েছিল। আয়োজকরা ঠিকমতো প্রস্তুত ছিল না।”
রাহুল মহাজন: 

























