মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে এপারে প্রতিনিয়ত ঢুকছে অবৈধ মাদক ‘ইয়াবা’, নিয়মিত পাচারের নতুন রুটে পরিণত হয়েছে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নস্থ থাইংখালী গ্রামের ‘ধামনখালী’ এলাকা।
নাফের মোহনা ঘেষা এই এলাকায় হঠাৎ বেড়েছে মাদক কারবারিদের দৌরাত্ম্য। এলাকাবাসীরা অভিযোগ তুলেছেন রাখাইন নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবী করা বিদ্রোহী ‘আরকান আর্মি’ ও তাদের সাথে সখ্যতা থাকা রোহিঙ্গাদের যোগসাজশে স্থানীয় কিছু মাদক কারবারিদের একটি চক্র সক্রিয় সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে উঠেছে।
সত্যতা যাচাইয়ে সরজমিনে তথ্য সংগ্রহ করে টিম টিটিএন, সরাসরি মন্তব্য না করলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেক বাসিন্দা দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত ২৬ মে রাতে গোপনে মিয়ানমার থেকে একটি ছোট নৌকা পৌঁছে ধামনখালীর নাফ মোহনায়।
স্থানীয় এক যুবকের দাবী, ঐ নৌকায় ছিলো ওপার থেকে পাঠানো ৩০ হাজার ইয়াবা।
প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত একটি ভিডিওর তথ্যানুযায়ী, ইয়াংগুনে বাস করা জনৈক আবছার ইয়াবাগুলো ৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পৌঁছে দিতে বলেন ধামনখালীর স্থানীয় আব্দুল আজিজ’কে।
ভিডিওতে আবছার’কে বলতে শোনা যায়, আব্দুল আজিজ ইয়াবাগুলো স্থানীয় আবু তাহেরের পুত্র ছৈয়দুল হকের মাধ্যমে ক্যাম্প-৯ এ না পাঠিয়ে স্থানীয় মৃত জালালের ছেলে সাইফুল ইসলাম প্রকাশ আতাইয়া সহ মিলে প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের অবৈধ ইয়াবা আত্মসাৎ করে।
ঘটনার সত্যতা জানতে চাওয়া হলে মকবুল আহমেদের পুত্র আব্দুল আজিজ বলেন, ‘ আমি শিক্ষিত যুবক এধরনের কাজে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসেনা। এলাকার একটি কুচক্রি মহল হয়তো এমন অপপ্রচার করছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি এনজিওতে কর্মরত স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ আজিজের শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে, যারা ইয়াবা পাচারে যুক্ত বলে এলাকায় জোর প্রচার আছে৷ ‘
অন্যদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, ক্যাম্পভিত্তিক একটি সশস্ত্র সংগঠনের অর্থ যোগানদাতা আবছার।
এমন অবস্থায় ইয়াবা লেনদেনের এই অবৈধ কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে ধামনখালীতে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে এলাকাবাসীদের মাঝে আশংকা বিরাজ করছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মাদক কারবারি’রা জনগণের শত্রু, সীমান্ত এলাকায় জননিরাপত্তা ও পাচার বন্ধে সরকারের কাছে আরো কঠোরতা প্রত্যাশা করছি।’
নিয়মিত অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাদক কারবারিদের তৎপরতা রুখতে কাজ করছে বিজিবির নতুন প্রতিষ্ঠিত ৬৪ (উখিয়া) ব্যাটেলিয়ন।
৬৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল জসীম উদ্দিন বলেন, ‘বিজিবি সদস্যরা সীমান্তে পাচার বন্ধে নিয়মিত নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, অপরাধ বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলমান আছে।’
সঠিক তথ্য দিয়ে সচেতন স্থানীয়রা সহযোগিতা করলে মাদক প্রতিরোধ কার্যক্রম আরো বেগবান হবে বলে মনে করেন তিনি।