আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (UNWTO) ঘোষিত এবারের প্রতিপাদ্য, “পর্যটন ও টেকসই রূপান্তর।” এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের ঠিকানা কক্সবাজারে যেমন অপরিসীম সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি ভয়াবহ সংকটও ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
কক্সবাজার কমিউনিটি অ্যালায়েন্স (সিসিএডি) এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রতি বছর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ পর্যটক সমুদ্রসৈকতে ভিড় জমালেও মৌলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আর্থিক সংকটে লাইফগার্ড কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম, যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ সাগরে নেমে জীবন ঝুঁকিতে ফেলেন। এর সঙ্গে মাদক, ছিনতাই আর হয়রানির মতো অপরাধ যোগ হয়ে পুরো পরিবেশকে অস্থির করে তুলছে, ক্ষুণ্ণ করছে দেশের ভাবমূর্তিও।
সংস্থাটি বলছে, সমুদ্রসৈকতের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ বালিয়াড়ি বছর বছর বিলীন হয়ে যাচ্ছে দখলদারদের কারণে। রাজনৈতিক প্রভাব আর ব্যক্তিস্বার্থের কাছে পরিবেশ সুরক্ষা বারবার পরাজিত হচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। নীল অর্থনীতি নিয়ে নানা পরিকল্পনা থাকলেও স্থানীয়দের অংশগ্রহণ নগণ্য। লবণচাষীরা ন্যায্যমূল্য পান না, কৃষিপণ্য হিসেবেও তাদের স্বীকৃতি নেই।
তাদের মতে, স্থানীয় উন্নয়নের পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপ, পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার অভাবও।
বিবৃতিতে কক্সবাজারকে শুধু ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে নয়, বরং নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীল অর্থনীতির বিশ্বমানের মডেল শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি জাতীয় অঙ্গীকারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিসিএডি বলেছে, “প্রকৃতির প্রতি সম্মান, মানুষের প্রতি মর্যাদা এবং উন্নয়নের দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে কক্সবাজারকে জাতীয় গর্বের প্রতীকে রূপান্তর করাই এখন সময়ের দাবি।”