ঢাকা ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কক্সবাজারে খালেদা জিয়ার শেষ সফর ছিলো ২০১৭ সালে থার্টি ফার্স্টে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হবে: মানতে হবে পুলিশী নির্দেশনা, বার বন্ধ থাকবে শোক পালন: সাগরতীরের তারকা হোটেলগুলোতে থার্টি-ফার্স্টের আয়োজন বাতিল চকরিয়ায় যুবদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা রুমিন ফারহানা-নীরবসহ ৮ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার থার্টি ফার্স্ট নাইট:জেলা পুলিশের কঠোর বিধি-নিষেধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে যৌথ অভিযান কোস্টগার্ডের খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের শোক খালেদা জিয়ার স্মৃতিচিহ্ন এবং একটি চেয়ার বিএনপি চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শোক খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার শোক খালেদার সেবাসঙ্গী ফাতেমা খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, একদিনের সাধারণ ছুটি

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে সি-ট্রাকের উদ্বোধন, জনপ্রতি ৩৫ টাকায় যাতায়াত করবেন ২৫০ মানুষ

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে সি-ট্রাক সার্ভিসের উদ্বোধন করা হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মহেশখালী থেকে কক্সবাজার ৬ নং ঘাটে ৩৫ টাকা এবং নুনিয়ারছড়া ঘাটে ৩০ টাকা। যাতায়াত করতে পারবেন ২৫০ জন যাত্রী। ফলে এই রুটের দীর্ঘদিন দিনের ভোগান্তি কমবে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল এগারোটার দিকে নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএর ঘাট থেকে ফিতা এবং বেলুন উড়িয়ে সি-ট্রাক সার্ভিসের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম শাখাওয়াত হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান।

এসময় সি-ট্রাকে চড়ে মহেশখালীতে গিয়ে মহেশখালীবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের যদি উন্নয়ন না হয় তাহলে ঢাকায় আমাদের মেট্রোরেলে চড়ে কোন লাভ নেই। আমরা উন্নয়ন করতে চাই কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে যে মামলা দায়ের করা হয় সেকারণে উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হয়।

এসময় ব্যঙ্গ করে তাঁর নিজের এলাকা বরিশাল এবং মহেশখালীর মানুষকে মামলাবাজ বলে অবিহিত করেন। এছাড়া তিনি এই রুটে আরও একটি ট্রাক ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন।

বুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, মহেশখালীতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে, মাতারবাড়িতে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে গেলো ২০ বছরে কোন উন্নয়ন হয়নি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে মহেশখলীবাসীর জন্য। একটা নিরাপদ নৌযান সি-ট্রাক ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুত্রপাত হয়েছে কিন্তু সকল সমস্যার সমাধান হয়নি।

“মহেশখালী ঘাটের টোল ১৯৯১ সালে তৎকালীন সচিব মোকাম্মেল হক সাহেব তুলে দিয়েছিলেন। সে বলেছিলেন দুর্যোগপূর্ণ এলাকার দরিদ্র মানুষ তাদের টেল নেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেটা বহুদিন ছিলো না। কিন্তু এখন নানারকম ছলে এবং প্রয়োজনে একবার বলছে পৌরসভার জন্য, একবার বলছে জেলা পরিষদের জন্য নানাভাবে টোল তোলা হচ্ছে। আমরা মনে করি আপনারা সকলে দাবি তুললে সরকারের প্রতি এটা বাতিল হতে পারে।” বলেন সলিমুল্লাহ খান।

সি-ট্রাক সেবা চালুর খবরে দ্বীপবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের জোয়ার বইছে। স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে কাঠের নৌকা, লোহার গামবোট ও স্পিডবোটে করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করতে হতো। এই যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণ করত একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, যারা যাত্রীদের নানাভাবে জিম্মি করে রাখত। নতুন এই সি-ট্রাক চালু হওয়ায় সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা।

বিআইডব্লিউটিএ’র কক্সবাজার নদীবন্দর (কস্তুরাঘাট) শাখার সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, আপাতত প্রতিদিন তিনবার করে সি-ট্রাক চলাচল করবে। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ভবিষ্যতে ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সি-ট্রাক চলাচলের সময়সূচি হলোকক্সবাজার থেকে মহেশখালী: সকাল ৮:৩০, দুপুর ১২:০০, সন্ধ্যা ৬:০০ এবং মহেশখালী থেকে কক্সবাজার: সকাল ৭:৩০, বেলা ১১:০০, বিকেল ৫:০০।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মোঃ সলিমুল্লাহ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, পুলিশ সুপার সাইফউদ্দীন শাহীন সহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

কক্সবাজারে খালেদা জিয়ার শেষ সফর ছিলো ২০১৭ সালে

This will close in 6 seconds

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে সি-ট্রাকের উদ্বোধন, জনপ্রতি ৩৫ টাকায় যাতায়াত করবেন ২৫০ মানুষ

আপডেট সময় : ০৪:১৯:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে সি-ট্রাক সার্ভিসের উদ্বোধন করা হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মহেশখালী থেকে কক্সবাজার ৬ নং ঘাটে ৩৫ টাকা এবং নুনিয়ারছড়া ঘাটে ৩০ টাকা। যাতায়াত করতে পারবেন ২৫০ জন যাত্রী। ফলে এই রুটের দীর্ঘদিন দিনের ভোগান্তি কমবে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল এগারোটার দিকে নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএর ঘাট থেকে ফিতা এবং বেলুন উড়িয়ে সি-ট্রাক সার্ভিসের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম শাখাওয়াত হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান।

এসময় সি-ট্রাকে চড়ে মহেশখালীতে গিয়ে মহেশখালীবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের যদি উন্নয়ন না হয় তাহলে ঢাকায় আমাদের মেট্রোরেলে চড়ে কোন লাভ নেই। আমরা উন্নয়ন করতে চাই কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে যে মামলা দায়ের করা হয় সেকারণে উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হয়।

এসময় ব্যঙ্গ করে তাঁর নিজের এলাকা বরিশাল এবং মহেশখালীর মানুষকে মামলাবাজ বলে অবিহিত করেন। এছাড়া তিনি এই রুটে আরও একটি ট্রাক ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন।

বুদ্ধিজীবী ও চিন্তাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, মহেশখালীতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে, মাতারবাড়িতে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে গেলো ২০ বছরে কোন উন্নয়ন হয়নি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে মহেশখলীবাসীর জন্য। একটা নিরাপদ নৌযান সি-ট্রাক ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুত্রপাত হয়েছে কিন্তু সকল সমস্যার সমাধান হয়নি।

“মহেশখালী ঘাটের টোল ১৯৯১ সালে তৎকালীন সচিব মোকাম্মেল হক সাহেব তুলে দিয়েছিলেন। সে বলেছিলেন দুর্যোগপূর্ণ এলাকার দরিদ্র মানুষ তাদের টেল নেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেটা বহুদিন ছিলো না। কিন্তু এখন নানারকম ছলে এবং প্রয়োজনে একবার বলছে পৌরসভার জন্য, একবার বলছে জেলা পরিষদের জন্য নানাভাবে টোল তোলা হচ্ছে। আমরা মনে করি আপনারা সকলে দাবি তুললে সরকারের প্রতি এটা বাতিল হতে পারে।” বলেন সলিমুল্লাহ খান।

সি-ট্রাক সেবা চালুর খবরে দ্বীপবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের জোয়ার বইছে। স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে কাঠের নৌকা, লোহার গামবোট ও স্পিডবোটে করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করতে হতো। এই যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণ করত একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, যারা যাত্রীদের নানাভাবে জিম্মি করে রাখত। নতুন এই সি-ট্রাক চালু হওয়ায় সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা।

বিআইডব্লিউটিএ’র কক্সবাজার নদীবন্দর (কস্তুরাঘাট) শাখার সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, আপাতত প্রতিদিন তিনবার করে সি-ট্রাক চলাচল করবে। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ভবিষ্যতে ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সি-ট্রাক চলাচলের সময়সূচি হলোকক্সবাজার থেকে মহেশখালী: সকাল ৮:৩০, দুপুর ১২:০০, সন্ধ্যা ৬:০০ এবং মহেশখালী থেকে কক্সবাজার: সকাল ৭:৩০, বেলা ১১:০০, বিকেল ৫:০০।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মোঃ সলিমুল্লাহ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, পুলিশ সুপার সাইফউদ্দীন শাহীন সহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।