কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বছর ব্যাপী নানান কর্মসূচি আয়োজন করে যাচ্ছে বিদ্যালয়টির প্রাক্তনীদের সংগঠন কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
বিভিন্ন জাতীয় দিবস ছাড়াও সামাজিক নানান কর্মসূচির অংশ হিসেবে এবারের রমজানে সংগঠনটি হাতে নিয়েছে মহাসমারোহে ইফতার আয়োজন। ‘ ‘কসউবিয়ান ইফতার’ শিরোনামের ওই কর্মসূচিতে থাকছে নানান আয়োজন। এতে ১৫০ জন এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু অংশ নেবেন প্রাক্তনীদের সাথে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বার্তা দেয়া হবে ‘সলিডারিটি ফর প্যালেস্টাইন’, বঙ্গোপসাগরের পথ বেয়ে ইসলামের আলো: ১৫০ বছরের ঐতিহ্য, পরিবর্তন ও প্রগতির যাত্রা শিরোনামে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিবেন ইসলামিক বিশেষজ্ঞ ও ইতিহাসবিদরা।
বিশাল এ আয়োজন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহবায়ক শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি জানান, ১৫০ বছরের পুনর্মিলনীর আগে এটি প্রাক্তন ছাত্রদের আরেকটি বড় জমায়েত হতে যাচ্ছে।
এটিকে ‘গ্র্যান্ড প্রোগ্রামের প্রি-রিহার্সাল’ হিসেবে উল্লেখ করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
বিদ্যালয়ের ১৯৬৯ ব্যাচের ছাত্র অধ্যক্ষ ওমর ফারুক টিটিএনকে বলেন, “ভালো উদ্যোগ, ১৫০ বছরে এসে এমন বছর জুড়ে আয়োজনের ফলে প্রজন্মের থেকে প্রজন্মের মাঝে একটি ভাতৃত্ববোধের সেতু তৈরি হচ্ছে।”
“আয়োজকরা অনেক ক্রিয়েটিভ, আশাকরি সফলতার সাথে শেষ হবে এই গ্র্যান্ড ইফতার আয়োজন” বলেন ওমর ফারুক।
১৯৭৫ ব্যাচের ছাত্র কবি ও ব্যাংকার জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, “নানান পেশার প্রাক্তন ছাত্রদের একটা মিলনমেলা হবে। ১৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু আমাদের সাথে ইফতার করবে এটা দারুণ একটা ব্যাপার। কক্সবাজারের ছেলেদের মধ্যে একটা উচ্ছ্বাস আছে, আমাদের স্কুলের এমন আয়োজন সেই উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। এটা অসাধারণ ঐক্য।”
সকল ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে এমন আয়োজন কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ইতিহাসে প্রথম বারের মতোই হচ্ছে বলে জানান আয়োজকরা। এনিয়ে উৎফুল্লতা দেখা গেছে প্রাক্তন ছাত্রদের মাঝে।
১৯৮২ ব্যাচের ছাত্র রাজনীতিক রাশেদ মোহাম্মদ আলী টিটিএনকে জানান, তাদের ব্যাচে সমন্বয় চলছে এতো বড় আয়োজনে অংশগ্রহণের। তিনি বলেন, “একটা সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ আছে কক্সবাজার হাইস্কুলে, “আগামীর যে বড় আয়োজনটা হবে তার আগে এমন একটা আয়োজন প্রাক্তনদের মধ্যে বন্ডিংটা আরো বাড়বে”।
১৯৯৫ ব্যাচের ছাত্র ব্যাংকার আহসান মাহমুদ বলেন, “এতো প্রাক্তন ছাত্র একসাথে ইফতার করবে এটা আমাদের কাছে আনন্দের। ১৫০ বছরের বড় আয়োজনের আগে আমাদের আরও সংগঠিত করবে কসউবিয়ান ইফতার কর্মসূচিটি।
২০০৪ ব্যাচের ছাত্র কানন বড়ুয়া বিশাল বলেন, “কক্সবাজার হাইস্কুলের ঐতিহ্য ফুটে উঠবে আয়োজনটি। এর আগের আয়োজন গুলোও তার স্বাক্ষর রেখেছে। এটিও ব্যতিক্রম হবেনা।”
২০১৫ ব্যাচের ছাত্র আতহার সাকিব জানান, শুধু ইফতারে সীমাবদ্ধ নয়, এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরো সৃষ্টিশীল কর্মসূচি। যা তাদের স্কুলের প্রাক্তনীদের মেধা ও মনন জানান দিবে, সেইসাথে নতুনদের সাথে আগের প্রজন্মের হৃদ্যতা বাড়বে।
গেলো বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের অন্যান্য কর্মসূচি গুলো ছিলো- গ্রাফিতি উন্মোচন ও শীতবস্ত্র বিতরণ, সুন্দর হস্তাক্ষরে হাইস্কুল শিরোনামে ছয়টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়স বিশেষ প্রতিযোগিতা, যেখানে ১৫০ জনকে পুরস্কার দেয়া হয়, ২১ ফেব্রুয়ারিতে সার্ধশততে একুশের দ্রোহ শিরোনামে আয়োজন – যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে নিজ ভাষায় কবিতা পাঠ করেন। যা দেশব্যাপী বেশ সাড়া ফেলে।
এর আগে প্রাক্তনীদের এই পরিষদের মাধ্যমে বন্যাদুর্গতদের মাঝে সাড়ে নয় লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হয় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে। যা বিশেষ সাড়া ফেলে।