ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু স্ত্রীকে গলা কেটে হ’ত্যা: ঘা’ত’ক স্বামী আটক ১০ বছরে কক্সবাজার সৈকতে ৬০ জনের প্রাণহানি বাড়ছে বাস্তুচ্যুত, কমছে তহবিল- জাতিসংঘ মা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে জয় ভারতে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত, বহু হতাহতের শঙ্কা টেকনাফে কিশোরের হাতে নারী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বামী হাতে স্ত্রী খুন তারেক রহমান চাইলে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদে‌শের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করলো যুক্তরাজ্য প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি শাকিল–ফারজানা ‘‌পুকুরের পানি সব ঘোলা করে ফেলেছি’ ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক রাজনীতিতে সুবাতাস বয়ে আনবে: রিজভী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা কলম্বিয়ার বিপক্ষে দশজনের আর্জেন্টিনার মান বাঁচানো ড্র ভিনিসিয়ুসের গোলে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের জয়

বৈরী আবহাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিন: খাদ্য সংকট

নিম্নচাপ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা চরম দুরবস্থার মুখে পড়েছেন। ছয় দিন ধরে মূল

ভূখণ্ডের সঙ্গে নৌযোগাযোগ বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্য ও জ্বালানি ঘাটতি তৈরি হয়েছে। জ্বালানি না থাকায় তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ।

তীব্র জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপা এলাকায় মিঠা পানির পুকুরে লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। জমে থাকা পানিতে অন্তত ৫০টি বাড়ি তিন দিন ধরে দুর্ভোগ সামলেছে।

শনিবার সকালে বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে নালা কেটে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করেন বলে জানিয়েছেন।

দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে অধিকাংশ মানুষের ফোন বন্ধ হয়ে গেছে। বাইরের সঙ্গে
যোগাযোগ করতে পারছি না। সূর্যের আলো না থাকায় সোলার গুলো
বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। দুর্যোগকালে তারা জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কিন্তু জ্বালানি না থাকায় সেটিও বন্ধ রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, জোয়ারের পানি জমে থাকার কারণে বাসিন্দারা নিজেরাই খাল কেটে পানি সরিয়েছেন। তীব্র জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণপাড়া,
পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপায় মিঠা পানির পুকুর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলামের সাথে
যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করতে গিয়ে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থানরত দ্বীপের বাসিন্দা তৈয়বুল্লাহ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় দ্বীপবাসীর বেশিরভাগ এর মোবাইলে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে দ্বীপে অবস্থানরত বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পেরেছেন
গত ছয় দিন ধরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে তীব্র খাবার সংকট চলছে।

ছয় দিন ধরে নৌযোগাযোগ বন্ধ থাকায় খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। সরকারি প্রকল্পের আওতায় কিছু পরিবার সহায়তা পেলেও অধিকাংশ মানুষ খাদ্য ও
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকটে ভুগছেন বলে জানান তৈয়ুব্যল্লাহ।

এর আগে গতকাল শুক্রবার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন
জানিয়েছিলেন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই তারা
সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৭৬ হাজার কেজি চাল পাঠিয়েছিলেন। ফলে সেখানে খাদ্য সংকট হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এছাড়া সমুদ্র শান্ত হলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জন্য বিশেষ বরাদ্দ সরবরাহ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন টলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, গত ছয় দিন ধরে বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে তবে রোববার থেকে তা
স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চেক এহসান উদ্দিন বলেন, ‘সংকট মোকাবিলায় আগেই চাল পাঠানো হয়েছে। ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে রোববার থেকে নৌযোগাযোগ পুনরায় চালু হবে।

তিনি আরও জানান দ্বীপে আরও ১০ মেট্রিক টন চালসহ একটি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে যা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রওনা দেবে। কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও স্থানীয় উদ্যোগে পানি অপসারণ করা হয়েছে।

“যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বাসিন্দারা কিছুটা কষ্টে রয়েছেন, তবে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশাবাদী”- বলেন ইউএনও এহসান।

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

বৈরী আবহাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিন: খাদ্য সংকট

আপডেট সময় : ০৮:৩০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

নিম্নচাপ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা চরম দুরবস্থার মুখে পড়েছেন। ছয় দিন ধরে মূল

ভূখণ্ডের সঙ্গে নৌযোগাযোগ বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্য ও জ্বালানি ঘাটতি তৈরি হয়েছে। জ্বালানি না থাকায় তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ।

তীব্র জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপা এলাকায় মিঠা পানির পুকুরে লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। জমে থাকা পানিতে অন্তত ৫০টি বাড়ি তিন দিন ধরে দুর্ভোগ সামলেছে।

শনিবার সকালে বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে নালা কেটে পানি অপসারণের ব্যবস্থা করেন বলে জানিয়েছেন।

দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে অধিকাংশ মানুষের ফোন বন্ধ হয়ে গেছে। বাইরের সঙ্গে
যোগাযোগ করতে পারছি না। সূর্যের আলো না থাকায় সোলার গুলো
বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। দুর্যোগকালে তারা জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কিন্তু জ্বালানি না থাকায় সেটিও বন্ধ রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, জোয়ারের পানি জমে থাকার কারণে বাসিন্দারা নিজেরাই খাল কেটে পানি সরিয়েছেন। তীব্র জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণপাড়া,
পশ্চিমপাড়া ও গলাচিপায় মিঠা পানির পুকুর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলামের সাথে
যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করতে গিয়ে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থানরত দ্বীপের বাসিন্দা তৈয়বুল্লাহ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় দ্বীপবাসীর বেশিরভাগ এর মোবাইলে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে দ্বীপে অবস্থানরত বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পেরেছেন
গত ছয় দিন ধরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে তীব্র খাবার সংকট চলছে।

ছয় দিন ধরে নৌযোগাযোগ বন্ধ থাকায় খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। সরকারি প্রকল্পের আওতায় কিছু পরিবার সহায়তা পেলেও অধিকাংশ মানুষ খাদ্য ও
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকটে ভুগছেন বলে জানান তৈয়ুব্যল্লাহ।

এর আগে গতকাল শুক্রবার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন
জানিয়েছিলেন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই তারা
সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৭৬ হাজার কেজি চাল পাঠিয়েছিলেন। ফলে সেখানে খাদ্য সংকট হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এছাড়া সমুদ্র শান্ত হলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জন্য বিশেষ বরাদ্দ সরবরাহ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন টলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, গত ছয় দিন ধরে বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে তবে রোববার থেকে তা
স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চেক এহসান উদ্দিন বলেন, ‘সংকট মোকাবিলায় আগেই চাল পাঠানো হয়েছে। ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে রোববার থেকে নৌযোগাযোগ পুনরায় চালু হবে।

তিনি আরও জানান দ্বীপে আরও ১০ মেট্রিক টন চালসহ একটি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে যা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রওনা দেবে। কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও স্থানীয় উদ্যোগে পানি অপসারণ করা হয়েছে।

“যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বাসিন্দারা কিছুটা কষ্টে রয়েছেন, তবে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশাবাদী”- বলেন ইউএনও এহসান।